(বাঁ দিকে) পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং অর্পিতা মুখোপাধ্যায় (ডান দিকে)। ফাইল চিত্র।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ‘ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে এ বার জেরা করতে চাইছে আয়কর দফতর। তাঁর বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া টাকার উৎস কী, কেন বাড়িতে এত টাকা রাখা ছিল— এ সব তথ্যই জানতে চাওয়া হতে পারে বলে সূত্রের খবর। বর্তমানে আলিপুর মহিলা সংশোধনাগারে বন্দি রয়েছেন অর্পিতা। সেখানে গিয়েই তাঁকে জেরা করা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। আয়কর দফতর সূত্রের খবর, আলিপুর মহিলা সংশোধনাগারে গিয়ে অর্পিতাকে জেরা করার জন্য কলকাতার বিশেষ ইডি আদালতে আবেদনও জানিয়েছে আয়কর দফতর। জেরা করার জন্য অনুমতিও পেয়েছে তারা।
উল্লেখ্য, শিক্ষায় নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে ২০২২ সালের ২২ জুলাই দক্ষিণ কলকাতার নাকতলায় পার্থের বাড়িতে অভিযান চালায় ইডি। দীর্ঘ তল্লাশি এবং জিজ্ঞাসাবাদের পর গ্রেফতার করা হয়েছিল তাঁকে। পার্থের ‘ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত অর্পিতার টালিগঞ্জ এবং বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাটে হানা দেয় ইডি। টালিগঞ্জের ‘ডায়মন্ড সিটি’ আবাসনে অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে নগদ ২১ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা উদ্ধার করে ইডি। একই সঙ্গে উদ্ধার হয় প্রচুর বিদেশি মুদ্রা এবং সোনার গয়নাও।
এর পরে ওই বছরেরই ২৭ জুলাই বেলঘরিয়ার ‘ক্লাব টাউন হাইট্স’ আবাসনে অর্পিতার নামে থাকা দু’টি ফ্ল্যাটে অভিযান চালিয়ে সেখান থেকে মোট ২৭ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা নগদে উদ্ধার করে ইডি। সঙ্গে প্রচুর টাকার গয়না। ইডির দাবি, অর্পিতার দু’টি ফ্ল্যাট থেকে নগদে মোট ৪৯ কোটি ৮০ লাখ টাকা এবং ৫ কোটি ৮ লাখ টাকার গয়না উদ্ধার হয়েছিল। সঙ্গে সাতটি ভিন্দেশের মুদ্রাও।
যদিও পার্থের আইনজীবী সম্প্রতি আদালতে দাবি করেছিলেন, এমনটা নয় যে অর্পিতাকে চিনতেন না তাঁর মক্কেল। ব্যবসায়িক সূত্রেই তাঁদের মধ্যে যোগাযোগ ছিল। কিন্তু এর বাইরে অর্পিতা কী করেন, তা তাঁর মক্কেলের জানা ছিল না। অর্পিতার সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিল বলেই যে পার্থ তাঁর কাছ থেকে সুবিধাভোগ করেছেন, তেমনটাও জোর করে বলা যায় না বলে আদালতে দাবি করেছিলেন পার্থের আইনজীবী। তিনি আদালতে এ-ও জানান, অর্পিতার বাড়ি এবং অন্যান্য সংস্থা থেকে যে সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে, তা নিজের বলে দাবি করেননি তাঁর মক্কেল। ভবিষ্যতেও করবেন না।