ধড়-মুণ্ডু বিচ্ছিন্ন যুবকের দেহ উদ্ধার
নিজস্ব সংবাদদাতা • ভদ্রেশ্বর
তারক সরকার।
ধড়-মুণ্ডু বিচ্ছিন্ন অবস্থায় এক যুবকের মৃতদেহ মিলল মানকুণ্ডু স্টেশনের কাছে রেললাইনের ধারে। বৃহস্পতিবার সকালের ঘটনা। ভদ্রেশ্বরের আনন্দনগর পশ্চিমপাড়ার বাসিন্দা তারক সরকার (২৭) নামে ওই যুবককে বুধবার রাতে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে তাঁর তিন বন্ধু খুন করে দেহ রেললাইনে ফেলে দেয় বলে থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তবে, কেন খুন, তা নিয়ে অন্ধকারে পরিবার। রেল পুলিশ ও জেলা পুলিশ আলাদা ভাবে ঘটনার তদন্তে নেমেছে। দেহটি ময়না-তদন্তের জন্য শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তদন্তকারীরা জানান, খুনের কারণ স্পষ্ট নয়। তবে, মৃতের মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযুক্তেরা পলাতক। রেল পুলিশ সূত্রে খবর, তারক মোজায়েকের কাজ করতেন। বুধবার রাত ১০টা নাগাদ পিন্টু, কমল এবং সঞ্জীব নামে চুঁচুড়ার রবীন্দ্রনগরের বাসিন্দা তাঁর তিন বন্ধু তারককে ডেকে নিয়ে যায়। রাতে আর ফেরেননি তারক। তিনি মাঝেমধ্যেই বাড়ি ফিরতেন না। তাই পরিবারের কেউ রাতে আর খোঁজ করেননি। সকালে রেললাইনের ধারে তারকের মৃতদেহ মেলে। পরিবারের লোকজন গিয়ে দেহটি শনাক্ত করেন। তার পরেই খুনের অভিযোগ করেন পরিবারের লোকজন। তারকের মা ভগবতীদেবী বলেন, “ছেলের কোনও শত্রু ছিল না। তবে বুধবার পিন্টু, কমল ও সঞ্জীব ওকে ডেকে নিয়ে যায়। ওরাই খুন করেছে বলে মনে হয়।” তারকের দিদি রিনা কুণ্ডুও বলেন, “ভাইকে কেন খুন করা হল বুঝতে পারছি না। ও কোনও গোলমালে জড়াত না।”
শিক্ষককে কিল-ঘুঁষি, অভিযুক্ত ছাত্রকে টিসি
নিজস্ব সংবাদদাতা • পুড়শুড়া
ইউনিফর্ম পড়ে না-আসায় দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্রকে বকেছিলেন পুড়শুড়ার জঙ্গলপাড়া হাইস্কুলের এক শিক্ষক। এই ‘অপরাধে’ ওই শিক্ষককে জামার কলার ধরে মারধরের অভিযোগ উঠল ছাত্রটির বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবারের এই ঘটনায় স্কুলে উত্তেজনা ছড়ালে পুলিশ আসে। শেষ পর্যন্ত স্কুল কর্তৃপক্ষ ওই ছাত্রকে স্কুল থেকে ছাড়িয়ে দিয়েছেন (টিসি)। স্কুলের প্রধান শিক্ষক মলয় মান্না বলেন, “পরিচালন সমিতির সিদ্ধান্ত মতো ছাত্রটিকে সাজা দেওয়া হয়েছে।” স্কুল পরিচালন সমিতির সম্পাদক দিলীপ হাজারি জানান, ছাত্রের উচ্ছৃঙ্খলতা বরদাস্ত করার কোনও প্রশ্ন নেই। ছাত্রটির বাবা বলেন, “স্কুল কর্তৃপক্ষ যথাযথ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ছেলের কৃতকর্মের জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষ এবং কমলবাবুর কাছে ক্ষমা চাইছি।” স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ দ্বাদশ শ্রেণির বাংলার ক্লাস নিচ্ছিলেন শিক্ষক কমলকুমার পাল। ক্লাসে কয়েক জন ছাত্র কথাবার্তা বলছিল। তা থামাতে গিয়ে কমলবাবু দেখেন ওই ছাত্র ইউনিফর্মের পরিবর্তে ছবি আঁকা গেঞ্জি পরে এসেছে। কমলবাবু এ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। ছাত্রটির ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ দেখে কমলবাবু ভর্ৎসনা করেন। এর পরেই ছাত্রটি কমলবাবুকে কিল-ঘুষি মারতে থাকে বলে অভিযোগ। কমলবাবু মাটিতে পড়ে গেলে তাঁকে লাথিও মারা হয় বলে জানিয়েছে ওই ছাত্রের সহপাঠীরা। তবে, কমলবাবু ছাত্রকে ক্ষমা করে দিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমার ধারনা ছাত্রটি নিশ্চয়ই অনুতপ্ত। তাকে শোধরানোর সুযোগ দেওয়ার জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করব।”
গুড়িয়া হত্যা-মামলা
আঘাতেই মৃত্যু গুড়িয়ার, চিকিৎসক
নিজস্ব সংবাদদাতা • চুঁচুড়া
আদালতে দাঁড়িয়ে ময়না-তদন্তকারী চিকিৎসক জানালেন, আঘাতের ফলেই গুড়াপের দুলাল স্মৃতি সংসদ হোমের আবাসিক গুড়িয়ার মৃত্যু হয়েছিল। কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালের প্রাক্তন সুপারিন্টেন্ডেন্ট ও নীলরতন মেডিক্যাল হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যাপক, মেডিসিন বিভাগের প্রধান প্রভাসকুমার চক্রবর্তী এ দিন চুঁচুড়া আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক (ফাস্ট কোর্ট) অরূপ বসুর এজলাসে সাক্ষ্যে বলেন, ‘‘গুড়িয়ার মৃত্যুর কারণ ছিল আঘাত। মৃতদেহে মাছির লার্ভা পাওয়া গিয়েছিল। খোলা জায়গায় মৃতদেহ ৮-৯ ঘণ্টা পড়ে থাকলে এটা হয়।’’ মামলার সরকারি আইনজীবী বিদ্যুৎ রায়চৌধুরী চিকিৎসা বিজ্ঞানের একটি বইয়ের দৃষ্টান্ত তুলে চিকিৎসকের কাছে জানতে চান, মাটির নীচে দেহ পোঁতার কয়েক দিন পরে তা তুললে যে অবস্থা হয়, গুড়িয়ার ক্ষেত্রেও সে রকম হয়েছিল কি না। চিকিৎসক জানান সেটাই হয়েছিল। এ দিন সাক্ষ্য দেন ধনেখালির তৎকালীন ব্লক ওয়েলফেয়ার আধিকারিক মথুরনাথ ঘোষও। তিনি বলেন, ‘‘বিভিন্ন সময়ে আমরা ওই হোমে পরিদর্শনে যেতাম। ২০১২ সালের ১১ জুলাই তৎকালীন বিডিও আমাকে জানান, এক আবাসিক মারা গিয়েছেন। তাঁকে পুঁতে দেওয়া হয়েছে। এটা শুনে ওই সন্ধ্যায় আমি হোমে যাই।’’ মথুরনাথবাবু আরও জানান যে, তিনি শুনেছেন গুড়িয়াকে মেরে ফেলা হয়েছে। হোমের সম্পাদক উদয়চাঁদ কুমার তার কিছু কাছের লোকের সাহায্যে গুড়িয়ার দেহ পুঁতে দেয়।
সেপটিকট্যাঙ্কে নেমে মৃত্যু
নিজস্ব সংবাদদাতা • পুড়শুড়া
সেপটিকট্যাঙ্কে কাজ করতে নেমে মৃত্যু হল এক শ্রমিকের। অসুস্থ হলেন দু’জন। বৃহস্পতিবার সকালে দুর্ঘটনাটি ঘটে পুড়শুড়ার সুঁদরুশ গ্রামে। মৃতের নাম টুবাই দাস (২২)। বাড়ি মুর্শিদাবাদের মিলার গ্রামে। পুলিশের অনুমান, সেপটিকট্যাঙ্কে বিষাক্ত গ্যাসে বা অক্সিজেনের অভাবে মৃত্যু হয় তাঁর। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, দিনকয়েক ওই গ্রামের প্রশান্ত শাসমলের বাড়ির সেপটিক ট্যাঙ্ক তৈরি করেছিলেন টুবাইরা। ঢালাইয়ের কাঠ-বাঁশ বের করতে এ দিন সেপটিক ট্যাঙ্কে নামেন টুবাই। নামার সঙ্গে সঙ্গে তাঁর হাঁসফাঁস অবস্থা দেখে অনিল মণ্ডল নামে এক শ্রমিক নামেন সেপটিক ট্যাঙ্কে। পরে নামেন আরও এক জন। দু’জনে টুবাইয়ের অচেতন দেহটি বের করে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তিন জনকে স্থানীয় প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গেলে টুবাইকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
হিন্দমোটর খোলার দাবি, গণ-সমাবেশে রেজ্জাক
অবিলম্বে উত্তরপাড়ার হিন্দুস্তান মোটরস কারখানা খোলার দাবিতে গণ-সমাবেশ করল বিভিন্ন গণ-সংগঠন। বৃহস্পতিবার হিন্দমোটর স্টেশন সংলগ্ন কারখানার গেটের সামনে ওই কর্মসূচি পালিত হয় শ্রমিক সংগঠন এসএসকেইউ-র ডাকে। উপস্থিত ছিলেন গণমঞ্চের নেতা রেজ্জাক মোল্লা এবং প্রসেনজিৎ বসু। এ ছাড়াও ছিলেন সিটু, আইএফটিইউ, ইউটিইউসি, ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘ, জেশপ রক্ষা কমিটি, খেতমজুর সমিতি এমটিইউআই-সহ বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা। হিন্দমোটরের অনেক শ্রমিকও সামিল হন। সকলেই কারখানা খুলতে সরকারের সক্রিয় হস্তক্ষেপ দাবি করেন। মুখ্যমন্ত্রীর নাম না করে রেজ্জাক বলেন, “উনি কারখানা নিয়ে ভাবছেন না। ভাবছেন অনুব্রত, জঙ্গল, পাহাড় এই সব নিয়ে।” এসএসকেইউ নেতা আভাস মুন্সি জানান, সম্মেলনে স্থির হয়েছে রমজান মাস কাটলে নবান্ন অভিযান অথবা কলকাতার রাজপথে আন্দোলনে নামা হবে।
অতিরিক্ত বিদ্যালয় পরিদর্শক ঘেরাও
—নিজস্ব চিত্র।
প্রভিডেন্ট ফান্ড দ্রুত আপডেট করা, স্বল্প মেয়াদী খালি পদ পূরণ, মাতৃত্বকালীন ছুটি-সহ ছ’দফা দাবি পূরণে উলুবেড়িয়ায় জেলা অতিরিক্ত বিদ্যালয় পরিদর্শক (এডিআই) মাধুরী মান্না চৌধুরীকে পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল সেকেন্ডারি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন ঘেরাও করল। বৃহস্পতিবার এডিআই কার্যালয়ে প্রায় আড়াই ঘন্টা তাঁকে ঘেরাও করে রাখা হয়। এ দিন প্রায় একশো শিক্ষক এডিআইয়ের কাছে স্মারকলিপি দিতে আসেন। তাতে অনিয়মিত অফিস আসার প্রসঙ্গ থেকে শুরু করে শর্ট টাম ভ্যাকেন্সি, কাজের পরিবেশের উন্নতি সবই ছিল। এ বিষয়ে মাধুরীদেবী বলেন, “আমাদের কর্মী কম। তার উপর অনেক স্কুল। তাও আমাদের সাধ্যমত আমরা চেষ্টা করে চলেছি।” শেষ পর্যন্ত এডিআই আশ্বাস দিলে শিক্ষকরা বিক্ষোভ তুলে নেন।
ছাত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগ, ধৃত তিন
একাদশ শ্রেণির এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগে তার স্কুলেরই দুই সহপাঠী-সহ তিন ছাত্রকে গ্রেফতার করল পুলিশ। মগরার চন্দ্রহাটি এলাকার একটি স্কুলের ওই ছাত্রী গত ২ জুলাই স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে ফিনাইল খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাকে কলকাতার একটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। বুধবার ছাত্রীটি বাড়ি ফিরে পরিবারের লোকজনের কাছে ওই তিন ছাত্রের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ তুলে রাগে-অপমানে সে ফিনাইল খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে বলে জানায়। পরিবারের লোকজন পুলিশের কাছে এই অভিযোগই দায়ের করেন। ওই দুপুরেই পুলিশ তিন ছাত্রকে ধরে। পুলিশ জানায়, ধৃতদের মধ্যে এক জনের বয়স ১৯ বছর। তিনি দ্বাদশ শ্রেণিতে পনেন। বাকি দু’জন ১৬ বছরের। তারা একাদশ শ্রেণির। সকলেই চন্দ্রহাটি এলাকার বাসিন্দা। ১৬ বছরের দুই ছাত্রকে বৃহস্পতিবার উত্তরপাড়ার জুভেনাইল আদালতে হাজির করানো হয়। এক ছাত্রকে হাজির করানো হয় চুঁচুড়া আদালতে।
কৃষি সমবায়ে জিতল তৃণমূল
হুগলির জাঙ্গিপাড়া ব্লকের তিনটি কৃষি সমবায়ের নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতল তৃণমূল। প্রশাসন সূত্রের খবর, ওই তিনটির মধ্যে পশপুর শীতলাময়ী কৃষি সমবায় সমিতির ক্ষমতা দীর্ঘদিন ধরে বামেদের হাতে ছিল। তিন দশক পরে এ বার সেই সমবায় বামেদের হাতছাড়া হল। রশিদপুর কৃষি সমবায় সমিতি এবং রঞ্জপুর কৃষি সমবায় সমিতির ক্ষমতা অবশ্য তৃণমূলের হাতেই ছিল। তিন জায়গাতেই ভোট গ্রহণের তারিখ ধার্য হয় ৮ অগস্ট। বৃহস্পতিবার ছিল মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন। তৃণমূল ছাড়া অন্য কোনও দলই মনোনয়ন জমা দিতে পারেনি। তিনটি সমবায়েই ৯টি করে আসন রয়েছে।
প্রতিবাদ-মিছিল
দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি ও রেল বাজেটে পশ্চিমবঙ্গকে ‘বঞ্চনা’র প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার দেবানন্দপুরে শরৎচন্দ্রের বাড়ি থেকে ব্যান্ডেল মোড় পর্যন্ত মিছিল করল তৃণমূল। মিছিলে সামিল হন কয়েকশো কর্মী-সমর্থক। মিছিলে নেতৃত্ব দেন চুঁচুড়ার বিধায়ক তপন মজুমদার।
মুক্তির আনন্দে। আরামবাগে মোহন দাসের তোলা ছবি।
রমজানে ফলের বাজার। চুঁচুড়ায় তোলা নিজস্ব চিত্র।