নিজের কপালে আঙুল ঠেকিয়ে এ ভাবেই গুলি চালানোর কথা বলছেন অভিষেক (বাম দিকে)। মঙ্গলবার বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের হাতে প্রহৃত পুলিশকর্তা দেবজিৎ (ডান দিকে)।
নবান্ন অভিযানের সময় যে ভাবে পুলিশের গাড়িতে আগুন লাগানো হয়েছে, তা তাঁর সামনে ঘটলে তিনি দুষ্কৃতীদের মাথায় গুলি করতেন। নিজের কপালে আঙুল ঠেকিয়ে বলে দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশিই বললেন, ‘‘পুলিশ অত্যন্ত সংবেদনশীল থেকেছে।’’
বুধবার বিকালে এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কলকাতা পুলিশের অফিসার দেবজিৎ চট্টোপাধ্যায়কে দেখতে গিয়েছিলেন অভিষেক। ওই অফিসার গুরুতর আহত অবস্থায় এসএসকেএম হাসপাতালের উডবার্ন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। তাঁকে দেখে বেরিয়ে অভিষেক বিজেপির কড়া নিন্দা করেন। নবান্ন অভিযানে ‘গুন্ডামি’ হয়েছে জানিয়ে অভিষেক বলেন, ‘‘আমি ওই অফিসারকে বলেছি, আমি আপনাকে স্যালুট করি। আমার সামনে যদি কেউ পুলিশের গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দিত, পুলিশকে মারত, আমি (নিজের কপালে আঙুল ঠেকিয়ে) তাদের মাথায় শ্যুট করতাম!’’
নবান্ন অভিযানে বিজেপি ‘গুন্ডামি এবং মস্তানি’ করেছে বলে জানিয়ে দেন অভিষেক। পাশাপাশিই জানান, পুলিশ ‘সংবেদশীলতা’র পরিচয় দিয়েছে। আহত পুলিশকর্তাকে দেখে বেরিয়ে এসে হাসপাতাল চত্বরেই সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন অভিষেক। বক্তব্যের শুরুতেই তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক নবান্ন অভিযানের দিন বিজেপির ‘গুন্ডামি’ নিয়ে সরব হন। তিনি বলেন, বিজেপি যে সব দাবি নিয়ে নবান্ন অভিযান করবে বলেছিল, সেই দাবিগুলির একটিও তাদের নেতাদের মুখে অভিযানের সময় শোনা যায়নি! অভিষেক বলেন, “বিজেপি নেতারা বলছেন, তাঁদের বাধা দেওয়া হয়েছে। যদি তাঁদের বাধা দেওয়া হয়, তবে তাঁরা এত ঢিল-পাটকেল ছুড়লেন কী ভাবে?” পুলিশের গাড়িতেও বিজেপির লোকেরা পরিকল্পনা করে আগুন দিয়েছে বলে জানিয়ে দেন অভিযেক। তাঁর কথায়, ‘‘ওখানে তো ধারেকাছে কোনও পেট্রল পাম্প ছিল না! তা হলে পেট্রল বা ডিজেল এল কোথা থেকে। নিশ্চয়ই আপনারা নিয়ে এসেছিলেন সঙ্গে করে!’’ বিজেপির ওই আচরণে তাদের স্বরূপ চেনা হয়ে গিয়েছে বলেও জানান অভিষেক।
পুলিশবাহিনীর প্রশংসা করে অভিষেক বলেন, “পুলিশ যথেষ্ট সংযমের পরিচয় দিয়েছে।” বাম জমানার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “সিপিএম আমল হলে পুলিশ গুলি চালিয়ে দিত! পুলিশের জন্য সেটাই সহজ কাজ হত। কিন্তু পুলিশ সংযম দেখানোয় বাংলা যে শান্তিপূর্ণ রাজ্য, তা আরও এক বার প্রমাণ হয়ে গিয়েছে।’’ যারা সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর করেছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোরতম ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বলে জানান ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল সাংসদ।