ঘটনার পরে তিন দিন কেটে গেলেও দিয়াড়ায় তরুণীর উপরে অ্যাসিড হামলার ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করতে পারল না পুলিশ।
অ্যাসিডে মারাত্মক জখম ওই তরুণীর ডান চোখ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। জখম বাঁ চোখের দৃষ্টি ফিরবে কি না, সে ব্যাপারে তেমন কোনও আশ্বাসবাণী দিতে পারেননি বেলুড় শ্রমজীবী হাসপাতালের চিকিৎসকেরা। ওই হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন বছর কুড়ির ওই তরুণী। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মেয়েটির পরিবারের আর্থিক অবস্থার কথা জেনে প্রশাসনিক সাহায্যের ভরসায় না থেকে নিজেরাই চিকিৎসার ব্যয়ভার বহনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। হাসপাতালের তরফে গৌতম সরকার বলেন, “আমাদের হাসপাতালে ওই তরুণীর চিকিৎসার কোনও রকম খরচ নেওয়া হবে না। মানবিকতার খাতিরেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
হুগলির দিয়াড়া রামচন্দ্রপুরের পূর্ব পাড়ার বাসিন্দা ওই তরুণী সল্টলেকের সেক্টর ফাইভে একটি কল-সেন্টারে কাজ করেন। গত শনিবার রাত ৯টা ২০ মিনিট নাগাদ বালি থেকে আপ তারকেশ্বর লোকাল ধরে দিয়াড়া স্টেশনে নামেন। সেখান থেকে সাইকেলে বাড়ি ফিরছিলেন। অভিযোগ, বাড়ির কিছুটা আগে একটি ক্লাবের পিছনে একটি মোটরবাইক থেকে কে বা কারা তাঁর মুখে অ্যাসিড ছুড়ে পালায়। বাড়ির লোকের কাছে ওই তরুণী জানান, ঘটনাস্থল অন্ধকার থাকায় এবং তাঁর চোখে মোটরবাইকের জোরালো আলো পড়ায় তিনি কাউকে দেখতে পাননি। বাইক-আরোহী অ্যাসিড ছুড়েই চম্পট দেয়।
ঘটনার রাতেই তরুণীর মা সিঙ্গুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তবে, তাতে কারও নাম করা হয়নি। পুলিশ জানায়, ঘটনার কোনও প্রত্যক্ষদর্শী মেলেনি। তরুণীর মোবাইল ফোনের কল-লিস্ট ঘেঁটে ঘটনার সূত্রের খোঁজ চলছে।
তরুণীর বাবা কলকাতায় একটি আসবাবপত্রের দোকানে পালিশের কাজ করেন। সংসারে সাহায্যের জন্যই কল-সেন্টারে চাকরি নিয়েছিলেন হরিপালের একটি কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী ওই তরুণী। তাঁর বাবা মঙ্গলবার জেলার সমাজকল্যাণ দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে দেখা করে দোষীদের গ্রেফতার করে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থার দাবি জানান। পাশাপাশি, মেয়ের চিকিৎসার ব্যাপারে প্রশাসনিক সাহায্যের আবেদনও করেন। এ ব্যাপারে তাঁকে জেলাশাসক এবং মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে আবেদন করতে বলা হয় ওই দফতর থেকে।