থানায় শ্লীলতাহানির অভিযোগ দায়ের করা পরেও অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়নি বলে অভিযোগ। নাছোড় গৃহবধূ শেষ পর্যন্ত অভিযুক্তদের অবিলম্বে ধরার দাবিতে মা এবং বোনকে নিয়ে ধরনা দিলেন থানায়। ফলও মিলল হাতে হাতে। গৃহবধূকে সঙ্গে নিয়ে অভিযান চালিয়ে পাঁচ অভিযুক্তের একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রবিবার ঘটনাটি ঘটেছে উলুবেড়িয়া থানায়।
পুলিশ জানিয়েছে, দশভাগা গ্রামের বাসিন্দা ওই গৃহবধূ গত ২৪ জুলাই প্রতিবেশী পাঁচ যুবক তাঁর শ্লীলতাহানি করেছে বলে থানায় অভিযোগ করেন। বধূর অভিযোগ, পুলিশ তার পর থেকে অভিযুক্তদের ধরতে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। উল্টে তাঁর বাবাকে শনিবার রাতে চুরির অভিযোগে থানায় ধরে নিয়ে যায়। যদিও চুরির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বধূর বাবা। রবিবার সকাল ৮টা নাগাদ ওই গৃহবধূ মা ও বোনকে নিয়ে সটান থানায় গিয়ে হাজির হন। শ্লীলতাহানিতে অভিযুক্তদের ধরার দাবিতে ধরনায় বসে পড়েন। বধূর অভিযোগ, ‘‘স্বামীর বিরুদ্ধে আমি বধূ নির্যাতনের মামলা করেছি। তার পর থেকেই স্বামীর পক্ষ নিয়ে কয়েকজন গ্রামবাসী আমাকে উত্যক্ত করত। গত ২৩ জুলাই সন্ধ্যায় পাঁচ জন আমার শ্লীলতাহানি করে। তারপরে তারা সারারাত আমার বাড়ি পাহারা দেয় যাতে থানায় আসতে না-পারি। পরদিন ভোরে লুকিয়ে আমি থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করি।” তাঁর আরও অভিযোগ, “পুলিশ অভিযুক্তদের ধরতে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি, উল্টে অভিযুক্তদের ধরার জন্য এক হাজার টাকা নেয়।’’
এ দিন সকাল থেকেই থানায় ওই তিনজন বসে থাকলেও বেলা আড়াইটা নাগাদ সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিরা গেলে পুলিশ নড়েচড়ে বসে। মহিলাকে সঙ্গে নিয়েই তারা গ্রামে গিয়ে স্থানীয় একটি ক্লাব থেকে শেখ গফফর নামে এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে জানিয়ছে পুলিশ। তবে অভিযুক্তদের ধরতে গাফিলতি বা অভিযোগকারিণীর কাছ থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগ মানতে চয়নি পুলিশ। উলুবেড়িয়া থানা সূত্রের খবর, ওই গৃহবধূর অভিযোগ পাওয়ার পর গ্রামে যতবার যাওয়া হয়েছে ততবারই অভিযুক্তরা পালিয়ে গিয়েছে।
ধৃত শেখ গফফার অবশ্য শ্লীলতাহানির অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তার বক্তব্য, “ওই মহিলা নানা অসামাজিক কাজে যুক্ত থাকায় সমস্ত গ্রামবাসী মিলে তার প্রতিবাদ করেছিলাম। এর পরেই ওই গৃহবধূ আমাদের ফাঁসিয়েছে।’’ ঘটনার তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।