চুঁচুড়ায় চলছে টিকাকরণের মহড়া। — ছবি: তাপস ঘোষ.
অপেক্ষমাণ স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে থেকে এক জন করে উঠে যাচ্ছেন পাশের ঘরে। সেখানে তাঁদের শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করা হচ্ছে ‘থার্মাল গান’-এ। হাতে দেওয়া হচ্ছে স্যানিটাইজ়ার। কম্পিউটারে নাম, ঠিকানা-সহ নানা তথ্য তুলে নেওয়া হচ্ছে। তার পরে অন্য একটি ঘরে গিয়ে বসতে হচ্ছে। সেখানে টিকাকরণের ব্যবস্থা থাকছে। শেষে, চলে যেতে হচ্ছে পর্যবেক্ষণ-কক্ষে।
কোভিডের টিকা কী ভাবে দেওয়া হবে, সে বিষয়ে শুক্রবার এ ভাবেই মহড়া বা ‘ড্রাই রান’ হয়ে গেল হুগলি এবং হাওড়া জেলায়। দুই জেলাতেই তিনটি কেন্দ্রে ২৫ জন করে স্বাস্থ্যকর্মীকে নিয়ে ওই প্রক্রিয়া সারা হল। হুগলিতে চুঁচুড়া ইমামবাড়া সদর হাসপাতালে ওই প্রতিষেধক দেওয়ার মহড়া চালু করেন মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) শুভ্রাংশু চক্রবর্তী। উপস্থিত ছিলেন হাসপাতালের সুপারিন্টেন্ডেন্ট উজ্জ্বলেন্দুবিকাশ মণ্ডল। ইমামবাড়ার পাশাপাশি পোলবা এবং বাঁশবেড়িয়ার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের পুর-প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ওই মহড়া হয়
সিএমওএইচ জানান, টিকাকরণের সময় যাতে কোনও অসুবিধা না হয় এবং কোনও অংশে অসুবিধা হলে তা নিরীক্ষণ করে সেই অনুযায়ী সমাধানের জন্যই এই মহড়া। সেই কারণেই একটি ‘ডামি’ পোর্টালের মাধ্যমে ‘ডেটা এন্ট্রি’র কাজটিও এখানে গুরুত্ব দিয়ে করা হয়েছে। সব মিলিয়ে গোটা পদ্ধতি নিয়ে স্বাস্থ্যকর্মীরা সড়গড় হলেন। টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে জেলার পাঁচটি বড় হাসপাতাল এবং ১৮টি ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র— এই ২৩টি জায়গা ঠিক করে রাখা হয়েছে।
টিকা নেওয়ার পরে শরীরে কোনও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হচ্ছে কিনা, যদি হয় তা হলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রত্যেকটি কেন্দ্রে পর্যবেক্ষণ-কক্ষ থাকবে। তবে, কবে টিকাকরণ শুরু হবে এবং কোন টিকা দেওয়া হবে, তা চূড়ান্ত হয়নি।
মহড়ায় যোগদানকারী স্বাস্থ্যকর্মী বন্দনা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘স্বাস্থ্যবিধি মেনে কী ভাবে টিকা দিতে হবে, সেটা বোঝা গেল। গোটা বিষয়টি নিয়ে ওয়াকিবহাল হওয়া গেল। এতে আসল সময়ে কাজের সুবিধা হবে। এতগুলো মাস কঠিন পরিস্থিতিতে করোনা আক্রান্তদের সেবায় নিযুক্ত থেকেছি। প্রতিষেধক যত তাড়াতাড়ি দেওয়া যায়, ততই ভাল।’’
গৌতমী চট্ট্যোপাধ্যায় নামে অপর এক স্বাস্থ্যকর্মীর বক্তব্য, ‘‘আমাদেরই টিকা দেওয়ার কাজ করতে হবে। আজ পুরো বিষয়টি ব্যবহারিক ভাবে শেখা হল। টিকা দিতে কোনও অসুবিধা হবে না।’’ হাওড়ার জেলা হাসপাতাল-সহ ওই জেলার তিনটি কেন্দ্রেও এ দিন একই ভাবে টিকাকরণের মহড়া হয় স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের তত্ত্বাবধানে। সিএমওএইচ ভবানী দাস জানান, স্বাস্থ্যভবনের নির্দেশে মহড়ার আয়োজন করা হয়েছিল। কোনও সমস্যা হয়নি। নির্বিঘ্নেই সব হয়েছে।