শিয়াখালা বেণিমাধব উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়
নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হয় অভিভাবকদের সঙ্গে
• ছাত্রছাত্রী: ১৫৫০। • শিক্ষক-শিক্ষিকা: ২৬। জন। পার্শ্বশিক্ষিকা: ৪ জন।
• করণিক: ১ জন। • ২০১৪ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ছিল ১০৯। উত্তীর্ণ —১০২।
প্রধান শিক্ষিকা
এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি শিয়াখালা-শ্রীপতিপুর, এই বিস্তীর্ণ এলাকার একমাত্র মেয়েদের বিদ্যালয়। ১৯৫৪ সালের ৮ জানুয়ারি এই বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। গত বছর উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে উন্নীত হয়েছে। দেড় হাজারেরও বেশি মেয়ে এখানে পড়ে। এখানকার প্রত্যেক শিক্ষিকাই অত্যন্ত দায়িত্ববান। তাঁদের তত্বাবধানে এবং শিক্ষাকর্মীদের সযত্ন সহযোগিতায় ছাত্রীরা সাফল্যের সঙ্গে শিক্ষাক্ষেত্রে এগিয়ে চলেছে। বহু ছাত্রী বিশেষ কৃতিত্বের পরিচয় দিয়ে বিদেশেও গিয়েছে। মেয়েদের পড়াশোনার ব্যাপারে অভিভাবকদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখার চেষ্টা করা হয় বিদ্যালয়ের তরফে।
প্রথাগত শিক্ষা ছাড়াও পাঠ্যক্রমের বাইরে বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিজেদের কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছে আমাদের স্কুলের মেয়েরা। খেলাধুলো, যোগব্যায়াম, গান, বিজ্ঞান সেমিনার-সহ নানা বিষয়ে তারা রাজ্যস্তর পর্যন্ত পৌছেছে। অতীতে এখানকার অনেক ছাত্রী খেলাধুলোয় পারদর্শীতার পরিচয় দিলেও আমাদের স্কুলে খেলার মাঠের অভাব রয়েছে। বড় মাঠ না থাকায় ছাত্রীরা অনুশীলন করতে অসুবিধায় পড়ে। এ ছাড়াও, ছাত্রীসংখ্যার অনুপাতে পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষ নেই। শিক্ষিকার সংখ্যাও প্রয়োজনের তুলনায় কম। মাঠ বা সেমিনার হলের অভাবে বিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা যায় না। মেয়েদের সাইকেল রাখার জন্য কোনও শেড নেই এখনও। আমাদের এই প্রতিষ্ঠান উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের স্বীকৃতি পেয়েছে ঠিকই, কিন্তু বিষয় ভিত্তিক প্রয়োজনীয় শিক্ষিকা নিযুক্ত হয়নি। তবে, উচ্চ মাধ্যমিক বিভাগ চালু হওয়ায় ৫০ হাজার টাকা অনুমোদিত হয়েছে। এই বিভাগের গৃহ নির্মানের জন্য ৯ লক্ষ ৬৫ হাজার টাকা অনুমোদিত হয়েছে। কিন্তু পরিকাঠামোর অভাবে গ্রন্থাগার চালু করা যাচ্ছে না। তবে নানা ধরণের সমস্যা সত্ত্বেও সুন্দর ভাবে বিদ্যালয়ের কাজকর্ম পরিচালিত হচ্ছে। এ জন্য শিক্ষিকা-শিক্ষাকর্মীদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি এলাকাবাসীর ভূমিকাও অনস্বীকার্য। স্থানীয় মানুষের সঙ্গে সরকারী সরকারী সহায়তায় বিদ্যালয়ের সর্বাঙ্গীন উন্নতির ধারা আরও গতি পাবে, এই আশা রাখি।
প্রাক্তনী
দেবস্মিতা পুরকাইত।
মানুষের জীবন সঠিক ভাবে গড়ে ওঠে ছাত্রাবস্থা থেকেই। ফলে, এই সময় ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পারস্পরিক সম্পর্ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই বিদ্যালয়ের শিক্ষিকারা ক্লাসে এসে শুধুমাত্র মেয়েদের বই পড়িয়েই নিজেদের ভূমিকা সীমাবদ্ধ রাখেন না। নিজের অভিজ্ঞতায় দেখেছি, তাঁরা মেয়েদের শিক্ষাগুরুর পাশাপাশি বন্ধু এবং আদর্শ পথপ্রদর্শক হয়ে ওঠেন। বর্তমানে আমি শ্রীরামপুরে টেক্সটাইল টেকনোলজি কলেজে কম্পিউটার সায়েন্সের চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী। প্রথাগত শিক্ষার পাশাপাশি নিজের আচরণ কেমন হওয়া উচিৎ, তা-ও স্কুলের শিক্ষিকাদের কাছ থেকে শিখেছি। অন্য মেয়েরাও শিক্ষিকাদের অনুপ্রেরণায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে সফল হচ্ছে। দিনের পর দিন ধরেই পড়াশোনার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক বা ক্রীড়াক্ষেত্রে সাফল্যের পরিচয় দিয়ে মেয়েরা স্কুলের নাম উজ্জ্বল করছে। এতে এলাকারও সুনাম বাড়ে। আমার কাছে এই প্রতিষ্ঠান শুধু মাত্র শিক্ষাকেন্দ্র নয়, একটি মেয়ে থেকে আদর্শ নারী হয়ে ওঠার পীঠস্থান।