পরিপাটি বংশবাটি
স্থান মনোহর
যে দিকে তাকাই
দেখি সকলই সুন্দর...
বাঁশবেড়িয়াকে নিয়ে কবি দীনবন্ধু মিত্র লাইন ক’টি লিখেছিলেন। অতীতে নাম ছিল বংশবাটি, কালক্রমে তা হয়ে যায় বাঁশবেড়িয়া। সপ্তগ্রাম বন্দর লাগোয়া এই জায়গা এক সময় ঐতিহাসিক নানা কারণে সমৃদ্ধ ছিল। গঙ্গাতীরের এই শহরে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের টানে অতীতে বাঁশবেড়িয়ায় পা পড়েছিল অনেক রাজা মহারাজার। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের পাশাপাশি চোখ টানে শহরের নানা দ্রষ্টব্যও। যে তালিকায় প্রথমেই উঠে আসে হংসেশ্বরী মন্দির। ঐতিহাসিক এই মন্দির অনেকে এখানে বেড়াতে আসেন। পর্যটকদের আকর্ষণ বাড়াতে মন্দিরের চারপাশ এখন ঢেলে সাজানো হয়েছে। তৈরি করা হয়েছে বাগান। রাতে আলো দিয়ে সাজানো হয়েছে। মন্দির লাগোয়া কয়েকটি গড় রয়েছে। পুরসভার পক্ষ থেকে ব্যাক্তিগত মালিকানাধীন সেই গড়গুলিকে কিনে নিয়ে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে।
মন্দিরকে কেন্দ্র করে পর্যটকদের ভিড় দেখে রাজ্য পর্যটন দফতর এখানে রাতে পর্যটকদের থাকার জন্য অতিথিনিবাস তৈরির কাজে হাত দিয়েছে। কারণ, আগে দূরদূরান্ত থেকে আসা পর্যটকদের রাতে এখানে থাকার কোনও ব্যবস্থা না থাকায় সমস্যায় পড়তে হত। পর্যটন দফতর সূত্রের খবর, অতিথিনিবাস তৈরিতে প্রায় ১ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা ব্যয় করা হচ্ছে। এরপর রাতে এখানে থাকার কোনও অসুবিধা থাকবে না পর্যটকদের। হংসেশ্বরী মন্দিরের পাশাপাশি সাজিয়ে তোলা হচ্ছে ঐতিহাসিক গাজি দর্গা। হুগলি জেলাশাসকের দফতর থেকে ৭৫ লক্ষ টাকা খরচ করে দরগা সাজার সঙ্গে সঙ্গে তা আলোকিত করার কাজও চলছে। সেই সঙ্গে পুরসভা ও পর্যটন দফতর যৌথ উদ্যোগে গঙ্গার ঘাটগুলির সৌন্দর্যায়নে উদ্যোগী হয়েছে। সম্প্রতি পুরএলাকার গঙ্গার ঘাটগুলিকে ঢেলে হয়েছে গঙ্গা অ্যাকশন প্ল্যানের টাকায়। প্রথম পর্যায়ে ঐতিহাসিক ত্রিবেণী শ্মশান ঘাট, সাহাগঞ্জ এবং কুণ্ডুুবাটি ঘাট-সহ ১৩টি ঘাটকে এই প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে বাকি ঘাটগুলিকেও ওই প্রকল্পের আওতায় আনা হবে। পুর এলাকায় দুটি পার্ককেও ঢেলে সাজা হচ্ছে।
তবে এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি, ত্রিবেণী শ্মশান ঘাটে আরও একটি বৈদ্যুতিক চুল্লির। কারণ বর্তমানে সেখানে দু’টি চুল্লি কাজ করলেও আশপাশের জেলা থেকে যে ভাবে শবদাহ করার চাপ বাড়ছে তাতে আরও একটি চুল্লি তৈরি জরুরি।