ক্যালেন্ডারে পৌষ। কিন্তু উত্তুরে হাওয়ার কাঁপুনি কই! বরং সর্দি, জ্বর, কাশি জাঁকিয়ে বসেছে। হাওয়া দফতর আশ্বাস দিয়েছিল, বড়দিনে ঘুরে দাঁড়াতে পারে শীত। কিন্তু শনিবারের আবহাওয়া দেখে আমবাঙালির প্রশ্ন, সত্যিই পূর্বাভাস মিলবে তো? নাকি উষ্ণতায় হ্যাটট্রিক করবে বড়দিন?
পূর্বাভাস কতটা মিলবে, তা নিয়ে সন্দিহান আবহবিজ্ঞানীরাও। মৌসম ভবনের এক সূত্র জানাচ্ছে, উত্তর-পশ্চিম ভারতেও জোরালো শীত নেই। বহু জায়গাতেই রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিক বা তার থেকে উপরে। অথচ এ সময়ে ওই সব অঞ্চলে রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের নীচে থাকাটাই দস্তুর। ফলে সেখান থেকে কনকনে উত্তুরে হাওয়া আসছে না।
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস এ দিন বলেন, ‘‘বড়দিনে কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৪-১৫ ডিগ্রির কাছেপিঠে থাকবে। পশ্চিমের জেলাগুলিতে তাপমাত্রা আরও কিছুটা নামবে।’’ এখন কলকাতার স্বাভাবিক সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ফলে বড়দিনে রাতের তাপমাত্রা ১৪ ডিগ্রির কাছেপিঠে থাকার অর্থ, শীত-ভাগ্য তেমন প্রসন্ন হবে না।
হ্যাটট্রিকটা কী রকম? হাওয়া অফিসের খবর, ২০১৬ সালে বড়দিনে কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৭.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, স্বাভাবিকের চেয়ে ৩ ডিগ্রি বেশি। ২০১৫ সালে বড়দিনে রাতের তাপমাত্রা ছিল ১৮.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, স্বাভাবিকের থেকে ৪ ডিগ্রি বেশি। সেখানে শনিবার কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৬.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, স্বাভাবিকের থেকে ২ ডিগ্রি বেশি। ফলে বছর-বছর বড়দিন উষ্ণ হচ্ছে বলেই মত অনেকের। তাঁরা বলছেন, ২০১৫ সালে নিম্নচাপ ও মেঘের বাধাতেই গরম হয়েছিল বড়দিন। একই রকম আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনা দেখা গিয়েছিল তার পরের বছরেও।
শ্রীনিকেতনে রাতের তাপমাত্রা ১২.৯ ডিগ্রি, বাঁকুড়ায় ১৪ ডিগ্রিরও বেশি। জলপাইগুড়ি, কোচবিহারের মতো তরাই-ডুয়ার্সের জেলাগুলিতেও শীত দুর্বল। দিনভর মেঘলা আকাশ। রাতে তেমন ভাবে তাপমাত্রা নামছে না। হাওয়া অফিসের খবর, বাংলাদেশ ও লাগোয়া গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের উপরে থাকা ঘূর্ণাবর্তের প্রভাবেই এমন দশা। তবে ঘূর্ণাবর্তটি দুর্বল হয়ে গিয়েছে। ফলে আজ, রবিবার থেকে তাপমাত্রা সামান্য নামতে পারে। কিন্তু ওইটুকুই।