(বাঁ দিক থেকে) মিনাক্ষী মুখোপাধ্যায় এবং মহম্মদ সেলিম। —ফেসবুক।
গত অক্টোবর মাসে সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআই ঘোষণা করেছিল, কোচবিহার থেকে কলকাতা পর্যন্ত ইনসাফ যাত্রার শেষে ২০২৪-এর ৭ জানুয়ারি ব্রিগেডে সভা হবে। গত শুক্রবার যাদবপুরে শেষ হয়েছে সেই ইনসাফ যাত্রা। কিন্তু মঙ্গলবার পর্যন্ত ব্রিগেডে সভা করার জন্য ফোর্ট উইলিয়ামের তরফে প্রয়োজনীয় অনুমতি পাননি মিনাক্ষী মুখোপাধ্যায়রা। ফলে সংগঠনের মধ্যেই ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে আদৌ ব্রিগেডে সভা হবে কি না তা নিয়ে।
মঙ্গলবার সিপিএম রাজ্য দফতরে সাংবাদিক সম্মেলন করে দলের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেছেন, ‘‘৭ তারিখে ব্রিগেডের জন্যই মানুষ জড়ো হবেন। কেন্দ্র ও রাজ্য মিলে ওই সমাবেশ আটকাতে চাইছে।’’ কিন্তু অনুমতি না মিললে? বুধবার থেকে শুরু হচ্ছে সিপিএমের দু’দিনের রাজ্য কমিটির বৈঠক। সূত্রের খবর, ব্রিগেডের অনুমতি একান্তই না পাওয়া গেলে এই বৈঠকের প্রথম বা দ্বিতীয় দিনে ব্রিগেডের ‘বিকল্প’ মাঠ বা সভাস্থলের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে নেবে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট।
প্রকাশ্যে কিছু না বললেও, দলের অনেকেই ঘরোয়া আলোচনায় ইতিমধ্যেই কয়েকটি বিকল্প জায়গার কথা বলা শুরু করেছেন। কেউ বলছেন, ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে সভা করা হোক। কারও বক্তব্য, শহিদ মিনারে হোক ‘ইনসাফ সভা’। তবে ব্রিগেডের দিন বদলানোর পক্ষপাতী নন কেউ। সিপিএম নেতৃত্বের বক্তব্য, দিন বদল করা সম্ভব নয়। কারণ, ব্রিগেডে জমায়েত তৈরির জন্য ইতিমধ্যেই জেলাগুলি গাড়ি, বাস ‘বুক’ করে ফেলেছে। প্রচারও চলছে জোরকদমে।
ডিওয়াইএফআই সূত্রে জানা গিয়েছে, সেনাবাহিনীর তরফে তাদের জানানো হয়েছে, প্রজাতন্ত্র দিবসের মহড়া কুচকাওয়াজ রয়েছে ৭ জানুয়ারি। তা হবে রেড রোড এবং ব্রিগেডে। ওই দিনেই রয়েছে কলকাতা পুলিশের ম্যারাথন দৌড়। সিপিএমের যুব সংগঠনের তরফে সভা শুরুর সময় কিছুটা পিছিয়ে, মঞ্চের দিক বদল করার কথা উল্লেখ করে নতুন আবেদন জমা দেওয়া হয়েছিল। তার পরেও অনুমতি মেলেনি। ফোর্ট উইলিয়াম কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ডিওয়াইএফআইয়ের দ্বিতীয় দফার বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও হয়নি। ময়দান সেনাবাহিনীর হাতে। শুধু ব্রিগেড নয়, সমাবেশে যে গাড়ি আসবে, তা রাখতেও ময়দান ব্যবহার করার অনুমতি লাগবে সেনা কর্তৃপক্ষের থেকে। যুবনেতারা অনুমতি আদায় করতে না পারার পর দিল্লিতে সিপিএমের কেন্দ্রীয় স্তরের নেতারা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের দফতরেও দৌত্য চালিয়েছিলেন। কিন্তু তার পরেও মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত অনুমতি মেলেনি বলেই খবর।
গত বছর ২০ সেপ্টেম্বর ধর্মতলায় সভা করতে চেয়েছিল সিপিএমের ছাত্র-যুবরা। কিন্তু সে বার লালবাজার অনুমতি দেয়নি। ওয়াই চ্যানেলের খানিকটা ঘুপচি জায়গায় সভা করার অনুমতি দিয়েছিল কলকাতা পুলিশ। কিন্তু দেখা গিয়েছিল, তিন দিক থেকে তিনটি মিছিল এসে ধর্মতলা অবরুদ্ধ করে দিয়েছে। ব্রিগেডে সেই কৌশল নেওয়া কতটা সম্ভব, তা নিয়েও তর্ক রয়েছে সংগঠনের অন্দরে। কারণ, কলকাতা পুলিশ এবং সেনাবাহিনী এক নয়। এখন দেখার, কী সিদ্ধান্ত নেয় আলিমুদ্দিন স্ট্রিট। তবে ৭ তারিখ যে সিপিএম দলের যুব সংগঠনের ব্যানারে কলকাতায় সভা করবে, সেটি স্পষ্ট।