পুর-কর্তৃপক্ষ পরিচালিত চন্দননগরের স্কুলগুলিতে বামেদের জয়-জয়কার।
শুক্রবার পরিচালান সমিতির নির্বাচনে কার্যত গোহারা হয়েছে তৃণমূল প্রার্থীদের। তৃণমূলের এই ভরা আবহে কী করে বামেরা বিপুলভাবে জিতল সেই নিয়ে শাসকদলে শিক্ষা সেলের সংগঠনেই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। চন্দননগর পুরসভা পরিচালিত স্কুলগুলির একটি পরিচালন সমিতি রয়েছে। সেই সমিতির প্রতিনিধি কারা হবেন? তার নির্বাচন ছিল এদিন। এতদিন সেই সমিতির কোনও নির্বাচন হত না। বামেরা নিজেদের মধ্য থেকেই মনোনীত হতেন।
মোট চারটি আসনে ২৭০ জন ভোটার ছিলেন। তাঁরা তিনজন শিক্ষক ও একজন অশিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচন করবেন। এ দিন কানাইলাল বিদ্যামন্দিরের ফ্রেঞ্চ বিভাগে ওই নির্বাচন ছিল। মোট ভোট পড়ে ২০১টি। তার মধ্যে বৈধ্য ভোট ছিল ১৯৯টি। বামেরা মোট ১৩৭টি ভোট। বাকি ভোট পান তৃণমূল প্রার্থীরা।
চন্দননগরের যে সমস্ত স্কুলগুলির মধ্যে নির্বাচন হয়, তার মধ্যে ৬টি ছিল মাধ্যমিক স্কুল। বাকীগুলি ছিল প্রাইমারি স্কুল। বামেদের এবিটিএ-র চন্দননগরের জোনাল সভাপতি বিশ্বনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন,“শিক্ষকদের মধ্যে বামেদের সংগঠন এখনও অটুট আছে। এই নির্বাচনের মধ্যে তা ফের স্পষ্ট হয়ে গেল। আমাদের উপর আস্থা রেখেছেন শিক্ষকেরা। আমরা তাঁদের আস্থার সপক্ষে সম্মান রাখার চেষ্টা করব।”
কিন্তু এতদিন নির্বাচন হত না কেন? বামেরাই বা কেন নিজেদের মধ্যে থেকে প্রতিনিধি মননীত করতেন? সেই প্রশ্নের উত্তরে অবশ্য শিক্ষক নেতা বলেন,“শেষ নির্বাচন হয়েছে ২০০৯ সালে। কিন্তু বিরোধী হিসেবে এতদিন কেউ দাঁড়াতেন না। সেই কারণেই বিরোধী প্রার্থী না থাকায় নির্বাচনের কোনও গুরুত্ব ছিল না। তবে এবার ভালভাবেই কোনও বাধা ছাড়াই নির্বাচন হয়েছে।”
দলের প্রার্থীরা হারলেও অবশ্য, চন্দননগর পুরসভার শিক্ষা সেলের দায়িত্বে থাকা কাউন্সিলর শান্তনা রায় বিষয়টিকে পরাজয় হিসেবে দেখছেন না। তিনি অবশ্য বলেন,“এটা কিন্তু তৃণমূলের হার নয়, জয় হয়েছে। কারণ প্রচুর পরিমানে ভোট কেটেছেন আমাদের প্রার্থীরা।” তাঁর সংযোজন, “রাতারাতি তো আর কাউকে পরিবর্তন করা যায় না। শিক্ষক মানেই বাম মনোভাবাপন্ন। এমনটাই ধারনা ছিল এতদিন। সেটাই ভাঙার চেষ্টা করেছি।”
যদিও দলেরই এক জেলা নেতা বলেন,“চন্দননগরের মত জায়গায় আমাদের কী ভাবে এই পরিমান ভোটে হার হল তা গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে সংগঠনের তরফে। শিক্ষকেরা যদি আমাদের উপর আস্থা রাখতে না পারেন সেটা চিন্তার।” তিনি যোগ করেন, “কারণ আমাদের যে বিপুল পরিমানে জয় হয়েছে, তাতে শিক্ষকেরা ভোট দেননি তা কিন্তু নয়। বহু বামপন্থী মনোভাবাপন্ন মানুষের ভোটও এখন কিন্তু তৃণমূল পায়।”