এমন অবস্থাতেই পড়ে রয়েছে সেতু। ছবি: রমাপ্রসাদ গঙ্গোপাধ্যায়।
বছর দশেক আগে ভেঙে গিয়েছিল সেতুর কিছু অংশ। কিন্তু আজ পর্যন্ত সেই ভেঙে যাওয়া অংশ আর সারানো হয়নি। ফলে এলাকার কয়েক হাজার বাসিন্দাকে সমস্যা ভোগ করতে হচ্ছে। যদিও সেচ দফতরের বক্তব্য, সেতু ভেঙে যাওয়ায় স্থানীয় মানুষের যে ভোগান্তি হচ্ছে তা তাঁকা জানেন। শীঘ্রই সেতু মেরামতির ব্যবস্থা হচ্ছে।
হাওড়ার সাঁকরাইলের বাণীপুর-১ পঞ্চায়েত এলাকার মিলবাজারের কাছে সরস্বতী খালের উপরে লোহার খাঁচার উপরে কংক্রিটের ঢালাই সেতুটি ইংরেজ আমলে তৈরি হয়েছিল। পরে স্থানীয় এক চটকল কর্তৃপক্ষ সেটির দেখভাল করছিল। কিন্তু বছর পনেরো আগে মিলটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর থেকেই রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে সেতুটি বেহাল হয়ে পড়ে। স্থানীয় মানুষের যাতায়াতের জন্য সেতুটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হলেও সেটি সারানোর জন্য প্রশাসনের কোনও নেই বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। ফলে যত দিন গিয়েছে সেতুর অবস্থা আরও শোচনীয় হয়েছে। ভাঙা সেতুু দিয়ে বন্ধ হয়ে গিয়েছে লোক চলাচল। বর্তমানে ৫০ ফুট লম্বা সেতুটির অধিকাংশ জায়গাই ভেঙে খালে পড়ে গিয়েছে। এর ফলে এলাকার মানুষকে প্রায় আধ ঘণ্টা ঘুরে অন্য রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। শুধু তাই নয়, সেতু ভেঙে জলে পড়ায় খাল দিয়ে নৌকা চলাচলও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ফলে খাল দিয়ে নৌকায় জিনিসপত্র পরিবহণের ক্ষেত্রেও সমস্যায় ব্যবসায়ীরা।
এলাকায় সাঁকরাইল অভয়চরণ ও সাঁকরাইল কুসুমকুমারী, দু’টি হাইস্কুল রয়েছে। এগুলির প্রায় তিন হাজার ছাত্রছাত্রী ছাড়াও রামচন্দ্রপুর, বাসুদেবপুর, জোড়হাট শীতলাতলা-সহ বেশ কয়েকটি এলাকার মানুষ থানায়, হাট-বাজারে যাতায়াত করতে এই সেতু দিয়ে। কিন্তু তা ভেঙে যাওয়ায় কমপক্ষে আধ ঘণ্টার পথ ঘুরে যাতায়াত করতে হচ্ছে তাঁদের। স্কুলছাত্রী স্নেহা দাসের কথায়, “সেতু ভেঙে যাওয়ায় খুবই সমস্যায় পড়েছি আমরা। এখন স্কুলে যেতে হচ্ছে বাসরুট ধরে অনেকটা দূরে। আমরা চাই সেতু সারানোর ব্যবস্থা করুক প্রশাসন।” একই দাবি বাণীপুরের বাসিন্দা মিন্টু রায়ের। তিনি বলেন, “সেতুটি সারানোর দাবিতে বহু বার পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি, সেচ দফতরেরর কাছে গিয়েছি। কিন্তু লাভ হয়নি।”
বাণীপুর-১ পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান ত্রিপুরারী ঘোষ বলেন, “আমার সময় সেতুটি সারানোর ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছিলাম। সেচ দফতরের সঙ্গে যোগাযোগও করি। তারা রাজিও হয়। কিন্তু কেন হল না জানি না।” সেচ দফতর সূত্রের খবর, ওই সেতু সারানোর জন্য দু’ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। কয়েক বার টেন্ডারও ডাকা হয়েছে। কিন্তু কেউ কাজ করতে রাজি হয়নি। তবুও চেষ্টা হচ্ছে যাতে তাড়াতাড়ি সেতুটি সারানো যায়।