সাফাইকর্মীদের কর্মবিরতির জেরে আবর্জনায় বুজেছে নালা। চুঁচুড়ায়। ছবি: তাপস ঘোষ
দাবি মিটল। তবুও শনিবার কাজে যোগ দিলেন না হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভার অস্থায়ী সাফাইকর্মীরা। ফলে, জেলা সদর শহরে আবর্জনার স্তূপ আরও একটু উঁচু হল। জঞ্জাল এবং নিকাশি নালা পরিষ্কার না-হওয়ায় আরও এক দিন অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে কাটাতে হল শহরবাসীকে।
পুরসভায় বেআইনি কর্মী নিয়োগের অভিযোগ ঘিরে পুরসভায় অচলাবস্থা চলছে বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে। অস্থায়ী কর্মীদের অভিযোগ, তাঁদের বঞ্চিত করে সম্প্রতি পুর প্রশাসকদের একাংশ নিজেদের ঘনিষ্ঠ লোকজন-সহ মোট ৫৪ জনকে বেআইনি ভাবে বেসরকারি একটি সংস্থা মারফত নিয়োগ করেছে পুরসভায়। সেই নিয়োগ বাতিলের দাবিতে গত মাসে টানা ছ’দিন কর্মবিরতি পালন করেন অস্থায়ী সাফাইকর্মীরা। বিতর্কের মুখে পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল ঘোষণা করলে কাজে যোগ দেন আন্দোলনকারীরা। ভোগান্তির অন্ত হয় শহরবাসীর।
কিন্তু সরকার নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল সংক্রান্ত লিখিত নির্দেশ জারি না-করায় গত বুধবার ফের কাজ বন্ধ করে দেন সাফাইকর্মীরা। ফলে, ফের শহরবাসীকে ভোগান্তিতে পড়তে হয়। আবর্জনায় ভরে যেতে থাকে শহর। জেলা প্রশাসনের তরফে তাঁদের আশ্বস্ত করে বলা হয়, দ্রুত ওই লিখিত নির্দেশ প্রকাশ করা হবে। সাফাইকর্মীরা স্পষ্ট জানিয়ে দেন, লিখিত নির্দেশ জারি না-হওয়া পর্যন্ত তাঁরা কাজে যোগ দেবেন না। প্রশাসনের তরফে তাঁদের আশ্বস্ত করে বলা হয়েছিল, লিখিত নির্দেশিকা দ্রুত চলে আসবে। তবু কাজে যোগ দেননি সাফাইকর্মীরা।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবারই জেলা প্রশাসন ও পুরসভা কর্তৃপক্ষের কাছে সেই লিখিত নির্দেশ পৌঁছে যায়। সে কথা জানিয়েও দেওয়া হয় সাফাইকর্মীদের। তবুও তাঁরা এ দিন কাজে যোগ না-দেওয়ায় ক্ষুব্ধ শহরবাসীর একাংশ।
অস্থায়ী কর্মীদের তরফে তাঁদের মুখপাত্র বলেন, ‘‘সোমবার সকালে পুরসভার গেটে জমায়েত করা হবে। সেখানে সরকারি নির্দেশিকার বিষয়টি আনুষ্ঠানিক ভাবে জানানো হবে। তারপর কাজে যোগ দেবেন অস্থায়ীকর্মীরা। ’’
সাফাইকর্মীদের এই সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ শহরবাসীর একাংশ। চুঁচুড়া আখন বাজার এলাকার এক প্রবীণ শিক্ষক বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার বারবার এলাকা পরিস্কার রাখার কথা বলছে। অথচ, শাসকদল পরিচালিত একটি পুরসভার সাফাই ও অস্থায়ী কর্মীরাই কাজ বন্ধ করে রেখেছেন। তাঁদের দাবি মিটে গিয়েছে। তবু তাঁরা কাজ করবেন না। এটা মেনে নেওয়া যায় না। মানুষ তো অসুস্থ হয়ে পড়বে আবর্জনার জঙ্গলে।’’ পুরসভার বিদায়ী উপ-পুরপ্রধান অমিত রায় বলেন, ‘‘আজ, রবিবার ছুটির দিন। তাই অস্থায়ী কর্মীরা আগামিকাল, সোমবার থেকে কাজ করবেন। তবে পুরসভার সাফাই বিভাগের স্থায়ী কর্মীরা কাজ করছেন।’’ অবৈধ নিয়োগ নিয়ে তাঁর বক্তব্য, ‘‘পুরসভায় নিয়োগ প্রক্রিয়া সরকারি ভাবে বাতিল হওয়ায় প্রমাণ হল বিধি ভেঙে বা অনিয়ম করে কেউ পার পাবেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনে।’’