গ্রামবাসীর মেরামত করা সেই সেতু। ছবি: রমাপ্রসাদ গঙ্গোপাধ্যায়।
ভাঙা সেতু পেরোতে নিজেরাই বাঁশ বেঁধে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছেন গ্রামের মানুষ। উলুবেড়িয়ার মহেশপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এালাকার মানুষের অভিযোগ, হাজরা পাড়ায় নিকশি খালের উপরে ওই কংক্রিটের সেতুটি মেরামতির জন্য বহুবার দাবি জানানো হয়েছে। কিন্তু তাতে কান দেয়নি প্রশাসন। বাধ্য হয়ে নিজেরাই নিজেদের ব্যবস্থা করে নিয়েছেন।
পঞ্চায়েত ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৮০ সালে সেচ দফতরের তত্ত্বাবধানে ওই সেতুটি তৈরি হয়েছিল। সেতুটি লম্বায় প্রায় ২০ ফুট এবং চওড়ায় ৫ ফুট। সেতুর উপর দিয়ে মানুষের পাশাপাশি সাইকেল, মোটর সাইকেল, ভ্যানরিকশা, মোটর ভ্যান চলাচল করে। কিন্তু এত বছরে একবারও সেতুর মেরামত হয়নি বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। অথচ এই সেতুটি দিয়ে বলরামপুর, শশাবেড়িয়া, উত্তর রামচন্দ্রপুর, ময়নাপুর, মহেশপুর ইত্যাদি গ্রামেj কয়েক হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। গত দু’বছর ধরে সেতুর অবস্থা আরও খারাপ পড়েছে। মাস আটেক আগে সেতুর মাঝখানে চারফুট জায়গা জুড়ে সিমেন্টের চাঙড় খসে গিয়ে বিরাট ফাঁক তৈরি হয়। এতে আহত হন দু’জন। এর পর সেতুর ভাঙা অংশের মেরামতির জন্য বার বার স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য এবং পঞ্চায়েত প্রধানকে জানানো হয়েছে। কিন্তু কোনও কাজই হয়নি। সেতুটি দিয়ে যাতায়াত বন্ধ থাকায় সমস্যায় পড়তে হচ্ছিল এলাকার মানুষকে। ঘুরপথে যাতায়াত করতে গিয়ে অনেকটা দূরত্ব পেরোতে হচ্ছিল। তাই শেষ পর্যন্ত নিজেদের স্বার্থেই গ্রামের লোকজন চাঁদা তুলে সেতুর ফাঁকা অংশে বাঁশের পাটাতন ঢেকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কোনওরকমে যাতায়াত করছেন।
বলরামপুর গ্রামের বাসিন্দা অশোক করণ, মদন হাজরা বলেন, “সেতুটি মেরামতের জন্য বার বার পঞ্চায়েত থেকে প্রশাসন সবাইকে জানিয়েছি। কোনও ফল হয়নি। বাধ্য হয়ে শেষে নিজেরাই চাঁদা তুলে বাঁশের পাটাতন বানিয়ে পারাপার করছি। যে কোনও সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। কিন্তু কী করব?” মহেশপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সুলতানা বেগম বলেন, “সেতুটি ভেঙে যাওয়ার পর আমি সেচ দফতরকে জানিয়েছি। কিন্তু এখনও ওরা কাজ শুরু করেনি।”
উলুবেড়িয়া সেচ দফতরের নির্বাহী বাস্তুকার সুমন্ত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “বলরামপুর গ্রামে ভেঙে যাওয়া সেতুর ব্যপারে আমার কিছু জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখছি। প্রয়োজনে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”