আগাছায় ঢাকা পড়েছে পর্যটনকেন্দ্র গড়চুমুক। নিজস্ব চিত্র
আমপানে পড়ে যাওয়া অনেক গাছ এখনও সরানো হয়নি। আগাছায় ভর্তি হয়ে গিয়েছে গোটা এলাকা। লতা-পাতায় মুখ ঢেকেছে বসার জায়গা। ঘাস বড় হতে হতে কোথাও পাঁচ ফুট বা কোথাও সাত ফুট ছুঁয়েছে। হাওড়ার অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র গড়চুমুকের অবস্থা এখন এমনই।
আনলক-পর্ব শুরু হয়েছে অনেক আগে। পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে পর্যটকদের আনাগোনা বেড়েছে। কিন্তু খোলেনি গড়চুমুক মিনি জু ও ডিয়ার পার্ক। খোলা তো দূরঅস্ত, ওই পর্যটন কেন্দ্র সাফাইয়ের কাজই করে উঠতে পারেনি হাওড়া জেলা পরিষদ।
১০৬ একর জমির উপরে বিস্তৃত গড়চুমুক পর্যটন কেন্দ্রের এক দিকে রয়েছে চড়ুইভাতির জায়গা। অন্য দিকে রয়েছে মিনি জু ও ডিয়ার পার্ক। ছোটদের জন্য শিশু উদ্যান রয়েছে। প্রতি বছর বহু মানুষ সেখানে বেড়াতে আসেন। ময়ূর, কচ্ছপ, কুমির থেকে শুরু করে নানা প্রজাতির পাখির দেখা মেলে এখানে। রয়েছে নানা বন্যপ্রাণী। এখানকার অন্যতম আকর্ষণ কুমির ও হরিণ।
করোনা সংক্রমণের আশঙ্কায় বন্ধ করা হয়েছিল ওই পর্যটনকেন্দ্র। তারপর আমপানে তছনছ হয়ে যায় গড়চুমুক। বাবলা, শিরীষ, সাঁইবাবলা, শিশু, সেগুন, মেহগনি-সহ সাড়ে তিনশোর বেশি বড় গাছ ভেঙে পড়ে। এখনও পার্কের বেশ কিছু অংশে গাছ পড়ে রয়েছে। দেখভালের অভাবে গজিয়ে উঠেছে লম্বা লম্বা ঘাস ও আগাছা। চারদিকে এখনও ঝড়ের তাণ্ডব-চিহ্ন স্পষ্ট। বনজঙ্গল বাড়ায় বেড়েছে
সাপের উপদ্রব। হাওড়া জেলা পরিষদের সহ-সভাপতি অজয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘কিছু জটিলতার কারণে পার্ক খোলা যাচ্ছে না। আমপানে পড়ে যাওয়া গাছ সরানোর জন্য বন দফতরের অনুমতি নিয়ে টেন্ডার ডাকা হয়েছিল। কিছু ভুলের জন্য সেটি বাতিল হয়ে গিয়েছে। খুব শীঘ্রই ফের টেন্ডার ডাকা হবে। জঙ্গল পরিষ্কারের কাজও শুরু হবে। পুজোর আগেই পর্যটন কেন্দ্র খুলে দেওয়া হবে।’’ পর্যটনকেন্দ্রে জঙ্গল ও গাছ সাফাইয়ের কাজ কবে শুরু হবে, সেই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে এলাকায়। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, পর্যটনকেন্দ্রের ফটক বন্ধ থাকায় ব্যবসা মার খাচ্ছে। এক ব্যবসায়ীর কথায়, ‘‘প্রায় সমস্ত জায়গায় পর্যটনকেন্দ্র খুলে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু গড়চুমুক কবে খুলবে বুঝতে পারছি না।’’
উলুবেড়িয়ার বাসিন্দা সুস্মিতা পাল বলেন, ‘‘একঘেঁয়েমি কাটানোর জন্য বাচ্ছাদের নিয়ে খানিকটা সময় গড়চুমুকে যেতাম। কিন্তু পার্ক বন্ধ থাকার এখন যেতে পারি না। বাচ্চাগুলো খুব মজা করে পশু-পাখি দেখত।’