ধৃত: গ্রেফতারের পর অনিতা ও সুমতিদেবী। নিজস্ব চিত্র
ঠিক কী কারণে শনিবার বিকেলে ব্যান্ডেলের বর্ণালী দাস এবং তাঁর ১০ মাসের শিশুকন্যার অপমৃত্যু হল, তা ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পরেও স্পষ্ট হল না। রবিবার বিকেল পর্যন্ত এ নিয়ে কিছু বলতে পারেননি তদন্তকারীরা। তবে, বর্ণালীকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে রবিবার তাঁর পড়শি সুমতি দাস নামে এক প্রৌঢ়া এবং তাঁর মেয়ে অনিতাকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। এ দিনই বৈশালী নামে মৃত শিশুটির দেহের ময়নাতদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, তাকে মোটা কাপড় বা বালিশ জাতীয় কিছু চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে।
চন্দননগর কমিশনারেটের এক কর্তা জানান, ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়ে রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা হচ্ছে। এতে আর কেউ জড়িত কিনা, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ধৃতদের এ দিনই চুঁচুড়া আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক তাঁদের পাঁচ দিন পুলিশ গেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। অভিযোগ অস্বীকার করে সুমতির দাবি, ‘‘পড়শি হিসেবে শনিবার বিকেলে আমি বর্ণালীদের খোঁজ নিতে গিয়েই বিপদে পড়লাম। আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।’’
শনিবার সন্ধ্যায় ব্যান্ডেলের কেওটা হেমন্ত বসু কলোনির বাসিন্দা বর্ণালী ও তাঁর মেয়ে বৈশালীর মৃতদেহ মেলে তাঁদের ঘরেই। চৌকির উপরে পড়েছিল বৈশালীর দেহ। পাশে, ঘরের সিলিং ফ্যান থেকে গলায় দড়ির ফাঁস লাগানো অবস্থায় ঝুলছিল তার মায়ের দেহ। বর্ণালীর স্বামী সমর তখন কাজে গিয়েছিলেন। প্রতিদিনের মতো ওই বিকেলে মেয়েকে নিয়ে বর্ণালীকে বেরোতে না-দেখে সুমতিই ওই বাড়িতে যান। তিনিই প্রথম দেহ দু’টি দেখে পাড়া-পড়শিকে ডাকেন।
কেন সুমতির বিরুদ্ধে অভিযোগ?
ওই প্রৌঢ়া এবং তাঁর মেয়ের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন বর্ণালীর বাবা বাসুদেব বিশ্বাস। তিনি বলেন, ‘‘শ্বশুরবাড়ির নিয়ে মেয়ের কোনও অভিযোগ ছিল না। তবে ওই মহিলা (সুমতি) এবং তাঁর মেয়ে বর্ণালীর সংসারের সব কিছুতে নাক গলাতেন। ওঁরাই সিদ্ধান্ত নিতেন। হয়তো এমন কিছু হয়েছে, যেটা মেয়ে মেনে নিতে পারেনি। সঠিক তদন্ত করে পুলিশ সেই রহস্য উদ্ঘাটন করুক।’’ প্রায় একই সুর বর্ণালীর মামা সুরজিৎ অধিকারীর গলাতেও।
কিন্তু বর্ণালীর স্বামী এ কথা মানতে চাননি। সুমতিকে তিনি ‘মামি’ ডাকেন। সমর বলেন, ‘‘ওঁদের বিরুদ্ধে কেন অভিযোগ হল বুঝলাম না। মামি আমাদের অভিভাবকের মতো হয়ে গিয়েছিলেন। যে কোনও সমস্যার সমাধানে এগিয়ে আসতেন।’’