মৃত সারজানা।
বিয়ের সময় পাত্রপক্ষের দাবি ছিল— নগদ তিন লাখ টাকা এবং একটা মোটর বাইক পণ হিসেবে দিতে হবে। ২০১৭ সালের নভেম্বরে বিয়ের সময় পাত্র সামিদুরকে পণের দু’লাখ টাকা এবং মোটর বাইক তুলে দেয় পাত্রী সারজানার পরিবার। বাকি ছিল এক লাখ। অভিযোগ, সেই বাকি টাকা না পাওয়ায়, সামিদুর পণে পাওয়া মোটর সাইকেল দিয়ে সারজানাকে পিষে মারে। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ থানার বরুয়া গ্রামপঞ্চায়েতের মন্ডলপাড়া এলাকায়।
রায়গঞ্জের কৃষ্ণপুর ঘোড়াডাঙি এলাকার বাসিন্দা আবদুল জলিলের ছেলে সামিদুর রহমানের সাথে বিয়ে হয় বড় বরুয়া গ্রামের মণ্ডলপাড়ার বাসিন্দা বদির মহম্মদের মেয়ে বাইশ বছরের সারজানা খাতুনের। তার আট মাসের মধ্যেই মেয়ের মৃত্যুসংবাদ পেতে হল বদিরকে।
সারজানার পরিবারের অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই বার বার সামিদুর পণের বাকি টাকার জন্য চাপ দিতে থাকে সারজানার উপর। বাকি টাকা সারজানার পরিবার না দিতে পারায়, দিনে দিনে অত্যাচারের মাত্রা বাড়তে থাকে বলে অভিযোগ। সারজানার পরিবার রবিবার পুলিশকে জানিয়েছে— শুধু সামিদুর নয়, পাত্রের বাবা-মা এবং ভাইও নানা ভাবে শারীরিক অত্যাচার চালাতো সারজানার ওপর।
আরও পড়ুন, অ্যাসিড-হানাদারকেই বিয়ে, চিঠি আদালতে
গত কয়েক মাস ধরে চলতে থাকা এই অশান্তির মীমাংসা করতে সারজানার পরিবার একাধিক বার সামিদুরের বাড়িতেও যায়। কিন্তু মীমাংসা না হওয়ায়, কিছুদিন আগে শ্বশুরবাড়ি থেকে নিজের বাড়িতে চলে আসেন সারজানা।
অভিযোগ, শনিবার বিকেলে সারজানার বাড়িতে আসে সামিদুর। তাঁকে বেড়াতে নিয়ে যাবে বলে মোটরবাইকে চাপিয়ে গ্রামের বাইরে নিয়ে যায়। সারজানার পরিবার পুলিশের কাছে জানিয়েছে, কিছু ক্ষণ পর গ্রামেরই কয়েকজন প্রায় সংজ্ঞাহীন এবং রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখেন সারজানাকে। তাঁরাই তাঁকে রায়গঞ্জ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে রবিবার সকালে তাঁর মৃত্যু হয়। পরিবারের অভিযোগ, সারজানা হাসপাতালের পথে জানিয়েছেন, সামিদুর তাঁকে মোটর বাইক থেকে ফেলে প্রথমে সেই বাইকেই পিষে মারার চেষ্টা করে। আহত অবস্থায় বেধড়ক মারধরও করে।
আরও পড়ুন, সামাজিক সংগঠনের আড়ালেও রাজনীতি
রায়গঞ্জ থানাতে সামিদুর এবং তার পরিবারের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ করেছে সারজানার বাবা। পুলিশ সারজানার দেহ ময়না তদন্তে পাঠিয়েছে। অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।