স্ত্রীকে কটূক্তি ও শ্লীলতাহানির প্রতিবাদ করেছিলেন স্বামী। তাই তাঁকে পিটিয়ে মারার অভিযোগ উঠল দুই যুবকের বিরুদ্ধে। পুরাতন মালদহের নলডুবির বেহুলা কলোনিতে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় বেধড়ক মারধর করা হয় কর্ণ মণ্ডল (৩০) নামে ওই যুবককে। রাতে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। মাথায় গুরুতর আগাত নিয়ে তিন দিন মৃত্যুর সঙ্গে পা়ঞ্জা লড়ার পর মঙ্গলবার সকালে সেখানেই তিনি মারা যান।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার পর থেকে পলাতক ছিল অভিযুক্ত দুই যুবক ঋজু রজক ও রাজু মণ্ডল। মঙ্গলবারই তাদের গ্রেফতার করা হয়। ধৃতদের দুজনেরই বাড়ি পাশের পাড়া রেলগেট কলোনিতে। এ দিন মালদহের সিজেএম আদালতে তোলা হলে পুলিশ তাদের হেফাজত চেয়ে আবেদন করেনি। তাই বিচারক ধৃতদের ১৪ দিনের জন্য জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। পুলিশের যুক্তি তাদের জেরা করে নতুন কিছু আর জানার নেই।
পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবাড়ি পঞ্চায়েত এলাকার বেহুলা কলোনিতে বাড়ি ছিল কর্ণর। পেশায় ছিলেন গাড়িচালক। বাড়িতে তাঁর স্ত্রী অঞ্জলি মণ্ডল ও দুই ছেলে রয়েছে। অঞ্জলির অভিযোগ, শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টা নাগাদ তাঁদের বাড়ির পাশের চায়ের দোকানে বসে তাঁকে লক্ষ্য করে কটূক্তি ও অশ্লীল ইঙ্গিত করেন রেল কলোনি এলাকার দুই যুবক। তিনি প্রতিবাদ করলে তাঁর শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে ওই দু’জন। তিনি চিত্কার জুড়ে দিলে তাঁর স্বামী ঘর থেকে বের হয়ে এসে প্রতিবাদ করেন।
অভিযোগ, তারপরই ওই দুই যুবক সেখানে থাকা বাঁশ দিয়ে তাঁর স্বামীকে এলোপাথাড়ি পেটাতে শুরু করে। স্বামীকে বাঁচানোর জন্য ঝাঁপিয়ে পড়লে তাঁকেও মারধর করা হয়। এরপর তাদের চিৎকার শুনে এগিয়ে আসেন আশেপাশের লোকজন। তখন কর্ণকে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় তারা। স্থানীয় বাসিন্দারাই কর্ণকে উদ্ধার করে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানেই গত তিনদিন ধরে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে প্রথম থেকেই জানিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। মঙ্গলবার ভোরে মৃত্যু হয় তাঁর।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই মারধরের ঘটনার পরদিন কর্ণর স্ত্রী মালদহ থানায় দুই যুবকের বিরুদ্ধে তাঁর শ্লীলতাহানির চেষ্টার প্রতিবাদ করায় স্বামীকে মারধরের অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। পুলিশ মামলা রুজু করে তদন্ত শুরুও করে। পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষ বলেন, ‘‘এখন ওই ঘটনায় খুনের মামলা রুজু করা হয়েছে। দু’জনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে।’’