অপহরণে জড়িত সন্দেহে সালকিয়ার এক যুবককে ডেকে এনেছিল বালি থানার পুলিশ। রাতে ব্যক্তিগত জামিনে মুক্তি মিললেও পরিবারের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য তাঁকে থানাতেই বসিয়ে রাখা হয়। এর মধ্যেই থানার শৌচাগারে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন ওই যুবক। পুলিশ ভর্তি করে বেলুড় স্টেট জেনারেল হাসপাতালে। পরে বাড়ির লোকেরা কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেন। মঙ্গলবার সকালে সেখানেই মৃত্যু হয় বিশাল উপাধ্যায় (৩৮) নামে ওই যুবকের।
চিকিৎসকেরা জানান, প্রাথমিক ভাবে মৃত্যুর কারণ বিষক্রিয়া। পুলিশের অনুমান, শৌচাগারে বিশাল অ্যাসিড জাতীয় কিছু খেয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশের হেফাজতে থাকা সত্ত্বেও কী ভাবে তা ঘটল, প্রশ্ন তুলেছেন পরিজনেরা। বিশালের ভাই বিবেক উপাধ্যায় বলেন, “দাদাকে মানসিক অত্যাচার করেছে পুলিশ। তাই ও অ্যাসিড খেয়েছে। পুলিশকর্তাদের কাছে বালি থানার বিরুদ্ধে অভিযোগ করব।” যদিও রাত পর্যন্ত পুলিশের কাছে কোনও লিখিত অভিযোগ করেননি তাঁরা।
হাওড়া সিটি পুলিশের এক কর্তার কথায়, “থানার ভিতরেই বেঞ্চে ওই যুবককে বসিয়ে রাখা হয়েছিল। শৌচাগারে যেতে চাওয়ায় পুলিশকর্মীদের শৌচাগারে যেতে দেওয়া হয়। সেখানে গিয়ে হয়তো অ্যাসিড বা অন্য কিছু খেয়েছিলেন।” কিন্তু থানার শৌচাগারে আগে থেকে অ্যাসিড রাখা ছিল কি না এবং পুলিশকর্মীদের ভূমিকাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান পুলিশকর্তারা।
পুলিশ সূত্রের খবর, গত ৮ জুলাই বালির বাসিন্দা অলোকা সেনগুপ্ত থানায় অভিযোগ করেন তাঁর স্বামী গোপী সেনগুপ্তকে অপহরণ করা হয়েছে। সেলিম খান নামে এক ব্যক্তি ফোন করে দুই লক্ষ টাকা মুক্তিপণও চেয়েছে। এই ঘটনায় বিশাল ও অন্য আরও এক যুবক জড়িত থাকতে পারে বলে সন্দেহ প্রকাশ করেন অলোকাদেবী। তাই ৯ জুলাই বিশালকে বালি থানায় ডেকে নিয়ে আসেন তদন্তকারীরা।
পুলিশ জানায়, ওই রাতেই চাকদহে গোপীবাবুর খোঁজে যায় পুলিশ। তাঁকে উদ্ধারের পরে পুলিশ জানতে পারে বিশাল অপহরণে যুক্ত নয়। তখন ব্যক্তিগত জামিনে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু পরিজনদের হাতে তুলে দিতে থানাতেই বসিয়ে রাখা হয়েছিল। তখনই ডিউটি অফিসারের ঘরের শৌচাগারে যেতে দেওয়া হয় তাঁকে। সেখান থেকে বেরিয়েই অসুস্থ বোধ করেন বিশাল।