বাবুল এবং শত্রুঘ্নের সঙ্গে আসানসোলে সভা করেন মমতা। ফাইল চিত্র।
বছর দুয়েক আগে আসানসোল সফরে তৎকালীন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা স্থানীয় বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়কে লক্ষ্য করে আক্রমণ শানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার সেই আসানসোলেই তৃণমূলের কর্মিসভা থেকে ‘শিল্পী’ বাবুলের প্রশংসা করলেন মমতা।
পাশাপাশি, আসানসোল লোকসভায় এই প্রথম তৃণমূলকে জয় এনে দেওয়ার জন্য শত্রুঘ্ন সিংহকে জানালেন ধন্যবাদ। আর আসানসোলবাসীকে অকুণ্ঠ ধন্যবাদ জানিয়ে শত্রুঘ্নেরই সিনেমার সংলাপ ধার করে তৃণমূল নেত্রী বললেন, ‘‘আপনারা বিজেপিকে খামোশ করে দিয়েছেন!’’
প্রসঙ্গত, শত্রুঘ্নের জনপ্রিয়তম পরিচিতি হল তাঁর উচ্চারিত ‘খামোশ’ শব্দটিতে। অর্থাৎ, চুপ! হিন্দি ছবিতে শত্রুঘ্নের মতো করে কেউই আর ওই শব্দটি উচ্চারণ করেননি। করেন না। ফলে ‘খামোশ’ বস্তুতপক্ষে শত্রুঘ্নেরই অভিজ্ঞান হিসেবে পরিচিতি পেয়ে গিয়েছে। মমতা সেই শব্দটি নিয়েই জানিয়ে দিয়েছেন, বিজেপি ‘চুপ’ করে গিয়েছে!
কর্মিসভায় উপস্থিত ছিলেন বাবুল এবং শত্রুঘ্ন। বাবুল আসানসোলের দু’বারের সাংসদ। তিনি যে ওই সভায় থাকবেন, তা প্রত্যাশিতই ছিল। শত্রুঘ্ন তো স্থানীয় সাংসদ হিসেবে থাকবেনই। ঘটনাচক্রে, দু’জনেই প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। গায়ক-সাংসদ বাবুল নরেন্দ্র মোদীর মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করে তৃণমূলে যোগ দেন। বলিউড অভিনেতা শত্রুঘ্ন ছিলেন অটলবিহারী বাজপেয়ী জমানার মন্ত্রী। পরে মোদী সরকারের তীব্র সমালোচনা করে শত্রুঘ্ন বিজেপি ছাড়েন। তার পর কংগ্রেস ঘুরে এখন তিনি আসানসোলের তৃণমূল সাংসদ। ফলে আসানসোলের সদ্যপ্রাক্তন এবং বর্তমান— দুই সাংসদই ছিলেন বিজেপিতে।
মঙ্গলবার দু’জনকে অভিনন্দন জানিয়ে মমতা বলেন, ‘‘যে মানুষটি এখানে শুধু জিততে আসেননি। জেতার পর বার বার আসানসোলে ছুটে আসেন। সেই শত্রুঘ্ন সিংহকে ধন্যবাদ। আর বাবুল এক দিন এখানকার সাংসদ ছিলেন। বিজেপি তাঁর পছন্দ নয় বলে ছেড়ে এসেছেন। এখন তিনি বালিগঞ্জের (তৃণমূলের) বিধায়ক। তিনি এক জন বড় শিল্পী। তাঁকেও আমার অভিনন্দন জানাই।’’
আসানসোলবাসীর উদ্দেশে মমতার আবেগঘন বার্তা, ‘‘আপনারা শুধু আসানসোলকেই জেতাননি, বিজেপিকে খামোশ করে দিয়েছেন। এত ভোটে জিতিয়েছেন যে, তৃণমূল আরও শক্ত হয়েছে।’’ তৃণমূল নেত্রীর সংযোজন, ‘‘ভোটটা দিয়েছেন কষ্ট করে। এ জন্য কৃতজ্ঞতা জানাতে ছুটে এসেছি। প্রাণভরা ভালবাসা জানাতে এসেছি।’’
আসানসোল তথা পশ্চিম বর্ধমান জেলার জন্য তৃণমূল সরকার কী কী করেছে, তার সংক্ষিপ্ত বিবরণ তুলে ধরেন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘আসানসোলে আমরা কী না করেছি! নতুন পুলিশ কমিশনারেট হয়েছে। নতুন জেলাও হয়েছে। মাল্টি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল তো আমরাই করেছি। কাজি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অন্ডাল বিমানবন্দরও করেছি। আরও কাজ হবে।’’ মমতা জানান, অন্ডাল বিমানবন্দর থেকে ইংল্যান্ড, আমেরিকা-সহ পৃথিবীর সমস্ত দেশে বিমান চলাচল শুরু হবে।