কাঁকড়াঝোরে অতিথিশালার সামনে নিজস্বী তোলায় ব্যস্ত পর্যটকেরা। ছবি: দেবরাজ ঘোষ
দিনটা ছিল ৪ ডিসেম্বর, সাল ২০০৪। বেলপাহাড়ির কাঁকড়াঝোরে সরকারি বন বাংলো মাইন বিস্ফোরণে ধ্বংস করে দিয়েছিল মাওবাদীরা। ঘটনার ১৬ বছর পরে বুধবার দুপুরে সেই কাঁকড়াঝোরেই ঝাড়গ্রাম জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সরকারি অতিথিশালার দ্বারোদ্ঘাটন করলেন ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক আয়েষা রানি।
ষাটের দশকে তৈরি হয়েছিল বন দফতরের বাংলো ‘বনানী’। ‘বনানী’ নামটি রেখেছিলেন পরিচালক সত্যজিৎ রায়। জেলাশাসক আয়েষা রানি অবশ্য জানাচ্ছেন, নতুন সরকারি এই অতিথিশালাটির নাম কী দেওয়া হবে, সেটা এখনও ঠিক হয়নি। তাঁর কথায়, ‘‘কাঁকড়াঝোরে সরকারি অতিথিশালা তৈরি করার জন্য দীর্ঘদিনের দাবি ছিল।’’
আয়েষা রানি জানান, অতিথিশালাটি চালানোর জন্য টেন্ডার ডেকে কোনও সংস্থাকে বরাত দেওয়া হবে। অতিথিশালাটির লভ্যাংশ পাবে স্থানীয় বাঁশপাহাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত।
গত দু’বছরে বদলে যাওয়া কাঁকড়াঝোরে মোট ছ’টি বেসরকারি হোম-স্টে চালু হয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি হোম-স্টে’র জন্য বিনিয়োগ করেছে কলকাতার বেসরকারি সংস্থাও। করোনার ভীতি কাটিয়েও সাম্প্রতিক সময়েও কাঁকড়াঝোরে ভিড় করেছিলেন পর্যটকেরা। স্থানীয় হোম-স্টে’র মালিক মধুসূদন মাহাতো বলেন, ‘‘এক সময় যে কাঁকড়াঝোরে মানুষজন আসতে ভয় পেতেন, সেই কাঁকড়ঝোরেই হোম-স্টে তৈরির
জন্য অর্থলগ্নি করেছে কলকাতার বেশ কিছু সংস্থা।’’
এই কাঁকড়াঝোরে এবং ধ্বংস হয়ে যাওয়া যাওয়া বন বাংলোয় সত্তরের দশকে শ্যুটিং হয়েছিল চিন্ময় রায় অভিনীত টেনিদা কাহিনী অবলম্বনে ‘চারমূর্তি’ সিনেমার। প্রসঙ্গত, যেখানে মাইন বিস্ফোরণে উড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল বন বাংলো, সেই ‘গ্রাউন্ড জ়িরো’-র অদূরে সিআরপি ক্যাম্প যাওয়ার রাস্তায় তৈরি করা হয়েছে এই অতিথিশালা। এটি নির্মাণে খরচ হয়েছে ৫২ লক্ষ টাকা। দু’টি ডবল বেড ও একটি চার শয্যার ঘর মিলিয়ে তিনটি ঘরে আটজন থাকতে পারবেন। অতিথিশালাটির নকশা তৈরি করেছেন বাঁশপাহাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের নির্মাণ সহায়ক সুদীপ গিরি।