পাত পেড়ে: ডানকুনিতে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের ধারে চলছে খাওয়া-দাওয়া। ছবি: দীপঙ্কর দে
সময়ের হিসেব কষেই বেরিয়েছিলেন ওঁরা। কিন্তু যানজটে ধাক্কা খেয়ে ধর্মতলায় দলের শহিদ সমাবেশে যেতে না-পেরে গাড়ি ঘুরিয়ে রাস্তার ধারে জমিয়ে চড়ুইভাতি সেরে বাড়ির পথ ধরলেন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা।
রবিবার এই ছবি দেখা গেল হুগলির ডানকুনিতে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের ধারে। ধর্মতলায় যখন একুশের সভা চলছে, তখন এখানে রাস্তার ধারে বসে মধ্যাহ্নভোজ সারলেন কয়েকশো মানুষ। বাসে চেপে তাঁদের কেউ এসেছেন পশ্চিম বর্ধমানের পাণ্ডবেশ্বর থেকে, কেউ রায়না থেকে।
ওই তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা জানান, নেতাদের নির্দেশমতো সকলে ভোরেই বাসে চড়ে ডানকুনি পৌঁছে যান। পরিকল্পনা ছিল, দ্বিতীয় হুগলি সেতু ধরে ধর্মতলায় পৌঁছবে বাস। কিন্তু ডানকুনি থেকে ডানলপের দিকে গাড়ি ঘুরিয়ে দেয় পুলিশ। ১০টা নাগাদ শ্যামবাজারে গিয়ে তাঁদের চক্ষু চড়কগাছ। পরিস্থিতি দেখে তাঁরা বুঝে যান, ধর্মতলায় পৌঁছতে পৌঁছতে হয়তো সম্মেলন শেষ হয়ে যাবে। ফলে, সম্মেলন-স্থলের দিকে না-গিয়ে অন্তত ৪০টি বাস ডানকুনির দিকে ঘুরিয়ে নেওয়া হয়।
কথা ছিল, সম্মেলন থেকে ফেরার পথে কোথাও দাঁড়িয়ে রান্না-খাওয়া সেরে বাড়ি ফিরবেন ওই তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা। সে জন্য অনেকেই গ্যাস, ওভেন-সহ রান্নার অন্য সরঞ্জাম নিয়েই এসেছিলেন। যানজটের ঠেলায় ফিরে আসা বাসগুলি ডানকুনি টোলপ্লাজা লাগোয়া জায়গায় দাঁড়িয়ে পড়ে। রান্না শুরু হয়ে যায়। পাণ্ডবেশ্বরের মেঘদূত পাল ওই দলে ছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘আমরা তিনটে বাসে ১২০ জন এসেছি। দুটো বাস কলকাতায় ঢুকে গিয়েছে। যানজটের জন্য আমরা পারিনি। মোবাইলে ওই দু’টো বাসের বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলে নিয়েছি। আমরা রান্না সেরে রাখছি। ওঁরা ফিরলে খেয়েদেয়ে একসঙ্গেই বাড়ি ফিরব।’’
মেনুতে কী আছে? মেঘদূত জানান, ভাত, মুগ ডাল, মুরগির মাংস আর চাটনি। তাঁর কথায়, ‘‘অত জনের রান্নায় সময়ও অনেক লাগবে। আগে ভাগেই রান্না চাপিয়ে দেওয়ায় ভালই হল।’’
রায়নার সন্দীপ দুলেও শ্যামবাজারের নেতাজি মূর্তির সামনে থেকে আর এগোতে পারেননি যানজটের কারণে। তাঁরাও সম্মেলনে না-গিয়ে ডানকুনিতে ফিরে রান্না চাপিয়ে দেন। তাঁদের মেনু থেকে অবশ্য চাটনি বাদ। ভাত, ডাল আর মুরগির মাংস। সন্দীপ বলেন, ‘‘আমরা দু’টো বাস এনেছি। একটা বাস ধর্মতলায় ঢুকতে পেরেছে। আমরা আগে রান্না চাপিয়ে দেওয়ায় ওঁরা সম্মেলন থেকে ফিরেই খেয়ে নিতে পারবে। সময় মতো বাড়ি ফেরা যাবে।’’