অভিযান: পাখি ধরার এই জালই বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ডান দিকে, মঙ্গলবারের প্রতিবেদন।
ফাঁদ পেতে পাখি ধরা বন্ধ করতে আমতার কেঁদোর মাঠে নজরদারি শুরু করল বন দফতর এবং পুলিশ। এখানে হানা দিয়ে পাখি ধরার জন্য টাঙিয়ে রাখা কয়েকটি নাইলনের জাল উদ্ধার করেছে তারা।
হাওড়া জেলা বন দফতরের আধিকারিক বিদিশা বসাক বলেন, ‘‘মঙ্গলবার সকাল থেকেই পুলিশের সাহায্য নিয়ে ওখানে তল্লাশি শুরু হয়েছে। পাখি মারা রুখতে শীঘ্রই সাধারণ মানুষকে নিয়ে সচেতনতা শিবির করা হবে। এ ব্যাপারে স্থানীয় পঞ্চায়েতের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি।’’ আমতা-১ ব্লকের বিডিও লোকমান হোসেন বলেন, ‘‘বেআইনি ভাবে কেউ পাখি ধরলে তার বিরুদ্ধে আইন মোতাবেক কড়া পদক্ষেপ করা হবে।’’
কেঁদোর মাঠের বিস্তীর্ণ জমিতে চাষাবাদ হয়। এই এলাকায় প্রচুর পাখির বাস। শীতে পরিযায়ী পাখিও আসে। অভিযোগ, এক শ্রেণির অসাধু কারবারি শীতের মরসুমে মাঠে নাইলনের জাল টাঙিয়ে রাখে। এই মরণফাঁদে আটকা পড়ে ল্যাপউইগ, মাঠচড়াই, প্লোভারের মতো দেশি-বিদেশি পাখি। তাদের ধরে বিক্রি করা হয়। কিছু মানুষ শীতকালে এই সব পাখির মাংস দিয়ে চড়ুইভাতিও করেন। তাঁরাই পাখি কিনে নিয়ে যান। এক-একটি পাখির দর ১৫০-২০০ টাকা পর্যন্ত ওঠে। ফলে, ওই মাঠ কার্যত পাখিদের বধ্যভূমি হয়ে দাঁড়িয়েছে। অবাধে চলা এই বেআইনি কারবার নিয়ে মঙ্গলবার আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এর পরেই প্রশাসন নড়েচড়ে বসে।
মঙ্গলবার সকালে বন দফতরের আধিকারিকরা পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে এখানে হানা দিয়ে নাইলনের তিনটি বড় জাল বাজেয়াপ্ত করেন। তবে, পাখিধরাদের হদিশ মেলেনি। গ্রামবাসীদের একাংশের দাবি, বহিরাগতরা ওই কাজ করে। নিষেধ করলেও শোনে না। উল্টে হুমকি দেয়। মাঠে হানা দেওয়ার পাশাপাশি বন দফতরের তরফে পার্শ্ববর্তী সিংহপাড়া, মণ্ডলপাড়া, মাঝেরপাড়ায় গ্রামবাসীদের সচেতন করা হয়। কাউকে এই বেআইনি কাজ করতে দেখলে বন দফতরে জানানোর পরামর্শ দেওয়া হয়। এ জন্য বন দফতরের আধিকারিকদের ফোন নম্বরও দেওয়া হয় গ্রামবাসীদের। স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকে বলছেন, নিয়মিত নজরদারি চালানো হলে নিরীহ পাখিরা বাঁচবে।