Coal Smuggling

১৫০ কোটি ভুয়ো লগ্নির হিসেব কয়লা তল্লাশিতে

কয়েকটি সংস্থা তৈরি করে তাদের মাধ্যমে অন্তত ১৫০ কোটি টাকা ভুয়ো লগ্নির প্রমাণও হাতে এসেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০২০ ০৪:৩৯
Share:

প্রতীকী ছবি।

কয়লার কারবারে জড়িত পুরুলিয়ার এক ব্যবসায়ীর ৩০টি ঠিকানায় বৃহস্পতিবার তল্লাশি চালিয়ে বহু নথিপত্র, নগদ ৭.৩ কোটি টাকা মিলেছে বলে জানাল আয়কর দফতর। আয়কর কর্তাদের দাবি, কয়লা পাচারের সঙ্গে রাজনীতি ও প্রশাসনিক ক্ষেত্রের কয়েক জনের ‘যোগসূত্রের প্রমাণ’ মিলেছে।

Advertisement

সেন্ট্রাল বোর্ড অব ডাইরেক্ট ট্যাক্সেস (সিবিডিটি)-এর মুখপাত্র সুরভি অহলুওয়ালিয়া শুক্রবার প্রেস বিবৃতিতে জানান, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রানিগঞ্জ, আসানসোল, পুরুলিয়া, কলকাতায় তল্লাশি চালিয়ে বেআইনি নগদ উদ্ধার হয়েছে। যা কয়লা-বালি পাচারে সহায়তাকারীদের জন্য রাখা ছিল। তল্লাশিতে কয়লা, বালি এবং স্পঞ্জ আয়রনের ব্যবসা থেকে বিপুল পরিমাণ নগদ কারবারের নথিপত্রও মিলেছে। কয়লা-বালির কারবার চালানোর ক্ষেত্রে সুবিধা পাইয়ে দিতে বিপুল বেহিসেবি নগদের ব্যবহার হয়েছে। বাজেয়াপ্ত হয়েছে সে সম্পর্কিত অনেক নথি। এ ছাড়া, কয়েকটি সংস্থা তৈরি করে তাদের মাধ্যমে অন্তত ১৫০ কোটি টাকা ভুয়ো লগ্নির প্রমাণও হাতে এসেছে। এর মধ্যে ১৪৫ কোটি টাকার লগ্নিযুক্ত ‘প্রকল্প’ বেচে দেওয়া হয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী তা লিখিত ভাবে স্বীকার করে নিয়েছেন বলে বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।

আয়কর সূত্রের দাবি, ওই ব্যবসায়ী তল্লাশিতে সাহায্য করেছেন এবং লিখিত বিবৃতিতে ‘প্রভাবশালী’দের কাছে ‘প্রসাদ’ পৌঁছনোর কথা মেনে নিয়েছেন। আয়কর কর্তারা ওই ব্যবসায়ীর বাড়ি থেকে দু’টি ফোন, বেশ কয়েকটি পেন ড্রাইভ, নথি এনেছেন। আয়কর কর্তাদের দাবি, এগুলির মধ্যে চমকপ্রদ ব্যবসায়ীর কম্পিউটারে ‘সেভ’ করা এক্সেল শিট। তাতে কোন তারিখে, কাকে তিনি কত নগদ দিয়েছেন, তা লেখা রয়েছে বলে দাবি ওই ব্যবসায়ীর। আয়কর কর্তারা জানাচ্ছেন, পরে ওই ব্যক্তিদের ডেকে নগদ নেওয়ার বিষয়টি যাচাই করা হবে। ওই ব্যবসায়ীর এক হিসাবরক্ষকের কাছ থেকে পূর্ব এশিয়ার একটি দেশের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে এক ‘প্রভাবশালী’র স্ত্রীর নামে টাকা পাঠানোর রসিদ পাওয়া গিয়েছে বলেও তাঁদের দাবি।

Advertisement

এ দিকে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ শুক্রবার কলকাতায় বলেন, ‘‘লালাজির বাড়ি তল্লাশিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এত চিন্তা কেন? লালাজির সঙ্গে নিজের সম্পর্কটা উনি বরং প্রকাশ করুন। কয়লার রাজস্ব রাজ্য এবং কেন্দ্র— দুই সরকারই পায়! লালাজির তল্লাশি নিয়ে এত চিন্তা না করে রাজ্যে নারী নিগ্রহ বন্ধে বেশি চিন্তা করলে উপকার হয়।’’ জবাবে তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়ের কটাক্ষ, ‘‘কোন খনি কোন বেসরকারি হাতে গিয়েছে, কোন বিমানবন্দর, বন্দর কারা পেয়েছেন এবং কী ভাবে, সে কথা তাঁরা বলেন না কেন?’’ এ দিন ‘লালা’ নামে পরিচিত অনুপ মাজিকে এ বিষয়ে ফোন করা হলে তিনি ফোন কেটে দেন। রাত পর্যন্ত হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজেরও উত্তর দেননি। আয়কর কর্তারা জানাচ্ছেন, আয়কর তদন্তে প্রয়োজনে জরিমানা ধার্য করা ও সম্পত্তি বা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট হেফাজতে নেওয়া যায়। তবে বাজেয়াপ্ত হওয়া নথি দেখে ইডি বা সিবিআই আলাদা মামলা করতে পারে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement