কর্মচারীরা চাইছেন প্রতিবাদের জন্য উপযুক্ত সংগঠন। —নিজস্ব চিত্র।
কেন্দ্রীয় সরকারের কাজকর্মে অসন্তোষ বাড়ছে। কর্মচারীরা চাইছেন প্রতিবাদের জন্য উপযুক্ত সংগঠন। দেশ জুড়ে রেলের বিভিন্ন জ়োন ও শাখার কর্মচারী সমিতির ভোটে বিপুল জয়ের প্রেক্ষিতে এমনই মনে করছেন বাম নেতৃত্ব।
ইদানিং কালে সাধারণ কোনও নির্বাচনে বামেদের জয়ের দৃষ্টান্ত বিরল! কিন্তু রেলের নির্বাচনে ঘটেছে উল্টো ঘটনা। বিভিন্ন ক্ষেত্রেই জয় পেয়ে কর্মচারী ইউনিয়নের স্বীকৃতি পেয়েছে বাম-প্রভাবিক সংগঠন। যেমন, পূর্ব রেলে জয়ী হয়েছে ইআরএমইউ, চিত্তরঞ্জন লোকোমোটিভে জয়ী হয়েছে সিটুর সিএলডব্লিউ। সিটু নেতৃত্বের দাবি, সেখানে ৭০ বছরের আন্দোলনের পরে এই জয় এসেছে। পূর্ব রেলের মধ্যে শিয়ালদহ শাখা, কাঁচরাপাড়া, লিলুয়া, ব্যান্ডেলের ওয়ার্কশপ এবং সদরে জয়ী হয়েছে ইআরএমইউ। যদিও সংগঠনের নেতৃত্বের দাবি, বামেদের পাশাপাশি বিভিন্ন মতে বিশ্বাসী লোকজনও তাঁদের সঙ্গে আছেন। জামালপুর, আসানসোল, হাওড়া, ও মালদহে জিতেছে কংগ্রেস-প্রভাবিত ইউনিয়ন ইআরএমসি। সামগ্রিক ভাবে দেখলে পূর্ব রেলে প্রথম স্থানে ইআরএমইউ, কংগ্রেসের সংগঠন দ্বিতীয়। বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেস প্রভাবিত সংগঠন রয়েছে তৃতীয় ও চতুর্থ স্থানে। কলকাতা মেট্রো রেলেও জয়ী হয়েছে বাম-প্রভাবিত সংগঠন এমআরএমইউ।
একই ভাবে দক্ষিণ রেলে বামেদের সংগঠন ডিআরইইউ জয় পেয়েছে। দ্বিতীয় কংগ্রেসের সংগঠন, তৃতীয় বিজেপির। দক্ষিণ-পূর্ব রেলে জয়ী বামেরাই। খড়্গপুর ওয়ার্কশপেও তারা প্রথম স্থানে থেকে স্বীকৃতি পেয়েছে। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলে জয় পেয়েছে বামেদের সংগঠন। দ্বিতীয় কংগ্রেসের সংগঠন এবং বিজেপির সংগঠন তৃতীয়। পশ্চিম রেল, মধ্য রেল এহং উত্তর রেলে জয় পেয়েছে বাম, গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের সংগঠন। উত্তর-পূর্ব রেল, উত্তর-পূর্ব এবং দক্ষিণ-মধ্য জ়োনে তুল্যমূল্য লড়াই হয়েছে বাম ও কংগ্রেসের সংগঠনের।
রেলে সচারচর ৬ বছর অন্তর কর্মচারী সমিতির নির্বাচন হয়েছে। তবে এ বার নির্বাচন হয়েছে ১১ বছর পরে। তাতে বামেদের সংগঠনের এই সাফল্যের প্রেক্ষিতে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চত্রবর্তীর মত, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার যে ভাবে চলছে, যে ভাবে রেল পরিচালনা করছে, তাতে সাধারণ মানুষের ক্ষোভ বাড়ছে। কর্মচারী সমিতির ভোটে তারই প্রতিফলন ঘটেছে। বোঝা যাচ্ছে, লুট না-করে সুষ্ঠু ভোট করলে দাবি আদায়ের জন্য শ্রমিক, কর্মচারী এবং মানুষ বামেদের উপরে ভরসা রাখতে পারেন।’’