গ্রেফতার ৩

জগাছার নিখোঁজ প্রৌঢ়ের দেহ উদ্ধার মুণ্ডেশ্বরীর বাঁধে

স্ত্রীর সঙ্গে মোবাইলে শেষ কথা হয়েছিল ২৯ জুলাই বেলা ২ টোর সময়। স্ত্রীকে জানিয়েছিলেন, খুব ঝামেলার মধ্যে রয়েছেন। পরে বাড়ি ফিরবেন। কিন্তু আর বাড়ি ফেরা হয়নি হাওড়ার জগাছা থানার জিআইপি রেল কোয়ার্টারের বাসিন্দা দক্ষিণপূর্ব রেলের কর্মী দিলীপ রায়ের (৫০)।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০১৪ ০০:১৯
Share:

স্ত্রীর সঙ্গে মোবাইলে শেষ কথা হয়েছিল ২৯ জুলাই বেলা ২ টোর সময়। স্ত্রীকে জানিয়েছিলেন, খুব ঝামেলার মধ্যে রয়েছেন। পরে বাড়ি ফিরবেন। কিন্তু আর বাড়ি ফেরা হয়নি হাওড়ার জগাছা থানার জিআইপি রেল কোয়ার্টারের বাসিন্দা দক্ষিণপূর্ব রেলের কর্মী দিলীপ রায়ের (৫০)। বৃহস্পতিবার আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালের মর্গে পড়ে থাকা অজ্ঞাত পরিচয় একটি মৃতদেহের পরিচয় খুঁজতে গিয়ে জানা গিয়েছে দেহটি নিখোঁজ দিলীপবাবুরই। ন’দিন আগে ৩০ জুলাই হুগলির খালাকুলের পলাইপাই এলাকায় মুণ্ডেশ্বরী নদীর বাঁধ থেকে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তারপর থেকে তা আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালের মর্গে পড়েছিল।

Advertisement

কোনও খোঁজ না পেয়ে গত ৪ অগস্ট দিলীপবাবুর বাড়ির লোকজন থানায় তাঁকে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ দায়ের করেন। তদন্তে নামে পুলিশ। বৃহস্পতিবার দিলীপবাবুর দেহ শনাক্ত হওয়ার পরে অভিযোগের ভিত্তিতে দিলীপবাবুর ঘনিষ্ঠ দুই যুবক সহ ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২৯ জুলাই বাঁকড়ায় যাবেন বলে বাড়ি থেকে বেলা ১০টা নাগাদ বেরিয়ে যান দিলীপবাবু। তারপর থেকে তাঁর আর খোঁজ মিলছিল না। ৩০ জুলাই খানাকুলের পলাশপাই অঞ্চলের মুচিঘাটা এলাকার মুণ্ডেশ্বরী নদীর বাঁধের ধার থেকে দিলীপবাবুর দেহ উদ্ধার হয়। দিলীপবাবুকে খুন করা হয়েছে বলে প্রথম থেকেই বাড়ির লোকজনের সন্দেহ ছিল। তাই থানায় খুনের মামলা দায়ের করে পরিবার।

Advertisement

তদন্তে নেমে পুলিশ বাঁকড়া থেকে দিলীপবাবুর পরিচিত দুই যুবক ক্যাটারিং ব্যবসায়ী বাপন দে ও সন্তু কাঁড়ারকে গ্রেফতার করে। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জগৎবল্লভপুর থেকে গ্রেফতার করা হয় রাজু বারিক নামে আর এক যুবককে। ধৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর পুলিশের দাবি, ধৃতেরা খুনের কথা স্বীকার করেছে। বৃহস্পতিবার ধৃতদের হাওড়া আদালতে তোলা হয়। এ দিন দিলীপবাবুর স্ত্রী কল্যাণীদেবী খানাকুল থানায় গিয়ে স্বামীর মৃতদেহ শনাক্ত করেন।

কিন্তু কেন এই খুন?

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানিয়েছে, রেলকর্মী দিলীপবাবু দীর্ঘদিন ধরেই জগাছার রেল কোয়ার্টারের বাসিন্দা। তাঁর স্ত্রী এবং দুই পুত্র রয়েছে। রেলে চাকরির পাশাপাশি তিনি সুদের ব্যবসা করতেন। কল্যাণীদেবী জানান, কয়েক বছর আগে তাঁর স্বামী বাঁকড়ার দুই পরিচিত ক্যাটারিং ব্যবসায়ী বাপন দে ও সন্তু কাঁড়ারকে চড়া সুদে ৩ লক্ষ টাকা ধার দিয়েছিলেন। কিন্তু টাকা ফেরত না পাওয়ায় দিলীপবাবুর সঙ্গে তাদের তিক্ততা চরমে ওঠে। কল্যাণীদেবী বলেন, “২৯ জুলাই পাওনা টাকা আদায়ের জন্য স্বামী বাঁকড়া গিয়েছিলেন। তারপর আর বাড়ি ফেরেননি। টাকা না দিয়ে ওরাই আমার স্বামীকে খুন করেছে।”

পুলিশের দাবি, জেরায় বাপন ও সন্তু স্বীকার করেছে ঘটনার দিন টাকা ফেরত দেওয়ার টোপ দিয়ে তারা একটি মোটরবাইকে করে দিলীপবাবুকে খানাকুলে নিয়ে যায়। সেখানে তাদের সঙ্গে যোগ দেয় রাজু। এরপর চারজনে মিলে মুণ্ডেশ্বরী নদীর বাঁধের পাশে বসে মদ খায়। একসময় দিলীপবাবুকে শ্বাসরোধ করে খুন করে বাঁধের ধারে ফেলে রেখে বাঁকড়ায় ফিরে আসে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement