পুজোর আগে শেষ রবিবারে ভিড় শ্রীরামপুরে। ছবি: দীপঙ্কর দে।
হাতে মাত্র কয়েক ঘণ্টা। ইতিমধ্যে অনেক জায়গায় পুজোর উদ্বোধন হয়েও গিয়েছে। চারিদিকে সাজো সাজো রব।
আর, পুজোর আগে শেষ সাপ্তাহিক ছুটির দিন রবিবার। তাই সময় নষ্ট না করে এ দিন সকাল থেকেই দলে দলে মানুষ বেরিয়ে পড়েছেন পুজোর কেনাকাটা করতে। মাঝে মধ্যে মেঘের আনাগোনাও দমাতে পারেনি দুই জেলার মানুষকে। বেলা যত গড়িয়েছে দোকানে দোকানে ভিড় উপচে পড়েছে।
হাওড়া গ্রামীণ এলাকার বিভিন্ন মার্কেটগুলিতে পা ফেলার জায়গা নেই। আর দুপুর গড়াতেই দোকানগুলিতে যেন তিল ধারণের জায়গা নেই। বাগনান, উলুবেড়িয়া, ডোমজুড়, আন্দুল, আমতা, শ্যামপুর-সহ নানা শহরের রাস্তায় ও দোকানে উপছে পড়ছে ভিড়। দম ফেলার সময় নেই দোকান কর্মীদের। কচিকাঁচা থেকে শুরু করে বয়স্করাও দোকানমুখী। তবে মার্কেটে হিট ‘বাজিরাও মস্তানি’ ডিজাইনের পোশাক। বালিকা থেকে শুরু করে তরুণী সকলেরই প্রথম পছন্দ ওই ডিজাইনের পোশাক। তবে ছেলেদের মধ্যে মার্কেট ধরেছে ‘সুলতান’ লেখা ছাপের টি-শার্ট ও জামা। এ ছাড়া মেয়েদের ক্ষেত্রে মার্কেটে জোর কদমে চলছে পালাজো (লম্বা টপের সঙ্গে চওড়া ঘেরের পাজামা), গ্রাউন (চুড়িদারের নীচের দিকে প্রচুর কোঁচ)। ছেলেদের মধ্যে জিনসেরও কদর রয়েছে বলে দোকানদাররা জানান। বাগনানের এক দোকানদার গৌতম বসু বলেন, ‘‘বাজারে এখন নতুন নতুন ডিজাইনের পোশাক যেমন বাজিরাও মস্তানি পোশাক বা সুলতান ছাপ জামা, টি-শার্ট ভাল চলছে।’’ একই দাবি উলুবেড়িয়া, ডোমজুড়, শ্যামপুর, আমতার ব্যবসায়ীদেরও। বাগনানের এক দোকানে এসেছিলেন কলেজ ছাত্রী শর্মিষ্ঠা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘এ বারে আধুনিক ডিজাইনের বাজিরাও মস্তানি পোশাক কিনেছি। তবে অন্য ধরনের পোশাকও কিনেছি।’’
একই রকম ভাবে ভিড় নজরে এসেছে হুগলি জেলা সদর চুঁচুড়ায়। ঘড়িরমোড় এলাকার রাস্তায় ক্রেতার ভিড় ঠেলে এগিয়ে যাওয়া দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে এ দিন। খড়ুয়াবাজার থেকে ঘড়ির মোড় এলাকায় পৌঁছতে অন্য সময় ৫ থেকে ৭ মিনিট লাগে। এখন সেটা ২০ থেকে ৩০ মিনিট সময় লেগে যায়। ঠিক একই পরিস্থিতি চোখে পড়ে শ্রীরামপুরেও। শ্রীরামপুর স্টেশন লাগোয়া বাজারের পাশ দিয়ে ক্রেতার ভিড় ঠেলে এগোনোর জো ছিল না। বিপি দে স্ট্রিট, নেতাজি সুভাষ এভিনিউ, কেএমশা স্ট্রিট এলাকায় দোকানগুলিতে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। শুধু তাই নয়, খাবারের ছোট দোকান থেকে রেস্তোরাঁগুলিতে ভিড় ভালই ছিল। যেন পুজো এ দিন থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে।
শুধু যে স্থায়ী দোকানে ভিড় তা নয়। রাস্তার পাশে প্লাস্টিক পেতে যাঁরা পসরা সাজিয়ে বসেছেন সেখানেও ক্রেতাদের ভিড় উপচে পড়েছে। হাওড়ার মতো হুগলিতেও মেয়েদের বাজিরাও মস্তানি থেকে শুরু করে লেহঙ্গা এ বছরের পুজোয় বিশেষ স্থান পেয়েছে। ছেলেদের ক্ষেত্রে বিশেষ টি-শার্ট, জিনস, শেরওয়ানি, পাঞ্জাবি জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। ভিড়ের তালিকায় রয়েছে পান্ডুয়া, জাঙ্গিপাড়া, ধনেখালিও। গ্রাম থেকেও বহু মানুষ শহরের বিভিন্ন প্রান্তের দোকানে কেনাকাটা করতে বেরিয়ে পড়েছেন।
ধনেখালির শর্মিষ্ঠা গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘চুঁচুড়া ও শ্রীরামপুর এলাকায় যে ধরনের বড় বড় দোকান গড়ে উঠেছে, তাতে জিনিসের সম্ভার বেশি। তাই মানুষ সেখানে যাচ্ছে। তবে এদিন শেষ ছুটির দিন হওয়ায় ভিড়টা একটু বেশি হয়েছিল।’’ বিক্রেতা হরি দাস বলেন, ‘‘এতদিন বিক্রি সে রকম বাজার জমছিল না। শেষ রবিবারের বিক্রিবাট্টা ভালই হয়েছে।’’