টিটাগড় ও কামারহাটি পুরসভা থেকে এমনই বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, এ রাজ্যে জাতীয় জনসংখ্যা রেজিস্টার (এনপিআর)-এর কাজ শুরু করা যাবে না। কিন্তু এ রাজ্যের দুই পুরসভায় সেই সংক্রান্ত কাজ শুরুর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। কর্তব্যে এ হেন ‘বিচ্যুতি’র কারণে দুই পুরসভার সংশ্লিষ্ট আধিকারিকরা কড়া শাস্তির মুখে পড়েছেন।
নবান্ন সূত্রের বক্তব্য, স্বরাষ্ট্র দফতর ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে, এনপিআরের কাজ রাজ্যের কোথাও চালু করা যাবে না। এর পরেও কোথাও কোনও ভুল হলে কড়া শাস্তির মুখে পড়তে হবে।
সম্প্রতি উত্তর ২৪ পরগনার কামারহাটি এবং টিটাগড় পুরসভা এনপিআর এবং জনগণনা (সেনসাস)-র বিষয়ে একটি নির্দেশিকা জারি করে। কী ছিল ওই বিজ্ঞপ্তিতে? বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহের বিষয়ে গত ৭ জানুয়ারি একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে কামারহাটি পুরসভা। সেখানে পুরসভার চেয়ারম্যান গোপাল সাহার সই-ও রয়েছে। ওই বিজ্ঞপ্তিতে এলাকার বিভিন্ন স্কুল কর্তৃপক্ষ এবং প্রধান শিক্ষকদের উদ্দেশে বলা হয়েছে, জরুরি ভিত্তিতে শিক্ষক এবং অশিক্ষককর্মীদের তালিকা দিতে হবে, যাঁরা জনগণনা এবং এনপিআর-এর জন্য কাজ করবেন।
টিটাগড় পুরসভা এনপিআর এবং জনগণনা (সেনসাস) –র বিষয়ে নির্দেশিকা জারি করেছে
টিটাগড় পুরসভার তরফেও ওই এলাকার স্কুল কর্তৃপক্ষদের উদ্দেশে একই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, যাঁরা জনগননা এবং এনপিআর ‘আপডেট’-এর কাজ করবেন, তাঁদের নাম যেন দ্রুত পাঠানো হয়। ওই বিজ্ঞপ্তিতেও টিটাগড় পুরসভার চেয়ারম্যান প্রশান্ত চৌধুরির সই রয়েছে।শুধু তাই নয়, সেনসাস এবং এনপিআর কর্মসূচি দ্রুত কার্যকর করতে নির্দেশিকা এসেছে উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক এবং ডিরেক্টর অ্যান্ড চিফ প্রিন্সিপাল সেনসাস অফিস থেকেও। এ বিষয়ে প্রশান্তবাবু যুক্তি দিয়েছিলেন, “জেলাশাসকের অফিস থেকে নির্দেশ এসেছে। সে কারণে এই নোটিস। সাধারণ বিষয়। করতে বলছে, তাই করেছি। যেমন প্রত্যেক বার হয়। বাড়ি বাড়ি গিয়ে জনগণনা হবে। জেলাশাসকের দফতর থেকেই আমাদের কাছে কাগজ দিয়েছে।”
আনন্দবাজার ডিজিটালে এই খবর প্রকাশ হতেই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। সঙ্গে সঙ্গেই ওই দুই পুরসভার সংশ্লিষ্ট অফিসারদের সাসপেন্ড করার নির্দেশ যায় জেলাশাসক চৈতালি চক্রবর্তীর কাছে।
যদিও শনিবার টিটাগড় পুরসভার চেয়ারম্যান গোপাল সাহা ‘ভুল হয়েছে’ বলে এনআরপি কর্মসূচি বাস্তবায়নের বিষয়টি স্বীকার করে নিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘‘ডিএম এবং ডিরেক্টরেট সেনসাসের তরফে নির্দেশিকা এসেছিল। আমার অফিসের ভুল হয়েছে।” ওই বিজ্ঞপ্তিতে সইয়ের বিষয়ে তাঁর সাফাই ছিল, “আমার কাছে অনেক কাগজেই সই করাতে নিয়ে আসা হয়। আমি সই করে দিয়েছিলাম। ওই বিজ্ঞপ্তি বাতিল করা হয়েছে।” এ দিন সন্ধ্যায় ওই পুরসভার এগজিকিউটিভ অফিসারকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।
বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহের বিষয়ে গত ৭ জানুয়ারিএকটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে কামারহাটি পুরসভা
জেলাশাসকের অফিস থেকে যে নির্দেশিকা যাচ্ছে তা কি নবান্নের অনুমতি ছাড়াই পাঠানো হয়েছিল? ওই বিজ্ঞপ্তির বিষয়ে উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক চৈতালি চক্রবর্তী এ দিন বলেছিলেন, “ওখানে কী লেখা হয়েছে? নাম চাওয়া হয়েছে। যদি ভুল হয়ে থাকে তা বলা হয়েছে পাল্টাতে।” যদিও সন্ধ্যার মধ্যে তাঁর কাছেই ওই দুই পুরসভার সংশ্লিষ্ট অফিসারদের সাসপেন্ড করার নির্দেশ যায় নবান্ন থেকে।