দলবিরোধী কাজের অভিযোগে তৃণমূলের শ্রীরামপুর-উত্তরপাড়া ব্লক সভাপতি সুব্রত রায়কে পদ থেকে সরানো হল। দলের নতুন ব্লক সভাপতি কে হবেন, তা এখনও স্থির হয়নি বলে তৃণমূল সূত্রে জানানো হয়েছে।
ওই ব্লকের রিষড়া পঞ্চায়েতে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর বিবাদ কিছু দিন আগে সামনে আসে। তৃণমূল নেতৃত্বের বক্তব্য, সুব্রতবাবুর নেতৃত্বেই ওই পঞ্চায়েতের দলীয় সদস্যদের একাংশ প্রধানের বিপক্ষে অনাস্থা এনেছিলেন। যা দলীয় অবস্থানের পরিপন্থী। শুক্রবার এক দলীয় বৈঠকে ওই সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরে জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি দিলীপ যাদব বলেন, “সুব্রতবাবুর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ ছিল। দলীয় স্তরে তদন্ত করে তার সত্যতা মেলে। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়ের নির্দেশে তাঁকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল।” নতুন ব্লক সভাপতির দায়িত্ব কে নেবেন, তা শীঘ্রই ঠিক করা হবে বলে তিনি জানান।
পঞ্চায়েতকে ঘিরে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ মানেননি স্ুব্রতবাবু। তাঁর দাবি, “আমি অনাস্থা আনতে বলেছি, এ কথা কি কেউ প্রমাণ করতে পারবেন? যাঁরা এ কথা বলছেন, ঠিক বলছেন না।” সুব্রতবাবুর দাবি, “দলের তরফে এই নিয়ে কোনও চিঠি পাইনি। একটি টিভি চ্যানেলে খবরটা দেখেছি। চিঠি পেলে বলতে পারব।”
গত বছর পঞ্চায়েত নির্বাচনে ওই পঞ্চায়েতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায় তৃণমূল। ২৮টি আসনের মধ্যে তারা দখল করে ১৮টি আসন। বামেরা ৮টি এবং কংগ্রেস ২টি। কিছু দিন পর থেকেই অবশ্য প্রধান সুমিতা বড়ুয়ার সঙ্গে দলেরই কিছু সদস্যের মতবিরোধ হয়। সম্প্রতি সুমিতাদেবীর বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতর অভিযোগ তুলে উপপ্রধান-সহ ১৪ জন তৃণমূল সদস্য বিডিওর কাছে অনাস্থা প্রস্তাব জমা দেন। দুই কংগ্রেস সদস্যও তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন।
বিষয়টি নিয়ে শাসক দলের অন্দরে জলঘোলা হয়। তৃণমূলের অন্দরের খবর, ওই ঘটনায় সুব্রতবাবুকে কাঠগড়ায় দাঁড় করান দলীয় নেতৃত্বের একাংশ। রিষড়া পঞ্চায়েতের ঘটনাকে সামনে রেখে অনাস্থা আনার এমন উদাহরণ যাতে আর তৈরি না হয়, সে জন্য বিষয়টিকে ধামাচাপা দিতে উঠে পড়ে লাগেন তৃণমূলের শীর্ষ কর্তারা। তার পরেই এই সিদ্ধান্ত।