ফাইল চিত্র।
কোনওটির ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল পাঁচ বছর আগে। কোনওটির ক্ষেত্রে বছর দুয়েক। কিন্তু গ্রামীণ হাওড়ায় কোনও থানা পুনর্গঠনের কাজই এখনও হয়ে উঠল না। এ নিয়ে পুলিশের নিচু মহলের একাংশ ক্ষুব্ধ। কারণ, অনেক ক্ষেত্রে দূরত্বের কারণে বা পরিকাঠামোগত সমস্যায় কোনও ঘটনায় ঘটনাস্থলে যেতে-আসতে তাঁদের দুর্ভোগ হচ্ছে। গ্রামীণ জেলা পুলিশের কর্তারা জানিয়েছেন, বিষয়টি দেখছেন রাজ্য পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। প্রক্রিয়া চলছে বলে তাঁরা শুনেছেন।
বছর পাঁচেক আগে উদয়নারায়ণপুরের পেঁড়ো ফাঁড়িটিকে থানায় পরিণত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। উদয়নারায়ণপুর এবং আমতা থানা এলাকার কয়েকটি পঞ্চায়েতকে নিয়ে পেঁড়ো থানা করার সিদ্ধান্ত হয়। পেঁড়ো এবং সংলগ্ন এলাকাটি উদয়নারায়ণপুর এবং আমতা থানা থেকে অনেকটা দূরে। ফলে, এই সব এলাকায় কোনও অপরাধ বা গোলমাল হলে দু’টি থানার পুলিশকর্মীদের পক্ষেই সময়ে পৌঁছতে বেশ সমস্যা হয়। সেই কারণেই নতুন থানা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর জন্য জমিও বাছা হয়। কিন্তু এখনও থানা চালু হয়নি।
বছর দুয়েক আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শরৎসদনে জেলার প্রশাসনিক বৈঠকে এলে আরও কয়েকটি নতুন থানা গড়ার প্রস্তাব দেন উলুবেড়িয়া দক্ষিণের বিধায়ক পুলক রায়। মুখ্যমন্ত্রীও মেনে নেন সেই প্রস্তাব। তখনই সিদ্ধান্ত হয়, আরও তিনটি নতুন থানা করা হবে। সেগুলি হল— আমতার চন্দ্রপুর, উলুবেড়িয়ার রাজাপুর এবং সাঁকরাইলের ধূলাগড়ি। এর মধ্যে একমাত্র রাজাপুর থানা প্রায় সঙ্গে সঙ্গে চালু হয়ে গেলেও চন্দ্রপুর এবং ধূলাগড়ি থানা এখনও তৈরি হয়নি।
উলুবেড়িয়া থানার কিছুটা অংশ নিয়ে চালু করা হয় রাজাপুর থানা। অন্যদিকে প্রস্তাব করা হয় আমতা এবং জগৎবল্লভপুর— এই দুই থানা এলাকার কয়েকটি পঞ্চায়েতকে নিয়ে চালু করা হবে চন্দ্রপুর থানা। কিন্তু সেই প্রস্তাব নিয়ে বিতর্ক হয়। জগৎবল্লভপুরের যে পঞ্চায়েতগুলিকে চন্দ্রপুর থানায় আনার প্রস্তাব করা হয়, তাতে আপত্তি জানান পাঁচলার বিধায়ক গুলশন মল্লিক। তাঁর বক্তব্য ছিল, জগৎবল্লভপুর হাওড়া সদর মহকুমার অধীন। এখানকার পঞ্চায়েতগুলিকে চন্দ্রপুর থানার অধীনে আনা হলে প্রশাসনিক দিক দিয়ে সেগুলি চলে আসবে উলুবেড়িয়া মহকুমার অধীনে। গুলশন বলেন, ‘‘আমরা চাই না পাঁচলা বিধানসভা এলাকার কোনও পঞ্চায়েত হাওড়া সদর থেকে উলুবেড়িয়া মহকুমার অধীনে চলে যাক। আমাদের আপত্তির কথা রাজ্য পুলিশকর্তাদের কাছে জানিয়েও রেখেছি।’’ অন্যদিকে যিনি নতুন থানার প্রস্তাব দিয়েছিলেন সেই পুলকবাবু বলেন, ‘‘গুলশনদার যুক্তি ঠিকই। থানার পুনর্গঠন করতে গিয়ে মহকুমা পরিবর্তন করা যায় না। রাজ্য পুলিশের কর্তারা এটি গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন।’’
ধূলাগড়ি থানা এখন আছে সাঁকরাইলের অধীনে। বছর দুয়েক আগে ধূলাগড়িতে বেশ অশান্তি হয়। তখন জেলা পুলিশকর্তাদের অনেকেই জানিয়েছিলেন, সাঁকরাইল থেকে ধূলাগড়িতে পুলিশ আসতে বেশ দেরি হয়। তারই সুযোগ নেয় দুষ্কৃতীরা। সে কথা মাথায় রেখেই প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী ধূলাগড়িতে নতুন থানা তৈরির প্রস্তাবে সঙ্গে সঙ্গে সায় দেন। এখন সাঁকরাইল চলে এসেছে হাওড়া সিটি পুলিশের অধীনে। ধূলাগড়িতে নতুন থানা হলে তা সিটি পুলিশের মধ্যেই থাকবে। কিন্তু সেই সিদ্ধান্তও এখনও কার্যকর হয়নি। সিটি পুলিশের কর্তারা জানান, বিষয়টি প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে।