প্রতীকী ছবি
বিভিন্ন অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের ফাঁকা সহায়িকা পদে নিয়োগ শুরু হয়েছে হুগলি জুড়েই। এ নিয়ে বৃহস্পতিবার একপ্রস্ত অশান্তি হল খানাকুল-১ ব্লকের শিশু বিকাশ প্রকল্প আধিকারিকের (সিডিপিও) দফতরে।
তাঁদের সঙ্গে কথা বলেই ওই নিয়োগ করতে হবে, এই দাবি করে সিডিপিও মহাদেব মণ্ডল এবং সেখানকার কর্মীদের হেনস্থা করে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি তৃণমূলের নইমুল হক এবং তাঁর সঙ্গীদের বিরুদ্ধে। ওই অফিসে এ দিন এলাকার বিভিন্ন অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে সহায়িকা পদে মনোনীতরা যোগদান করতে এসেছিলেন। তাঁদের কাগজপত্র ছিঁড়ে ফিরিয়ে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। তালাও ঝুলিয়ে দেওয়া হয় ওই অফিসে। বিকেল পর্যন্ত তালা খোলা হয়নি।
সিডিপিও মহাদেববাবু এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে, হেনস্থার অভিযোগ জানিয়েছেন মহকুমাশাসক (আরামবাগ) এবং জেলাশাসকের কাছে। মহকুমাশাসক লক্ষ্মীভব্য তান্নিরু বলেন, “তদন্ত হবে। তদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী আইনানুগ পদক্ষেপ করা হবে।’’ অভিযোগ উড়িয়ে নইমুলের দাবি, ‘‘এ রকম কোনও ঘটনাই ঘটেনি।” অবশ্য ওই দলেরই এক নেতা বলেন, ‘‘নিয়োগের ক্ষেত্রে সিডিপিও-রা ব্যাপক দুর্নীতি করছেন। যাঁদের চাকরি পাওয়ার কথা তাঁরা পাচ্ছেন না। রেশন ডিলারের পুত্রবধূ, ব্যবসায়ীর মেয়েরা চাকরি পাচ্ছেন। এরই প্রতিবাদ করা হয়েছে।”
এ দিন দুপুরে ব্লকের বিভিন্ন অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের সহায়িকা পদে মনোনীতরা সিডিপিও অফিসে যোগদান করতে এসেছিলেন। সেই প্রক্রিয়া চলাকালীনই গোলমাল হয়। অভিযোগ, নইমুল এবং কিশোরপুর-১ পঞ্চায়েতের প্রধান সন্দীপ বর সহ তৃণমূলের কয়েকজন সেই অফিসে চড়াও হন। সিডিপিও-কে পঞ্চায়েত সমিতি অফিসে নিয়ে গিয়ে দ্বিতীয় দফায় বিডিও দেবাশিস মণ্ডলের সামনেই হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ। দেবাশিসবাবু এ নিয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকার করেন। গোলমালের কথা মানেননি সন্দীপও।
তবে, স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বেরই একাংশের দাবি, এ দিনের ঝামেলায় জড়িয়ে যাওয়া নেতারা চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নামে যথেচ্ছ টাকা হাতিয়েছেন। তাঁদের সেই সব মহিলারা মনোনীত না হওয়াতেই হামলা। অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী কিংবা সহায়িকা পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে যে জেলা কমিটি আছে, তার সভাপতি দলেরই নেত্রী রত্না দে নাগ। তারপরেও নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতির অভিযোগ তুলে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করা হচ্ছে।
এ নিয়ে রত্নাদেবী বলেন, “কারা দুর্নীতির অভিযোগ করছেন, আমার জানা নেই। মৌখিক পরীক্ষার ১০ নম্বরের ক্ষেত্রে কৌশল করে কাউকে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার কোনও জায়গা নেই। লিখিত পরীক্ষায় বাকি ৯০ নম্বরের বিষয় নিয়ে আমাদের জানার কথাও নয়।”
খানাকুল-১ ব্লকে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিতে ফাঁকা পদ ছিল ৪৬টি। সে জন্য পরীক্ষা হয়েছিল ২০১৫ সাল নাগাদ। মহকুমাশাসকের অফিসে এ বছরের গোড়ায় মৌখিক পরীক্ষা হয়। মনোনীতদের তালিকা প্রকাশের পর তাঁদের নিয়োগ প্রক্রিয়া দফায় দফায় শুরু হয়েছে। এ দিন দশ জন মহিলা যোগ দিতে এসেছিলেন। কিন্তু তা না হওয়ায় তাঁরা হতাশ। তাঁদের পক্ষে সবিতা ধাড়া এবং প্রতিমা মালিকের ক্ষোভ, ‘‘আমাদের কী হবে কিছুই বুঝতে পারছি না। প্রশাসনের থেকেও কিছু জানতে পারছি না।’’