প্রহরা: কলকাতা স্টেশন থেকে বেরিয়ে যাচ্ছেন বন্ধন এক্সপ্রেসের যাত্রীরা। ছবি: শৌভিক দে।
প্রায় ৫২ বছর পরে বৃহস্পতিবার কলকাতা থেকে যাত্রী নিয়ে বাংলাদেশের খুলনায় পৌঁছে গেল বন্ধন এক্সপ্রেস। ফিরেও এল সন্ধ্যায়।
ঠিক এক সপ্তাহ আগে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সবুজ পতাকা নেড়ে বন্ধনের উদ্বোধন করেছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বাংলাদশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দুই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। এ দিন যাত্রীবাহী ট্রেনে দু’দেশের কোনও কর্তা না-থাকলেও খুলনা স্টেশনে হাজির ছিলেন বাংলাদেশে ভারতীয় হাই কমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। ছিলেন সে দেশের রেল কর্তারাও।
এ দিন কলকাতা স্টেশন থেকে সকাল ৭ টা ১০ মিনিটে ৫৩ জন যাত্রী নিয়ে বন্ধন এক্সপ্রেস ছাড়ে। খুলনায় পৌঁছয় বেলা সাড়ে ১২টায়। ফিরতি পথে ২৫২ জন যাত্রীকে নিয়ে দুপুর দেড়টায় খুলনা থেকে যাত্রা শুরু করে সন্ধ্যা সওয়া ৭ টায় কলকাতা স্টেশনে পৌঁছে যায়। রেলকর্তারা জানিয়েছেন, আসার সময় ঘণ্টাখানেক ‘লেট’ করেছে বন্ধন এক্সপ্রেস। এই ট্রেনেই খুলনা থেকে বেনাপোল সীমান্ত পর্যন্ত আসেন ভারতীয় হাই কমিশনার।
প্রশ্ন উঠেছে, কলকাতা-খুলনা ১৭২ কিলোমিটার পথ পেরোতে প্রায় সাড়ে ৫ ঘণ্টা সময় লাগার কারণ কী? রেল কর্তাদের ব্যাখ্যা, এ পারে যাত্রা শুরুর আগে কলকাতা স্টেশনে যাত্রীদের পাসপোর্ট, ভিসা ও শুল্ক পরীক্ষা করা হচ্ছে। কিন্তু খুলনায় ইমিগ্রেশনের পরিকাঠামো এখনও তৈরি না-হওয়ায় বেনাপোল সীমান্তে ট্রেন থামাতে হচ্ছে
বাংলাদেশ সরকারের তরফে যাত্রীদের পাসপোর্ট পরীক্ষার জন্য। এই কাজে অনেক সময় লাগে। কারণ, পাসপোর্ট, ভিসা ও শুল্ক পরীক্ষা করাতে
প্রতিটি যাত্রীকে বাক্স-প্যাঁটরা নিয়ে ট্রেন থেকে নামতে হয়। সেই কাজ শেষ হলে ফের ট্রেনের নির্দিষ্ট কামরায় উঠতে হয়। তাতেই অনেকটা সময় লেগে যায়।
বাংলাদেশের রেল কর্তারা জানান— চুক্তি অনুয়ায়ী, খুলনাতেই পাসপোর্ট পরীক্ষা ও ইমিগ্রেশনের কাজ হওয়ার কথা ছিল। সে জন্য খুলনা স্টেশনের গায়ে নতুন তিনতলা ভবন তৈরি হচ্ছে। কিন্তু সেই কাজ শেষ হতে আরও ছ’মাস সময় লাগবে। তখন বেনাপোলের পরিবর্তে যাত্রীদের কাগজপত্র পরীক্ষার কাজ খুলনাতেই করা হবে। তাতে এক ঘণ্টা সময় বাঁচবে। বাংলাদেশ রেলের কর্তা কালীকান্ত ঘোষ এ দিন টেলিফোনে বলেন, ‘‘নতুন ভবনে আধুনিক যাত্রী পরিষেবার সব ব্যবস্থা থাকবে।’’
কিন্তু পরিকাঠামো পুরোপুরি তৈরি হওয়ার আগেই কেন ট্রেন চলাচল শুরু হল? জবাবে দু’দেশের রেলকর্তারা জানান, এই ট্রেনটিকে ঘিরে দু’পারের যাত্রীদের চাহিদা এতটাই বেশি ছিল যে খুলনার অভিবাসন ভবনটি তৈরি হওয়ার আগেই ‘বন্ধন’ চালু করে দেওয়া হল।