প্রহৃত পুরপিতা। নিজস্ব চিত্র
পুজো মণ্ডপ ভাঙচুর অভিযোগের একদিন পরও উত্তরপাড়া পুরসভার ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুমিত চক্রবর্তীকে গ্রেফতার করতে পারল না পুলিশ। তবে জয়দেব পোড়েল ও প্লে অধিকারী নামে তাঁর দুই সাগরেদকে দক্ষিণেশ্বরের একটি হোটেল থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের শনিবার শ্রীরামপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক ১৪ দিন পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন। কাউন্সিলরকে মারধরের ঘটনাতেও গ্রেফতার হননি কেউ।
চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার পীযূষ পাণ্ডে বলেন, ‘‘দুই তরফেই অভিযোগ দায়ের করেছে। অভিযুক্ত কাউন্সিলর পলাতক। তাঁর খোঁজে তল্লাশি চলছে।’’
পুলিশের খাতায় পলাতক হলেও ফোনে ধরা গিয়েছে সুদীপকে। তাঁর দাবি, ‘‘আমি মণ্ডপ ভাঙচুর করিনি। পুরনো ঝামেলা মেটাতে গিয়েছিলাম। কিন্তু ওই ক্লাবের ছেলেরা আমার সঙ্গীদের মারায় হাতাহাতি হয়েছে।’’ পুরপ্রধান দিলীপ যাদবের কথায়, ‘‘এলাকায় গুন্ডামি বরদাস্ত করব না। পুলিশ কমিশনার কে বলেছি, অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নিতে।’’
তৃণমূল সূত্রে খবর, সুমিতকে পুরপারিষদ (জল) পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য পুরপ্রধানকে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জেলা তৃণমূল সভাপতি তপন দাশগুপ্ত জানান, অভিযুক্ত কাউন্সিলরকে শো-কজ করা হয়েছে।
মদ্যপ অবস্থায় সঙ্গীদের নিয়ে বৃহস্পতিবার, নবমীর রাতে একটি পুজো মণ্ডপে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছিল সুমিত চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে। শুক্রবার সকালে এই খবরের জেরে এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। অভিযুক্ত কাউন্সিলরের গ্রেফতারের দাবিতে সকাল থেকে উত্তরপাড়া হাসপাতালের সামনে শুরু হয় অবরোধ। সেই সময় সুমিত থানার দিকে যাচ্ছিলেন। তাঁকে রাস্তায় ফেলে মারধর করা হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, চাঁদা তোলা নিয়ে ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইয়ংস্টার ক্লাব ও ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের ত্রিশক্তি ক্লাবের মধ্যে মাস খানেক ধরেই গণ্ডগোল চলছিল। ত্রিশক্তি ক্লাবের পুজোকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন সুমিত। অভিযোগ, দিন দু’য়েক ইয়ংস্টার ক্লাবের কয়েকজন সদস্যের সঙ্গে ত্রিশক্তি ক্লাবের সদস্যদের ঝামেলা হয়েছিল। তা সাময়িকভাবে মিটেও গিয়েছিল। অভিযোগ, সেই ঘটনার পরই নবমীর রাতে কয়েকজন সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে সুমিত ইয়ংস্টার ক্লাবের পুজো মণ্ডপে হামলা চালান।
কাউন্সিলরকে মারধরের ঘটনায় গোষ্ঠীকোন্দলের ছায়া দেখছেন সুমিতের অনুগামীরা। বিধায়ক ঘনিষ্ঠ সুমিতের সঙ্গে পুরপ্রধান দিলীপ যাদবের দ্বন্দ্ব নতুন নয়। সুমিতের অনুগামীদের অভিযোগ, ‘‘অভিযোগ প্রমাণের আগেই কার মদতে বাসিন্দারা কাউন্সিলরকে মারধর করল?’’
উত্তরপাড়ার বিধায়ক প্রবীর ঘোষাল বলেন, ‘‘যদি কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকে, তাহলে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।’’