প্রতীকী ছবি।
একটা লড়াই শেষ হয়েছিল সাত বছর আগে। চার পাশের প্রতিকূলতাকে ঠেলে মাথা তুলে দাঁড়ানোর লড়াই। সেই লড়াইয়ে আংশিক জিতেছিলেন সাবরিনা (নাম পরিবর্তিত)। এ বার লড়াইটা অন্য। নিজের কাছের মানুষদের সঙ্গে এই লড়াইয়ে তিনি জিতবেন কী ভাবে, আর জেতার পরেও সেই বাঁচাটা কেমন হবে, তা নিয়েই ভেবে চলেছেন উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বসিরহাট-মাটিয়ার ওই তরুণী। যৌনপল্লি থেকে উদ্ধারের পরে যিনি নিজের জোরে বাঁচতে শিখেছেন।
রাজ্য সরকারের ‘ভিক্টিম কমপেনসেশন স্কিম’ অনুযায়ী গত সেপ্টেম্বরে রাজ্য ‘লিগাল সার্ভিস অথরিটি’ (সালসা) ওই তরুণীকে ছ’লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দিয়েছে। অথচ সেই নির্দেশ স্বস্তির বদলে জীবনে আরও অশান্তি বাড়িয়েছে। শুরু হয়েছে নতুন অত্যাচার। সাবরিনার অভিযোগ, সেপ্টেম্বরে ক্ষতিপূরণের খবর পাওয়ার পর থেকেই তাঁর স্বামী এবং ছোট ভাই অত্যাচার শুরু করেছে। যার জেরে তাঁকে হাসপাতালেও ভর্তি হতে হয়। অভিযোগ, পুলিশে জানিয়েও সুরাহা হয়নি। শেষে গত সোমবার তিনি দ্বারস্থ হন জেলার পুলিশ সুপারের। বসিরহাট ডিভিশনের পুলিশ সুপার কঙ্করপ্রসাদ বারুই জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই মামলা রুজু হয়েছে। কিন্তু সাবরিনার স্বামী রিয়াজউদ্দিন মণ্ডল ও ছোড়দা ছত্তার আলি মণ্ডল পালিয়েছে। তাদের খোঁজ চলছে।
এক কন্যাসন্তানের মা সাবরিনার কথায়, ‘‘লড়তে লড়তে খুব ক্লান্ত লাগে। তখনই নিজেকে বোঝাই, মেয়েটাকে বড় করতে হবে। ওকে সুস্থ জীবন দিতে হবে। কোনও অন্যায়ের সঙ্গে আপস করব না আমি।’’
২০০৬ সালে বসিরহাট থেকে পাচার হয়ে গিয়েছিল বছর তেরোর সাবরিনা। অভিযোগ, বিক্রি হওয়ার পরে পুণের যৌনপল্লিতে গিয়ে সে জানতে পারে, এক নিকটাত্মীয়ই তাকে বিক্রি করে দিয়েছে ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে! বছর ছয় পরে যখন সাবরিনা পুণে থেকে উদ্ধার হয়ে ফিরে আসেন, তখন তাঁর বয়স ১৯।