বিলুপ্তপ্রায় মাছের প্রজাতি রক্ষায় জেলার চাষিদের উৎসাহিত করতে হুগলিতে পতিত পুকুরগুলিতে চাষ বাড়াতে উদ্যোগী হয়েছে মৎস্য দফতর। এ জন্য গ্রাম ধরে চাষিদের নিয়ে সচেতনতা শিবির এবং প্রশিক্ষণ শিবিরেরও আয়োজন শুরু হয়েছে। উৎসাহী চাষিদের অনুদান হিসাবে মাছের চারা, মাছের খাবার, জাল-হাঁড়ি ইত্যাদি উপকরণ দেওয়া হবে বলে ওই দফতর জানিয়েছে।
জেলা মৎস্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, হুগলিতে নথিভুক্ত ১৬২৬৮.০১ হেক্টর জলাভূমির মধ্যে মাছ চাষযোগ্য এলাকা ৯২২৪.২২ হেক্টর। বাকি আংশিক ভাবে পতিত জলাভূমি রয়েছে ৪৫৪৫.৭৬ হেক্টর এবং সম্পূর্ণ পতিত ২৪৯৮.০৩ হেক্টর। চলতি মাসে মৎস্য দিবসকে উপলক্ষ করে ওই সব আংশিক পতিত এবং সম্পূুর্ণ পতিত জলাভূমিতে জিওল, শিঙি, কই, ল্যাঠা, চ্যাং, সরপুঁটি, পাঁকাল, ট্যাংরা, পাবদা, মৌরলা, বাটার মতো বিলুপ্তপ্রায় মাছ চাষ বাড়ানোর চেষ্টা চলছে।
জেলা সহ-মৎস্য অধিকর্তা পার্থ কুণ্ডু বলেন, “দেশি বিপন্ন প্রজাতির মাছগুলির চাষ, প্রজনন এবং বংশবৃদ্ধি নিয়ে চাষিদের সচেতন করার কাজ শুরু হয়েছে। প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা হবে রাজ্য স্তর থেকে পঞ্চায়েত স্তর পর্যন্ত।”
জেলা মৎস্য দফতরের কর্তারা জানান, গ্রামের যে সব পুকুর বা ডোবা সূর্যের আলো ভাল ভাবে পায় না এবং আগাছায় ভরে যাওয়ায় অবহেলায় পড়ে থাকে, সেই সব পুকুর বা ডোবাগুলিতে বিলুপ্তপ্রায় মাছ চাষ করলে জলাশয় যেমন দূষণমুক্ত হয়, তেমনই চাষিরা আর্থিক ভাবে লাভবান হন। মাছগুলিকেও অবলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করা যায়। যথাযথ ভাবে চাষ করলে ৫ কাঠা জলাশয়ে ১ কুইন্টালের বেশি জিওল মাছ মেলে।
বিলুপ্তপ্রায় মাছ চাষের ক্ষেত্রে কিছু চাষি ইতিমধ্যেই আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তারকেশ্বরের নছিপুরের সীমন্ত মালিক বলেন, “বাজারে চাহিদা থাকায় মৌরলা আর বাটা মাছ চাষের পরিকল্পনা করেছি।” একই ভাবে ওই সব বিপন্ন প্রজাতির মাছ চাষে আগ্রহের কথা জানিয়েছেন খানাকুলের রাজহাটির বংশীবদন রায়, আরামবাগের হরিণখোলার সনাতন মণ্ডল প্রমুখ। তবে, সরকারি সুযোগ-সুবিধা এবং পরামর্শ যথাযথ ভাবে মিলবে কি না, তা নিয়ে কেউ কেউ সংশয়ও প্রকাশ করেছেন।