তেলঙ্গানা কাণ্ডের প্রতিবাদে চুঁচুড়ার ঘড়ির মোড়ে ধর্নায় বহ্নিশিখা রায়
তেলঙ্গানায় তরুণী পশুচিকিৎসককে ধর্ষণ-খুনের প্রতিবাদে ঝড় উঠেছে গোটা দেশে। ধর্ষকদের উপযুক্ত শাস্তির দাবি তুলে এ রাজ্যেও পথে নামছেন মহিলারা। চুঁচুড়ায় পুলিশ-প্রশাসনের সদর দফতরের কাছেই তিন দিন ধরে ধর্নায় বসছেন এক তরুণী। অনেকেই তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছেন।
বহ্নিশিখা রায় নামে বছর চব্বিশের ওই তরুণী বলেন, ‘‘আগে কোনও দিন এ ভাবে পথে নামিনি। ভাইরাল হওয়ার জন্য এখানে বসিনি। আমি চাই ওই নৃশংসতার বিরুদ্ধে সবাই সরব হোন। কেন মেয়েদের রাস্তায় বেরোতে ভয় পেতে হবে? কেন তাঁদের নিরাপত্তা থাকবে না? আইনে ধর্ষকদের এমন শাস্তি দেওয়া হোক, যাতে কেউ মেয়েদের দিকে খারাপ দৃষ্টিতে তাকানোর কথা না ভাবে।’’
বহ্নিশিখা থাকেন বাঁশবেড়িয়ার খামারপাড়া কুণ্ডুগলিতে। চলতি বছরেই কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমসিএ পাশ করেছেন। তার পরে কিছু দিন বিহারের একটি ইংরেজি মাধ্যম বিদ্যালয়ে কম্পিউটার শিক্ষিকা হিসেবে কাজ করেছেন। সম্প্রতি সেখান থেকে বাড়িতে ফেরেন। তরুণী জানান, শনিবার ঘুম থেকে উঠে সমাজ-মাধ্যমে তেলঙ্গানার ওই ঘটনার কথা জানতে পারেন। ঠিক করে ফেলেন, রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করবেন। বাবার থেকে কুড়ি টাকা নিয়ে আর্ট পেপার কিনে পোস্টার লেখেন।
ধর্ষণ রোধের দাবিতে লেখা সেই পোস্টার নিয়ে ওই বিকেলেই তিনি চুঁচুড়ার ঘড়ির মোড়ে ধর্নায় বসেন। রবি এবং সোমবারেও ধর্না দিতে ফিরে আসেন একই জায়গায়। তিনি জানান, রবিবার বাঁশবেড়িয়ারই বাসিন্দা পৌলমী দাস এবং চুঁচুড়ার বাসিন্দা মধুমিতা সাউ নামে আরও দুই তরুণী তাঁর সঙ্গে ধর্নায় শামিল হন। সোমবার তাঁর সঙ্গে ছিলেন চুঁচুড়ার কনকশালীর বাসিন্দা, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী অরিজিৎ মণ্ডল। ওই চত্বরেই এক দল কলেজ-পড়ুয়া এ দিন মিছিল করেন তেলঙ্গানার ঘটনার প্রতিবাদে। তাতেও শামিল হন বহ্নিশিখা।
বহ্নিশিখার কথায়, ‘‘আগে কোনও দিন পথে নামিনি। তাও আবার একা। প্রথম দিন অনেককেই বলেছিলাম। পিছন থেকে সমর্থন করলেও প্রকাশ্যে কেউ বসতে চায়নি। এখন দু’-এক জন করে আসছেন। বহু মানুষ সমর্থন করছেন।’’ মেয়েটির প্রতিবাদ ভাইরাল হয়েছে সমাজমাধ্যমে। অরিজিতের কথায়, ‘‘বহ্নিশিখাদি আমার পরিচিত নন। কিন্তু ওঁর একক লড়াইয়ের কথা জেনে পাশে দাঁড়িয়েছি।’’
চোয়াল শক্ত করে বহ্নিশিখা জানিয়ে দেন, তাঁর এই প্রতিবাদ চলবে। প্রয়োজনে একাই।