মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ কমলে শীতেই বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিকে নিয়ে ব্রিগেডে সমাবেশ হবে। এমনটাই ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার কালীঘাটের বাসভবন থেকে ভার্চুয়াল বক্তৃতার শেষপর্বেই এ কথা জানান তিনি। মমতা বলেন, ‘‘যদি কোভিড মিটে যায়, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়, তা হলে আমরা ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে প্রোগ্রাম করব। ওই কর্মসূচিতে শরদ পওয়ারজি, চিদম্বরমজি, সনিয়াজি, দ্বিগ্বিজয়জিকে আমন্ত্রণ জানানো হবে। এ ছাড়াও মহারাষ্ট্র, অন্ধ্রপ্রদেশ, কেরল, তামিলনাড়ু, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীদেরও আমরা আমন্ত্রণ জানাব।’’
২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের প্রস্তুতি হিসেবেই তৃণমূল নেত্রী যে এই সমাবেশ করতে চান, তাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘এখনও তিন বা আড়াই বছর সময় বাকি রয়েছে। তবে প্রতিটি দিন আমাদের কাছে মূল্যবান। আসুন, আমরা সবাই গঠবন্ধন তৈরি করি আর দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাই।’’ সর্বভারতীয় নেতাদের উদ্দেশ্যে মমতা আরও বলেন, ‘‘আমি একজন রাজনৈতিক কর্মী। আর রাজনৈতিক কর্মী হিসেবেই আপনাদের সঙ্গে লড়াইয়ে থাকতে চাই। আপনারা যে আদেশ বা নির্দেশ দেবেন, তা মেনে আমি কাজ করব।’’
উল্লেখ্য, দিল্লির কনস্টিটিউশনাল ক্লাবে শহিদ দিবস পালনের কর্মসূচি নিয়েছিল বাংলার শাসক দল। আর সেই মঞ্চেই হাজির হন কংগ্রেস নেতা তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম, কংগ্রেস সাংসদ দিগ্বিজয় সিংহ, সমাজবাদী পার্টির সাংসদ রামগোপাল যাদব-সহ শিরোমণি অকালি, ডিএমকে, টিআরএস-এর মতো রাজনৈতিক দলের সাংসদরা। কন্যা সাংসদ সুপ্রিয়া সুলেকে নিয়ে এসেছিলেন এনসিপি প্রধান তথা সাংসদ শরদ পওয়ার। তাই নিজের ভার্চুয়াল বক্তৃতায় বার বার তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তাঁর প্রস্তাবিত ব্রিগেড সমাবেশে আসতে আগাম আমন্ত্রণ জানিয়েছেন মমতা। উল্লেখ্য, ২ মে বিধানসভা ভোটে জয়ের পর মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন, কোভিড পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে ব্রিগেডে বড় জনসমাবেশ করবেন তিনি।
ঘটনাচক্রে, ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে ১৯ জানুয়ারি ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডেই মোদী বিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের নিয়ে কলকাতায় ‘ইউনাইটেড ইন্ডিয়া র্যালি’ করেছিলেন মমতা। সে বারের ব্রিগেড সমাবেশে গুজরাত থেকে এসেছিলেন পটিদার আন্দোলনের নেতা হার্দিক পটেল। এসেছিলেন শরদ পওয়ার থেকে শুরু করে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল, আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব। হাজির হয়েছিলেন তৎকালীন বিক্ষুব্ধ বিজেপি সাংসদ শত্রুঘ্ন সিন্হাও। বক্তৃতা করেছিলেন, ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা তথা জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফারুখ আবদুল্লা, কংগ্রেসের মল্লিকার্জুন খড়্গে, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা জেডিএস নেতা দেবগৌড়া-সহ আরও অনেকে।