West Bengal Lockdown

মুরগি কাটা ধরেছেন কলমিস্ত্রি

করোনা এবং তার জেরে লকডাউন। পেশাটাই বদলে দিয়েছে অনেক প্রান্তিক মানুষের। নতুন পেশাতে কি তাঁরা মানিয়ে নিতে পারছেন? স্বাচ্ছন্দ্যই বা কতটা? তাঁদের অবস্থার খোঁজ নিল আনন্দবাজার।করোনা এবং তার জেরে লকডাউন। পেশাটাই বদলে দিয়েছে অনেক প্রান্তিক মানুষের। নতুন পেশাতে কি তাঁরা মানিয়ে নিতে পারছেন? স্বাচ্ছন্দ্যই বা কতটা? তাঁদের অবস্থার খোঁজ নিল আনন্দবাজার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রিষড়া শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০২০ ০৬:০৯
Share:

খদ্দেরের অপেক্ষায় সুদীপ। —নিজস্ব িচত্র

কুড়ি বছর আগের অভিজ্ঞতাই সম্বল। অনেক ভেবেচিন্তে সেই কায়দাকে হাতিয়ার করেই ঘুরে দাঁড়ানোর পথ খুঁজছেন সুদীপ দাস। লকডাউনে স্বনির্ভরতার চেনা পথে ধাক্কা খেয়ে যাঁরা অন্য পেশাকে আঁকড়ে ধরেছেন, বছর চল্লিশের ওই যুবক তাঁদেরই এক জন।

Advertisement

সুদীপের বাড়ি রিষড়ার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের দাসপাড়ায়। এলাকায় কলমিস্ত্রি হিসেবে ভালই পরিচিতি রয়েছে তাঁর। সেই উপার্জনে মা এবং স্ত্রী-কে নিয়ে তিন জনের সংসার দিব্যি চলে যায়। কিন্তু লকডাউনের জেরে বসে গিয়েছেন সুদীপ। ফ্ল্যাটে বা বাড়িতে নতুন কোনও ‘অর্ডার’ মিলছে না। কারও বাড়ির কল ভেঙে গেলে বা পাইপ লাইন পরিষ্কার করাতে ডাক আসছে কদাচিৎ। এক মাসের লকডাউনের জেরে জমানো টাকা প্রায় শেষ।

সুদীপ বলেন, ‘‘বাবা কলমিস্ত্রি ছিলেন। তাঁর হাত ধরে বছর কুড়ি আগে এই পেশায় আসি। লকডাউনে হাতেগোনা ৬-৭ দিন কাজ করেছি। তা-ও টুকটাক। তাতে আর ক’পয়সা আসে! পেশায় আসার আগে কয়েক মাস এক আত্মীয়ের মুরগির দোকানে মাস ছ’য়েক কাজ করেছিলাম। সেই অভিজ্ঞতাকে সম্বল করেই ঠিক করলাম মুরগি বিক্রি করব।’’

Advertisement

অতএব কলমিস্ত্রী সুদীপ ব‌নে গিয়েছেন মাংস বিক্রেতা। ভোরে রিষড়ারই বানুমারির একটি খামার থেকে গোটাকতক মুরগি নিয়ে আসছেন। তার পরে বাড়ির সামনে ফ্ল্যাটের নীচে বসে চলছে বিক্রি। সকাল সাড়ে ৬টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত। যদিও খুব বেশি বিক্রি হচ্ছে না। ৩-৪ জন করে খদ্দের আসছেন। সুদীপের কথায়, ‘‘সবে তো নামলাম। যেটুকু বিক্রি হয়, সেটুকুই লাভ। দিনে শ’খানেক টাকা হয়তো থাকছে। আশপাশে মুরগির অনেক দোকান। পুরনো দোকানে খদ্দের তো বেশি হবেই।’’

স্থানীয় বাসিন্দা সাবির আলি বলেন, ‘‘লকডাউনের পরিস্থিতিতে মানুষের কাজ-কারবারের অবস্থা কহতব্য ‌নয়। সুদীপ খাটিয়ে ছেলে। ওঁদের মতো ছেলেরা বাছবিচার না করে যে যা পারেন, সেই কাজেই হাত লাগাচ্ছেন। এই ভাবেই হয়তো খারাপ পরিস্থিতি কেটে যাবে!’’

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement