মানসিক ও শারীরিক অত্যাচার চালিয়ে ছেলেকে স্কুল থেকে তাড়িয়ে দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ, এমনই অভিযোগ তুলে সুবিচার চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন মা। আদালত স্কুলের অধ্যক্ষ, ছেলেটির ক্লাস টিচার-সহ ৩ জনকে নির্দিষ্ট ধারায় অভিযুক্ত করেছেন। সমন জারি করে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তাঁদের।
অর্কদ্যুতি দত্ত নামে ওই কিশোর ব্যান্ডেলের একটি নামি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়া ছিল। তার বাবা বিএসএফের কর্মী। কর্মসূত্রে কাশ্মীরে রয়েছেন। মা কৃষ্ণাদেবীর সঙ্গে ভদ্রেশ্বরে থাকত অর্কদ্যুতি। সম্প্রতি কৃষ্ণাদেবী চুঁচুড়া আদালতে স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা করেন। তিনি জানান, অর্কদ্যুতি প্রথম শ্রেণিতে ওই স্কুলে ভর্তি হয়।
তাঁর অভিযোগ, চলতি বছরের মে মাসের প্রথম সপ্তাহে ছেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হয় যে, সে ফেসবুকে চ্যাটিং করেছে। তাতে স্কুলের এক পদাধিকারীর বিরুদ্ধে কটূ মন্তব্য করা হয়েছে। পরের দিনই স্কুলে ডেকে কৃষ্ণাদেবীর হাতে জোর করে ছেলের টিসি (ট্রান্সফার সার্টিফিকেট) ধরিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। কৃষ্ণাদেবী বলেন, “ছেলে ফেসবুক করে না। তার উপর যে সময়ের কথা বলা হচ্ছিল, তখন ও অসুস্থ হয়ে ঘরে শুয়েছিল। ওটা অন্য কেউ করেছিল। স্কুল কর্তৃপক্ষকে বার বার জানিয়েও ফল হয়নি। নিজেদের সিদ্ধান্তে অটল থাকেন ওঁরা। কোনও তদন্ত পর্যন্ত করলেন না।” তাঁর আরও অভিযোগ, এর আগেও একাধিকবার ছেলের উপর মানসিক ও শারীরিক চালানো হয়।
কোনও উপায় না দেখে ছেলেকে বিশাখাপত্তনমের একটি স্কুলে ভর্তি করান কৃষ্ণাদেবী। তার পরে চুঁচুড়া আদালতে ব্যাণ্ডেলের স্কুলটির অধ্যক্ষ, ক্লাস টিচার এবং শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির এক সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। দিন কয়েক আগে আদালতের অতিরিক্ত বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্য জানান, প্রাথমিক ভাবে ওই ৩ জনের বিরুদ্ধেই অভিযোগের সারবত্তা মিলেছে। সরকারি আইনজীবী বিদ্যুত্ রায়চৌধুরী বলেন, “নির্দিষ্ট ধারায় ওই তিন জনকে অভিযুক্ত করে আদালত সমন জারি করেছে। আগামী ২১ অক্টোবর তিন জনকেই আদালতে হাজির হতে বলেছেন বিচারক।” স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।