নৈহাটির বিস্ফোরণ।—নিজস্ব চিত্র।
আমি আর স্ত্রী জয়ন্তী চুঁচুড়ার জোড়াঘাটে একটি আবাসনের চারতলার ফ্ল্যাটে থাকি। বৃহস্পতিবার দুপুর তখন দু’টোর আশপাশে। বাইরে টুপটাপ বৃষ্টি পড়ছিল। আকাশ মেঘলা ছিল। ডাইনিংয়ে বসে স্ত্রী-র সঙ্গে কথা বলছিলাম। হঠাৎ বিকট আওয়াজ। মনে হল চারদিক কেঁপে উঠল। তার পরেই ফ্ল্যাটের বারান্দায় যাওয়ার জন্য যে স্লাইডিং দরজা রয়েছে, তার কাচ ভেঙে আমার পায়ের উপরে পড়ল। বাঁ পায়ের গোড়ালির নীচের অংশ অনেকটা কেটে গেল। রক্তে ঘর ভেসে যাচ্ছিল।
আচমকা ওই ঘটনায় কেমন একটা হতভম্ব হয়ে গিয়েছিলাম। স্ত্রী ভীষণ ভয় পেয়ে গিয়েছিল। ও ছুটে গিয়ে পাশের ফ্ল্যাটের লোকজনকে ডেকে নিয়ে আসে। সবাই মিলে ধরাধরি করে আমাকে চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে নিয়ে আসেন। এখনও হাসপাতালেই রয়েছি। সবাই বলছেন, আমাকে নীচে নামানোর সময় লিফ্টও নাকি রক্তে ভেসে যাচ্ছিল! পরে শুনি, আমাদের আশপাশের আবাসনগুলির বিভিন্ন ফ্ল্যাটেও জানলার কাচ ভেঙে গিয়েছে ওই কম্পনে।
কী আশ্চর্য ব্যাপার বলুন তো! বাজির মশলা এবং রায়াসনিক নিষ্ক্রিয় করার আগে সব দিক ভেবেচিন্তে দেখা হয়েছিল কিনা, সেটাই প্রশ্ন। আমি সার তৈরির একটি সরকারি সংস্থায় চাকরি করতাম। অবসর নিয়েছি। এখন আমার সত্তর বছর বয়স। আমাকে হাসপাতালে ভর্তি থাকতে হচ্ছে, অথচ এতে আমার কোনও দোষ নেই। আমার বয়সী বা আমার থেকেও বয়সে বড় অনেক মানুষ রয়েছেন। তাঁদের অনেকেই হয়তো অসুস্থ। যা ঘটল, তাতে অনেকের অনেক সমস্যা হতে পারত। হয়তো বা হয়েছে। আজ বিকেলে আমাদের এলাকার বিধায়ক অসিত মজুমদার এবং পুরপ্রধান গৌরীকান্ত মুখোপাধ্যায় হাসপাতালে এসেছিলেন আমাকে দেখতে। ওঁদের কাছেও সব বললাম। আমার একটাই অনুরোধ, ভবিষ্যতে যেন এমন কাণ্ড না ঘটে। সব দিক বিবেচনা করে তবে যেন পদক্ষেপ করা হয়।