অপেক্ষা: জলের হাহাকারের এটাই চেনা ছবি চন্দননগরে। নিজস্ব চিত্র
জলের জন্য কাউকে লাইন দিতে হচ্ছে নলকূপের সামনে। কেউ বালতি পাতছেন রাস্তার কলে। কেউ আবার স্নান করতে যাচ্ছেন গঙ্গায়।
এ বারেও প্রবল গরমে জলকষ্ট থেকে রেহাই পেলেন না চন্দননগরের অন্তত পাঁচটি (২৭, ২৮, ৩১, ৩২ এবং ৩৩) ওয়ার্ডের বাসিন্দারা। বেশির ভাগ বাড়িতেই সরু সুতোর মতো পুরসভার পাইপলাইনের জল পড়ছে। ফলে, প্রয়োজন মিটছে না। পুরসভা জলের গাড়ি পাঠালেও তা দ্রুত শেষ হয়ে যাচ্ছে। সেই কারণেই বিকল্পের সন্ধানে নামছেন ওই সব এলাকার বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, যে শহরে দিন দিন আবাসনের ভিড় বাড়ছে, বড় বড় দোকানপাট হচ্ছে, সেই শহরে জল সরবরাহ ব্যবস্থা এখনও সেই তিমিরেই রয়ে গিয়েছে।
পুরশ্রী এলাকার (৩২ নম্বর ওয়ার্ড) বাসিন্দা প্রতিমা পারুইয়ের ক্ষোভ, ‘‘কবে যে সমস্যা মিটবে জানি না। প্রতি বছর একই দুর্ভোগ।’’ ব্রাহ্মণপাড়ার (৩১ নম্বর ওয়ার্ড) অমল হালদার সরকারি কর্মী। তিনি জানান, রাস্তার কল থেকে জল এনে স্নান করতে হচ্ছে। কিন্তু সেখানেও লম্বা লাইন। তাঁর কথায়, ‘‘বেশির ভাগ দিনই জলের জন্য অফিস যেতে দেরি হচ্ছে। রাস্তার কলে লাইন দেওয়া নিয়ে গোলমালও হচ্ছে। কবে যে সঙ্কট থেকে মুক্তি পাব!’’
সমস্যার কথা মানছেন চন্দননগরের মেয়র রাম চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘‘এত বড় শহরে জল সরবরাহ ব্যবস্থা নির্ভর করে শুধুমাত্র গোন্দলপাড়া জলপ্রকল্পের উপরে। ওই ওয়ার্ডগুলি জলপ্রকল্প থেকে দূরে হওয়ায় জন্যই সমস্যা।’’
সমস্যা মেটাতে কী করছে পুরসভা?
শহরের সব এলাকায় সমান ভাবে জল সরবরাহ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে বোড়াই চণ্ডীতলা এলাকায় আরও একটি জলপ্রকল্প তৈরি করছে পুরসভা। এ জন্য পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর ৪৬ কোটি টাকা মঞ্জুর করেছে। কিন্তু সেই প্রকল্পের কাজ শেষ হতে সময় লাগবে। সমস্যার আশু সমাধানের জন্য কয়েকটি জায়গায় গভীর নলকূপ বসিয়ে পাম্পের মাধ্যমে জল সরবরাহ ব্যবস্থা গড়ে তোলার কাজে তাঁরা হাত দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন পুরসভার মেয়র পারিষদ (জলসম্পদ বিভাগ) অনিমেষ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘ইতিমধ্যে কলুপুকুর এলাকায় (৮ নম্বর ওযার্ড) পাম্প বসানোয় সেখানকার জলসঙ্কট মিটে গিয়েছে। সুভাষ পল্লি এলাকাতেও (৩৩ নম্বর ওয়ার্ড) পাম্প বসেছে। বাকিগুলির কাজও দ্রুত শুরু করা হবে। আর জলপ্রকল্পটি হয়ে গেলে শহরে জলের সঙ্কটই হবে না।’’