প্রতীকী ছবি।
নানা কারণে বছরভর দু’পক্ষের হিংসা-অশান্তি লেগেই থাকে। লকডাউনে ত্রাণ বিলিকে কেন্দ্র করেও শাসকদলের দু’পক্ষের বোমাবাজিতে বৃহস্পতিবার রাত থেকে তপ্ত হয়ে উঠল ‘কন্টেনমেন্ট জ়োন’ হিসেবে চিহ্নিত জাঙ্গিপাড়ার কোতুলপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বাহানা এলাকা। শুক্রবার সকালেও বোমাবাজি হয়।
ঘটনায় কারও হতাহত হওয়ার খবর মেলেনি। তবে, দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে এই অশান্তি অস্বস্তিতে ফেলেছে জেলা তৃণমূল নেতৃত্বকে। এই সুযোগে শাসকদলকে বিঁধতে ছাড়ছে না বিরোধীরা। গ্রামবাসীরা আতঙ্কিত।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাঠি উঁচিয়ে দু’পক্ষকে সরিয়ে দেয়। শুক্রবার সকালেও ওই এলাকায় পুলিশ টহল দেয়।
তৃণমূলেরই একটি সূত্রের খবর, ‘লড়াই’টা জাঙ্গিপাড়া পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য শেখ মহিউদ্দিন ওরফে বুদোর দলবলের সঙ্গে কোতুলপুর পঞ্চায়েত এলাকার দলীয় সভাপতি শেখ শামসের ও স্থানীয় নেতা শেখ মইনুর ইসলামের (মোনা)। দু’পক্ষের বিবাদ দীর্ঘদিনের। গত পঞ্চায়েত ভোটের দিন ঘোষণা হওয়ার পর থেকে দুই গোষ্ঠীর গ্রাম দখলের লড়াইকে কেন্দ্র করে সেখানে অশান্তি লেগেই রয়েছে বলে গ্রামবাসীদের অভিযোগ।
বৃহস্পতিবার রাত ১১ টার পর থেকে বোমাবাজি শুরু হয় বাহানায়। শেখ মহিউদ্দিন গোষ্ঠীর লোকজনের অভিযোগ, ‘‘জাঙ্গিপাড়ার বিভিন্ন এলাকায় ত্রাণ বিতরণ করছি আমরা। কোতুলপুর এলাকাতেও কয়েকশো মানুষকে ত্রাণ বিলি করা হয়েছে। তা মেনে নিতে পারছে না ওঁরা। সেই নিয়েই অশান্তি।’’ শেখ মহিউদ্দিন বলেন, ‘‘মহামারির সময়ে মানুষ খেতে পাচ্ছেন না। আমাদের পক্ষ থেকে যতটা সাহায্য করার করছি। এটা ওদের সহ্য হচ্ছে না। তাই এলাকা দখলে রাখতে দফায় দফায় ওরা বোমাবাজি করছে।’’
এ প্রসঙ্গে শেখ মইনুরের পাল্টা দাবি, ‘‘বাইরের লোকজন নিয়ে এলাকায় বোমাবাজি করেছে ওরাই। অশান্তি ওরাই প্রথম শুরু করেছে।’’
গোটা ঘটনায় জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব যে অস্বস্তিতে তা স্পষ্ট। স্থানীয় বিধায়ক স্নেহাশিস চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ওই এলাকায় কী হয়েছে তা দেখে পুলিশকে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।’’ দলের জেলা সভাপতি দিলীপ যাদব বলেন, ‘‘এই পরিস্থিতিতে কোনও উটকো ঝামেলা দল বরদাস্ত করবে না। পুলিশকে পুরো বিষয়টি কড়া হাতে মোকাবিলা করে ব্যবস্থা নিতে বলেছি।’’
এলাকায় শাসকদলের অন্দরের অশান্তি ফের প্রকাশ্যে আসার এই ঘটনাকে ‘লজ্জাজনক’ বলে মন্তব্য করেছেন সিপিএমের জাঙ্গিপাড়া-১ সিএরিয়া কমিটির সম্পাদক অলক সিংহরায়। প্রশাসনকে আরও
কঠোর হবে, এই দাবিও তুলেছেন। বিজেপির শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি শ্যামল বসু বলেন, ‘‘রেশনে মানুষ মাল পাচ্ছেন না। আর ওঁরা রেশনের মাল নিয়েই বোমাবাজি করছে। দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক।’’