বেড়াতে যাওয়ার জন্য ভ্রমণ সংস্থার বদলে সংস্থার কর্ণধারের নামে টাকা জমা দিতে বলায় ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে মামলা দায়ের করেছিলেন হাওড়ার এক বাসিন্দা। অভিযোগ, অগ্রিম বাবদ যে টাকা ভ্রমণ সংস্থার পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছিল, তা-ও ফেরত দেওয়া হয়নি। ক্রেতা সুরক্ষা আদালত গত সপ্তাহে ওই সংস্থাকে নির্দেশ দিয়েছে, হাওড়ার ওই বাসিন্দাকে ক্ষতিপূরণ বাবদ ২৫ হাজার টাকা দিতে হবে। ওই আদালতের পর্যবেক্ষণ, ভবিষ্যতে এমন কার্যকলাপ আদালতের নজরে এলে ওই সংস্থার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের জরিমানা করা হবে। সংস্থার ব্যবসাও বন্ধ করা হতে পারে।
ক্রেতা আদালত সূত্রের খবর, সপরিবার লে-লাদাখ বেড়াতে যাওয়ার জন্য চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ের ওই ভ্রমণ সংস্থায় গত বছরের এপ্রিলে ৮ হাজার টাকা অগ্রিম দেন হাওড়ার বাসিন্দা পেশায় আইনজীবী স্মরজিৎ রায়চৌধুরী। বাকি টাকা ওই বছরের ২৯ অগস্ট জমা দেওয়ার কথা ছিল। আইনজীবী ২৮ অগস্ট বাকি টাকা জমা দিতে গেলে তাঁকে সংস্থার কর্মীরা জানান, কম্পিউটারে যান্ত্রিক সমস্যা রয়েছে। ২ সেপ্টেম্বর তাঁকে সংস্থার অফিসে এসে টাকা জমা দিতে বলা হয়। আদালতে স্মরজিৎবাবুর অভিযোগ, সেই দিন তিনি বাকি টাকা জমা দিতে গেলে তাঁকে বলা হয়, সংস্থার অন্যতম কর্ণধারের নামে চেক জমা দিতে। নিয়ম বিরুদ্ধ কাজ করতে তিনি রাজি না হওয়ায় তাঁর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয় বলে অভিযোগ। অভিযোগ, তাঁকে দেখে নেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়।
পরের দিন সংস্থার বিরুদ্ধে বৌবাজার থানায় অভিযোগ জানান আইনজীবী। পুলিশ ব্যবস্থা না নেওয়ায় তিনি কলকাতা হাইকোর্টে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে মামলাও দায়ের করেন। পরে অবশ্য পুলিশ তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআর দায়ের করে।
স্মরজিৎবাবু মঙ্গলবার জানান, তিনি ওই সংস্থার বিরুদ্ধে ৮ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের আবেদন জানিয়ে ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের দ্বারস্থ হন গত বছরের অক্টোবরে। ওই আইনজীবীকে ২৫ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার পাশাপাশি ক্রেতা সুরক্ষা আদালত নির্দেশ দিয়েছে, আদালতকেও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে ওই সংস্থাকে।
ওই ভ্রমণ সংস্থার অন্যতম কর্ণধার সৌমিত্র কুণ্ডু বলেন, “অগ্রিম টাকা জমা দেওয়ার সময় কিন্তু স্মরজিৎবাবু সংস্থার এক কর্ণধারের নামেই চেক ইস্যু করেন। তখন তিনি সংস্থার নিয়ম মেনেই কর্ণধারের নামে চেক মারফত টাকা দেন। সেই প্রমাণও রয়েছে। তা ছাড়া অন্য নামে টাকা জমা দেওয়ার কথা বলা হলেও, যাবতীয় রসিদ সংস্থার নামেই কাটা হয়। আমরা ওঁকে টাকা ফেরতও দিতে চেয়েছিলাম। উনি তা নেননি।”