—প্রতীকী ছবি।
যত দিন যাচ্ছে, সমস্যাটা বাড়ছে।
পুলিশের আনা দেহের ময়নাতদন্তের পরে উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতাল থেকে মৃত্যুর শংসাপত্র পাচ্ছেন না মৃতের পরিবারের লোকজন। কোথায় গেলে তা মিলবে, তারও দিশা পাচ্ছেন না মৃতের আত্মীয়েরা। ফলে, নিহতের নানা প্রাপ্য থেকেও তাঁরা বঞ্চিত হচ্ছেন বলে অভিযোগ।
কেন এই অবস্থা?
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দুষছেন পুলিশকে। তাঁদের দাবি, পুলিশ যে সব দেহ ময়নাতদন্তের জন্য আনে, সেখানে ঠিকানার জায়গায় শুধু উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতাল লিখে দেয়। সমস্যা এখানেই। যাঁর সম্পর্কে হাসপাতালের কাছে কোনও তথ্যই থাকে না, তাঁর মৃত্যুর শংসাপত্র কী ভাবে দেওয়া যাবে, প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। হাসপাতালের সুপার সুদীপরঞ্জন কাঁড়ার বলেন, ‘‘পুলিশ ঠিকানার জায়গায় অন্তত যদি লেখে যে দেহটি কোথা থেকে মিলেছে বা কোনও জখমকে আনার পরে মৃত্যু হলে তাঁকে কোন জায়গা থেকে আনা হল, তা হলেও সমস্যা হয় না। সে ক্ষেত্রে পুরসভাই ডেথ সার্টিফিকেট দিয়ে দেবে। সমস্যাটি নিয়ে পুলিশের সঙ্গে কথা বলেও লাভ হয়নি।’’
পুলিশ কী বলছে? এসডিপিও (উলুবেড়িয়া) রূপান্তর সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘এটা হওয়া বাঞ্ছনীয় নয়। মৃতের আত্মীয়েরা আমাকে বিষয়টি লিখিত আকারে জানালে সমস্যাটি দূর করতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ উলুবেড়িয়ার পুরপ্রধান অর্জুন সরকার জানান, মৃতের যথাযথ ঠিকানা থাকলে মৃত্যুর শংসাপত্র দিতে পুরসভার আপত্তি নেই।
সমস্যাটা দীর্ঘদিনের, বলছেন ভুক্তভোগীরা। উলুবেড়িয়ার এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘বছর দুয়েক আগে আমার এক আত্মীয় দুর্ঘটনায় মারা যান। পুলিশ দেহটি ময়নাতদন্তে পাঠানোর সময়ে ঠিকানা লেখে উলুবেড়িয়া হাসপাতাল। ফলে হাসপাতাল বা পুরসভা— কোনও জায়গা থেকেই ডেথ সার্টিফিকেট পাচ্ছি না। ওঁর জীবনবিমার বহু টাকা আটকে গিয়েছে।’’
হাসপাতাল সূত্রের খবর, মাসে গড়ে সাতটি করে দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পুলিশ আসে। সমস্যাটি সবথেকে বেশি হচ্ছে উলুবেড়িয়া থানার ক্ষেত্রে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট যখন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের হাতে আসে তখন দেখা যায়, তাতে মৃতের ঠিকানা লেখা— ‘উলুবেড়িয়া হাসপাতাল’। এই অবস্থায় উলুবেড়িয়া পুরসভায় যখন মৃতের আত্মীয়েরা যখন মৃত্যুর শংসাপত্র আনতে যান, তাঁদের পত্রপাঠ পাঠিয়ে দেওয়া হয় হাসপাতালে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সেই শংসাপত্র দিতে অস্বীকার করেন।