এই রথই ব্যবহার করা হতে পারে প্রচারে। —ফাইল চিত্র
রথ ছেড়ে কি এ বার পথে? রাজ্য বিজেপি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, শেষ পর্যন্ত ‘গণতন্ত্র বাঁচাও’ রথযাত্রা যদি করা না যায়, তা হলে বিকল্প হিসাবে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকে ওই শিরোনামেই প্রতি বিধানসভা বা ব্লকে পদযাত্রা করবে তারা। আর পৌষ পার্বণের পর থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ-সহ এক ঝাঁক কেন্দ্রীয় নেতা-মন্ত্রী রাজ্যে এসে সভা করবেন।
কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে প্রস্তাবিত রথযাত্রা কর্মসূচি নিয়ে রাজ্য প্রশাসনের তিন শীর্ষ কর্তার সঙ্গে বিজেপির তিন নেতা আলোচনা করেন গত বৃহস্পতিবার। তার পরেও রাজ্য সরকার রথযাত্রার অনুমতি না দেওয়ায় তাদের ওই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে সোমবার ফের কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে বিজেপি। ২২ ডিসেম্বর কোচবিহার, ২৪ ডিসেম্বর গঙ্গাসাগর এবং ২৬ ডিসেম্বর তারাপীঠ থেকে রথযাত্রা শুরু করার জন্য আদালতে আবেদন জানিয়েছে তারা। ওই আবেদনের শুনানি হওয়ার কথা আজ, মঙ্গলবার। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি এ দিন কলকাতায় বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের মানুষের কাছে আগেই প্রমাণ হয়েছিল, এ রাজ্যে গণতন্ত্র নেই। এ বার রথযাত্রায় অনুমতি না দিয়ে গোটা দেশের সামনেই সেই চিত্রটা স্পষ্ট করে দিল রাজ্য সরকার।’’ বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু এ দিন জানান, ‘‘কলকাতা হাইকোর্টে আইনি লড়াই চলবে। পাশাপাশি, জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকে প্রতি বিধানসভা বা ব্লকে পদযাত্রা শুরু হবে।’’
আইনশৃঙ্খলার অবনতির আশঙ্কা করে বিজেপির রথযাত্রায় অনুমতি দিতে অস্বীকার করেছে রাজ্য সরকার। এর পর পদযাত্রাতেও একই কারণে অনুমতি না দেওয়া হলে বিজেপি কী করবে? সায়ন্তনের জবাব, ‘‘পদযাত্রায় অনুমতি লাগে না। আর সরকার আমাদের অনুমতি দেয়ও না। আমরা ওদের সাহায্য না চেয়েই পদযাত্রা করব। ওরা যা করার করবে! মামলা করলে করবে!’’ আর মোদী-শাহ-সহ কেন্দ্রীয় নেতা-মন্ত্রীদের সভায় অনুমতি না মিললে কী করা হবে? সায়ন্তন বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারের অনুমতি ছাড়া ওই স্তরের নেতাদের সভা করা যাবে না, এটা সত্যিই! কারণ তাঁদের নিরাপত্তায় রাজ্য সরকারের ভূমিকা থাকে। কিন্তু পদযাত্রা অনুমতি ছাড়াই হবে।’’
আরও পড়ুন: কোর্টে বিজেপি, মামলা রথ রুখতেও
রথযাত্রায় রাজ্য সরকারের অনুমতি না দেওয়ার প্রতিবাদে এ দিন থেকে জেলায় জেলায় আইন অমান্য শুরু করেছে বিজেপি। ওই কর্মসূচি, পদযাত্রা এবং কেন্দ্রীয় নেতা-মন্ত্রীদের সভার রূপরেখা চূড়ান্ত করতে আগামী বৃহস্পতিবার জেলা সভাপতিদের সঙ্গে বৈঠক করবেন দলের রাজ্য নেতৃত্ব। তার আগে আজ দিল্লিতে শাহের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, সর্বভারতীয় সম্পাদক রাহুল সিংহ-সহ পাঁচ নেতা।
তৃণমূলের মহাসচিব তথা রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অবশ্য কটাক্ষ, ‘‘যে পতাকা বিজেপি এ রাজ্যে ওড়াতে চাইছে, তা এখানে উড়বে না। ডুবে যাবে। রথেই উঠুক আর পথেই নামুক, ওদের কোনও চমকেই মানুষ ভুলবে না। মানুষের আস্থা আছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নেই।’’