ট্রেলারের ধাক্কা স্কুটারে, জখম ২

শনিবার সকাল ৬টা নাগাদ কোনা এক্সপ্রেসওয়ের বেতড় মোড়ের ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, দুর্ঘটনার পরেই ট্রেলারটি পালিয়ে যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ জুন ২০১৮ ০১:৫৮
Share:

অকুস্থল: দুর্ঘটনার পরে সেই এলাকা। শনিবার। নিজস্ব চিত্র

দুই মেয়েকে স্কুটারে চাপিয়ে পড়াতে নিয়ে যাচ্ছিলেন মা। মাঝপথে ট্রেলারের ধাক্কায় গুরুতর আহত হলেন তিন জনেই। শনিবার সকাল ৬টা নাগাদ কোনা এক্সপ্রেসওয়ের বেতড় মোড়ের ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, দুর্ঘটনার পরেই ট্রেলারটি পালিয়ে যায়। তখন ওই মোড়ে এক জন মাত্র ট্র্যাফিক পুলিশ উপস্থিত ছিলেন। তিনিই আহতদের পুলিশের গাড়িতে তুলে দক্ষিণ হাওড়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে পাঠান। বড় মেয়ের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, তিন জনের মাথাতেই হেলমেট ছিল। তা না হলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারত।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে খবর, প্রতি দিনের মতোই দক্ষিণ বাকসাড়ার বাড়ি থেকে দুই মেয়েকে স্কুটারে চাপিয়ে বেলেপোলের কাছে পড়তে দিতে যাচ্ছিলেন পিয়ালী বেরা নামে ওই মহিলা। পিয়ালীদেবীর স্বামী তাপস বেরা স্কুল শিক্ষক। বড় মেয়ে সোমদত্তা দশম শ্রেণির ছাত্রী। ছোট মেয়ে সোমাদৃতা পড়ে সপ্তম শ্রেণিতে।

স্থানীয় সূত্রে খবর, গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই কোনা এক্সপ্রেসওয়ের সাঁতরাগাছিমুখী লেনে সকাল থেকে যানজট হচ্ছে। অনেক সময়ে যানজট ছড়িয়ে পড়ছে বিদ্যাসাগর সেতুর টোল বুথ পর্যন্ত। তা চলছে বেলা ১০-১১টা পর্যন্ত। এ দিন বাকসাড়ার দিক থেকে বেতড় মোড়ে আসার পরে দুই মেয়েকে নিয়ে ওই যানজটের ফাঁদে পড়েন পিয়ালীদ‌েবী। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঘটনার সময়ে এক জন মাত্র ট্র্যাফিক পুলিশ ছিলেন। অভিযোগ, তিনি একা ওই যানজট সামলাতে পারছিলেন না। সিগন্যাল ব্যবস্থাও কাজ করছিল না। পুলিশের ধারণা, ক্লাসে পৌঁছতে দেরি হয়ে যাবে দেখে ওই মহিলা স্কুটার নিয়ে প্রায় জোর করেই গলি থেকে বেরিয়ে কলকাতার দিকে মোড় ঘোরার চেষ্টা করেন। তখনই পিছন থেকে একটি ট্রেলার তাঁদের ধাক্কা মারলে মা ও দুই মেয়ে রাস্তায় ছিটকে পড়েন। স্কুটারের সামনের অংশ ভেঙে, তুবড়ে যায়।

Advertisement

ওই সময়ে কর্তব্যরত এক ট্র্যাফিক পুলিশকর্মী সাঁতরাগাছির দিক থেকে আসা কলকাতা পুলিশের একটি গাড়িতে আহতদের তুলে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। মা ও মেয়েদের প্রথমে দক্ষিণ হাওড়ার একটি বেসরকারি মাল্টি স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা সোমনাথ নন্দী বলেন, ‘‘প্রায় প্রতিদিনই ৬টা নাগাদ ওই মহিলাকে দেখি দুই মেয়েকে স্কুটারে চাপিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। আজ দেখলাম তিনি যানজটে আটকে পড়েছেন। রাস্তা পেরোতে পারছেন না। তার পরেই যে এমন হবে, ভাবিনি।’’ কিন্তু কোনা এক্সপ্রেসওয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলিতে ট্র্যাফিক সিগন্যাল সকাল ৬টা থেকেই কাজ করার কথা। পাশাপাশি, ট্র্যাফিক পুলিশের এক জন কর্মী-সহ সিভিক ভলান্টিয়ারেরও থাকার কথা। কিন্তু এ দিন তা ছিল না কেন, প্রশ্ন উঠছে।

হাওড়ার ডিসি (ট্র্যাফিক) জাফর আজমল কিদওয়াই বলেন, ‘‘এক জন কেন ছিলেন, তা খোঁজ নিয়ে দেখছি। তবে অনেক সময়ে যানজট খুব বেশি হলে সিগন্যাল বন্ধ করে ট্র্যাফিক পুলিশকর্মীরা ‘ম্যানুয়ালি’ ওই কাজ করেন। এ দিন তা-ই করা হচ্ছিল। কিন্তু কলকাতামুখী রাস্তা যখন খোলা ছিল, তখন ওই মহিলা স্কুটার নিয়ে ঢুকে পড়েন। তখনই দুর্ঘটনা ঘটে যায়। আমরা গাড়িটির খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement