সেই বাণিজ্যিক ভবন।—নিজস্ব চিত্র।
৬০ লক্ষ টাকা খরচ করে ডোমজুড়ের মাকড়দহে বাণিজ্যিক ভবন তৈরিই সার। ভবন তৈরির প্রায় ৬ বছর পরেও বছরেও বিলি হয়নি অধিকাংশ দোকান। ফলে একদিকে ডোমজুড় পঞ্চায়েত সমিতির যেমন আয় বন্ধ, তেমনি উপযুক্ত রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে নষ্ট হচ্ছে বাণিজ্যিক ভবন দু’টি। এর জন্য পরিকাঠামোগত ত্রুটিকেই দায়ী করেছেন ব্যবসায়ীরা।
২০০২ সাল নাগাদ বাণিজ্যিক ভবন দু’টি তৈরির পরিকল্পনা করে ডোমজুড় পঞ্চায়েত সমিতি।এ জন্য অর্থ মঞ্জুর করে বাম পরিচালিত হাওড়া জেলা পরিষদ। ২০০৩ সালে বাণিজ্যিক ভবন তৈরির জন্য ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের পরে কাজও শুরু হয়। ২০০৭ সাল নাগাদ একটি ভবন তৈরির কাজ শেষ হয়ে যায়। দ্বিতীয়টির কাজও শেষ হয় কয়েক বছরের মধ্যে। প্রথম ভবনটির নীচের তলা মাছের বাজারের জন্য নির্দিষ্ট করা হয়। দ্বিতীয় তলে তৈরি করা হয় ২০টি দোকান। তৃতীয় তলে পরে দোকান তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছিল তৎকালীন ডোমজুড় পঞ্চায়েত সমিতি। দ্বিতীয় ভবনটির নীচের তলা সব্জি বাজারের জন্য নির্দিষ্ট করা হয়। ওই ভবনেরও দোতলা ও তিনতলায় দোকান ঘর তৈরি করা হয়।
বর্তমানে প্রথম বাণিজ্যিক ভবনে নীচের তলায় মাছবাজার ও দ্বিতীয় ভবনের নীচের তলায় সব্জি বাজার বসছে। কিন্তু প্রথম ভবনের দোতলার ২০টি দোকানের মধ্যে কয়েকটি মাত্র বিলি করা হয়েছে। বাকিগুলি পড়ে রয়েছে। তিনতলাতেও কোনও দোকানঘর তৈরি না করে সেটি এক ব্যবসায়ীকে ভাড়া দেওয়া হয়েছে পঞ্চায়েত সমিতি সূত্রের খবর। এক্ষেত্রে ওই ব্যবসায়ীকে স্বাভাবিক ভাড়ার চেয়ে অনেক কম ভাড়ায় হলঘর ভাড়া দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় দোকানদাররা।
দ্বিতীয় বাণিজ্যিক ভবনের একতলায় সব্দি বাজার বসলেও দোতলা ও তিনতলার একটি দোকানঘরও এখনও পর্যন্ত বিলি করা হয়নি। এ জন্য পঞ্চায়েত সমিতির উদাসীনতা এবং পরিকল্পনায় ত্রুটির অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। তাঁদের দাবি, বাণিজ্যিক ভবন দু’টিতে দোকান ঘরগুলি অপরিকল্পিত ভাবে তৈরি করা হয়েছে। কোনও শৌচলয়ের ব্যবস্থা নেই। ওখানে দোকান নিয়ে ব্যবসা করলে তাঁদের ক্ষতিই হবে।
বর্তমান তৃণমূল পরিচালিত ডোমজুড় পঞ্চয়েত সমিতিও ব্যবসায়ীদের অভিযোগের সঙ্গে একমত। যদিও অভিযোগ মানতে নারাজ জেলা পরিষদের প্রাক্তন পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ আনন্দ চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “বাস্তুকাররা সেই সময় যে ভাবে পরিকল্পনা করেছিলেন সেইমতোই বাণিজ্যক ভবন দু’টি তৈরি হয়েছে।” কিন্তু যাঁদের জন্য ওই ভবন সেই ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা না করার অভিযোগ প্রসঙ্গে আনন্দবাবুর বক্তব্য, “সকলের সঙ্গেই আলোচনা করা হয়েছিল।” তাঁর পাল্টা অভিযোগ, “২০০৮ সালের পর পঞ্চায়েত সমিতিকে ক্ষমতায় আসে তৃণমূল। তারা কেন নতুন পরিকল্পনা করে বাণিজ্যিক ভবনের দোকানঘরগুলি বিলির ব্যবস্থা করেনি?”
ডোমজুড় পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সহ-সবাপতি বাবলু মণ্ডল বলেন, “আমরা ক্ষমতায় এসে দোকানঘরগুলি বিলি করার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু দোকানদারদের কাছ থেকে কোনও সাড়া না পাওয়ায় তা সম্ভব হয়নি। তবে কী ভাবে দোকানগুলি বিলি করা যায় সে ব্যাপারে ভাবনাচিন্তা চলছে। ভবন দু’টির পরিকাঠামোর উন্নতিতে নতুন করে পরিকল্পনা করা হবে।”