প্রতীকী চিত্র।
গত পুর নির্বাচনের আগে হুগলিতে রাজ্যের শাসকদল কী কী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল এবং তার কতটা কাজ হয়েছে—তার পুরসভাভিত্তিক তালিকা তৈরি শুরু করেছে বিজেপি। কারণ, আসন্ন পুরভোটে তৃণমূলের উন্নয়নের ‘ধোঁকা’কেই অস্ত্র করতে চাইছে গেরুয়া শিবির। লোকসভা ভোটে তৃণমূলের হাত থেকে হুগলি কেন্দ্রটি ছিনিয়ে নেওয়ার পর থেকেই এই জেলায় উজ্জীবিত বিজেপি। তাই ভোটের দিনক্ষণ এখনও ঘোষণা না হলেও তারা রীতিমতো ‘হোমওয়ার্ক’ করে পুর নির্বাচনে মাঠে নামতে চলেছে। দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের সঙ্গে শ্রীরামপুরে ইতিমধ্যে একপ্রস্থ বৈঠকও সেরে ফেলেছেন
বিজেপির জেলা নেতৃত্ব। বিজেপি সূত্রের খবর, সেই বৈঠকেই ঠিক হয়েছে, প্রতিটি পুরসভা ধরে তালিকা প্রস্তুত করার।
রাজ্যের শাসকদল যে প্রতিশ্রুতি ফেরি করে ভোট নিয়েছে, তার সাপেক্ষে পুর এলাকাগুলিতে কী উন্নয়ন হয়েছে! একই সঙ্গে দলীয় স্তরে সমীক্ষা চলছে, কোনও এলাকার জন্য কোন জরুরি কাজটি এতদিন হয়নি। পুর নির্বাচনে বিজেপি ক্ষমতায় এলে সেই কাজটিই জরুরি ভিত্তিতে করা হবে, এমন প্রচারও চলবে। কারণ, বিজেপি-র জেলা নেতৃত্ব মনে করেন, তৃণমূল ভুরি ভুরি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু সে ভাবে কোনও পুর এলাকাতেই গঠনমূলক কাজ হয়নি। তাই শাসকদলের উন্নয়নের প্রচারের ‘ফানুস’কে এ বার তারা ফুটো করে দিতে পারবে।
বিজেপি-র শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি শ্যামল বসু বলেন, ‘‘জেলার প্রতিটি পুর এলাকায় মারাত্মক নিকাশি সমস্যা রয়েছে। অল্প বৃষ্টিতেই জল দাঁড়িয়ে যায়। প্লাস্টিক নিয়ন্ত্রণে কোনও কাজ হয়নি। আমরা এই সব বার্তা নিয়েই মানুষের কাছে এ বার যাব। দলীয় সভাপতির সঙ্গে আমরা সাংগঠনিক স্তরে বিস্তৃত আলোচনা করেছি। উনি সেই বার্তাই দিয়েছেন।’’
শাসকদলের উন্নয়নের ‘ধোঁকা’ নিয়ে প্রচারের পাশাপাশি বিজেপি চাইছে, এলাকায় গ্রহণযোগ্যতা আছে এমন মানুষকে পুরভোটে প্রার্থী করতে। সেই লক্ষ্যে সম্ভাব্য প্রার্থী-তালিকা তৈরির কাজও চলছে। শ্যামলবাবু বলেন, ‘‘যে মানুষের এলাকায় গ্রহণযোগ্যতা এবং স্বচ্ছতা আছে, তাঁকেই আমরা প্রার্থী করব।’’
এ সব শুনে বিজেপি নেতৃত্বকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি শাসকদলের জেলা সভাপতি দিলীপ যাদব। তিনি বলেন,‘‘শাসকদল কী করল, আর কী করল না— সেই তালিকা নিয়ে বিজেপি-র মাথাব্যথা কেন? আমরা শক্ত জমিতেই দাঁড়িয়ে আছি। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে বিজেপি-র গ্রহণযোগ্যতা এখন একেবারে তলানিতে ঠেকেছে। তাই ওদের মাথাব্যথা শুধু আমাদের নিয়ে।’’