রেলের নামে ভুয়ো ওয়েবসাইট খুলে নিয়োগের জাল চক্র ধরা পড়েছিল ভবানীপুরে। এ বার প্রধানমন্ত্রীর দফতরের নামে ভুয়ো ওয়েবসাইটের হদিস মিলল হাওড়ায়। ওই জাল ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পে ঋণ পাইয়ে দেওয়ার টোপ দিয়ে প্রতারণা করা হচ্ছিল। সুদীপ্ত চট্টোপাধ্যায় নামে ওই চক্রের মূল পাণ্ডাকে হাওড়ায় তাঁর বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেছে দিল্লি পুলিশ। শনিবার হাওড়া আদালত থেকে ট্রানজিট রিমান্ডে ধৃত সুদীপ্তকে দিল্লি নিয়ে গিয়েছেন তদন্তকারীরা।
সংবাদ সংস্থার খবর, দিল্লি পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চ সম্প্রতি ওই প্রতারণা চক্রের হদিস পায়। তার পরেই চক্রটিকে ধরার জন্য হাওড়া পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে তারা। হাওড়া পুলিশ সূত্রের খবর, শুক্রবার দিল্লি পুলিশের সঙ্গে যৌথ অভিযান চালিয়ে হাওড়ার চ্যাটার্জিহাট থানা এলাকার রামকৃষ্ণ লেনের বাড়ি থেকে সুদীপ্তকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ জানায়, রামকৃষ্ণ লেনে নিজের বাড়িতেই কলসেন্টার খুলে বসেছিলেন সুদীপ্ত। সেখান থেকেই ভুয়ো ওয়েবসাইটের মাধ্যমে চালানো হচ্ছিল প্রতারণা চক্র। ওই দফতরে ১৬-১৭ জন কাজ করতেন। হাওড়া ও দিল্লি পুলিশের যৌথ অভিযানে ওই কলসেন্টার থেকে ২০টি মোবাইল, হার্ড ডিস্ক, ৪৩টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের নথি, সরকারি অফিসের ১৬টি নকল রবার স্ট্যাম্প উদ্ধার করা হয়েছে।
দিল্লি পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (ক্রাইম) রবীন্দ্র যাদব রবিবার জানান, যে-নকল ওয়েবসাইট খুলে প্রতারণা চক্র চালানো হচ্ছিল, সেটির নাম ‘প্রধানমন্ত্রী আদর্শ যোজনা’। প্রধানমন্ত্রীর দফতর বা পিএমও-র নামে নকল ওয়েবসাইট তৈরি করে ঋণ দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ আসতেই তদন্তে নামে দিল্লি পুলিশ। ক্রাইম ব্রাঞ্চের অফিসারেরা ওই নকল ওয়েবসাইটের মূল সার্ভার সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করেন। তার পরেই তাঁরা নিশ্চিত হন যে, ওয়েবসাইটটি নকল এবং কেন্দ্রের কোনও মন্ত্রকের সঙ্গে তার কোনও সম্পর্ক নেই।
পুলিশি সূত্রে জানা গিয়েছে, শুধু প্রধানমন্ত্রীর দফতর নয়, আরও কয়েকটি সরকারি দফতরের নামেও একাধিক নকল ওয়েবসাইট তৈরি করেছিল ওই প্রতারণা চক্র। যার মাথা সুদীপ্ত। তাঁর নামে এর আগে একাধিক বেআইনি অর্থ লগ্নি সংস্থা খুলে আমানতকারীদের প্রতারণা করার অভিযোগও রয়েছে। সেই বিষয়ে চ্যাটার্জিহাট থানায় অভিযোগ জমা পড়েছে। সুদীপ্তকে জেরা করে প্রতারণা চক্রের সবিস্তার তথ্য পাওয়ার চেষ্টা চলছে। খোঁজ চলছে সেখানকার টেলিকলারদেরও। এই চক্রে সুদীপ্তের সঙ্গে আর কে কে আছে, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।