—ফাইল চিত্র।
হাওড়া জেলায় পর্যটন শিল্পের বিকাশে বিশেষ জোর দিচ্ছে রাজ্য পর্যটন দফতর। সে জন্য সম্প্রতি নিয়োগ হয়েছেন জেলা পর্যটন আধিকারিক। তিনিই বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে পঞ্চায়েত সমিতিগুলির সঙ্গে কথা বলে পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলার ব্যাপারে প্রাথমিক সমীক্ষা করবেন। ইতিমধ্যে জয়পুর দিয়ে সেই কাজ তিনি শুরুও করে দিয়েছেন।
কলকাতার খুব কাছের জেলা হওয়া সত্ত্বেও হাওড়ায় পর্যটনকেন্দ্র নেই বললেই চলে। যা আছে তা হল গাদিয়াড়া, গড়চুমুক এবং বাগনানের সামতাবেড়ে শরৎচন্দ্রের বাড়ি। এই অবস্থায় জেলায় আরও নতুন পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তুলতে আগ্রহী রাজ্য পর্যটন দফতর। এতে যেমন পর্যটকদের কাছে জেলার আকর্ষণ বাড়বে, অন্যদিকে বহু যুবক এই শিল্পের মাধ্যমে কর্মসংস্থান করতে পারবেন বলে মনে করছেন জেলা প্রশাসনের কর্তারা।
কিন্তু কী ভাবে গড়ে উঠবে নতুন নতুন পর্যটনকেন্দ্র?
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, কোথায় পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলা যেতে পারে তার প্রাথমিক প্রস্তাব দিতে হবে পঞ্চায়েত সমিতিগুলিকেই। সেই প্রস্তাবগুলি নিয়ে জেলা পর্যটন আধিকারিক পঞ্চায়েত সমিতিগুলির সঙ্গে আলোচনা করবেন। সেই সব প্রস্তাবের কোনও বাস্তবতা আছে কিনা তা জেলা পর্যটন আধিকারিক সংশ্লিষ্ট জায়গায় গিয়ে খতিয়ে দেখবেন। তারপরেই সরকারি গাইডলাইন মেনে কী ভাবে প্রস্তাবগুলি চূড়ান্ত করা যায় সে বিষয়ে তিনি পঞ্চায়েত সমিতিগুলিকে পরামর্শ দেবেন। চূড়ান্ত প্রস্তাবগুলি যাবে রাজ্য পর্যটন দফতরে।
জেলাশাসক মুক্তা আর্য বলেন, ‘‘জেলা জুড়ে আমরা নতুন নতুন পর্যটনকেন্দ্রের সন্ধানে আছি। পঞ্চায়েত সমিতি ছাড়া অন্য সূত্র থেকেও যদি কোনও সন্ধান মেলে আমরা জেলা পর্যটন আধিকারিককে দিয়ে সেই জায়গা সরেজমিন পরিদর্শন করে দেখব। দেখব সেখানে সত্যিই পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলার কোনও সম্ভাবনা আছে কিনা!’’
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই আমতা-২ পঞ্চায়েত সমিতির পক্ষ থেকে জয়পুরে রূপনারায়ণ, মুণ্ডেশ্বরী লাগোয়া কিছু জায়গায় ইকো-ট্যুরিজ়ম করার জন্য প্রাথমিক প্রস্তাব জমা দেওয়া হয়েছিল জেলা প্রশাসনের কাছে। শুধু তা-ই নয়, রূপনারায়ণ ও দামোদরের সংযোগকারী খাল ‘শর্টকাট চ্যানেল’কে কেন্দ্র করেও ইকো-ট্যুরিজ়ম গড়ার প্রাথমিক প্রস্তাব পাঠানো হয় জেলা প্রশাসনে। তাতে নদীর ধারে সৌন্দর্যায়ন, ইকো-পার্ক গড়া, কটেজ তৈরি প্রভৃতি পরিবেশবান্ধব পরিকল্পনার কথা ছিল।
সেই প্রাথমিক প্রস্তাবের ভিত্তিতে গত সোমবার জেলা পর্যটন আধিকারিক দুর্গা দাস জয়পুরে আসেন। বিভিন্ন জায়গা খুঁটিয়ে দেখেন। তিনি বলেন, ‘‘এখানে পর্যটনকেন্দ্র গড়ে ওঠার সম্ভাবনা আছে। আমরা পঞ্চায়েত সমিতিকে বলেছি, সরকারি গাইডলাইন মেনে প্রস্তাব পাঠানোর জন্য।’’ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সুকান্ত পাল বলেন, ‘‘শীঘ্রই সরকারি গাইড লাইন মেনে আমরা প্রস্তাব পাঠিয়ে দেব। গ্রামীণ এই এলাকাটি মূলত কৃষিপ্রধান। পরিবেশ বান্ধব পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলার উপযুক্ত বাতাবরণ আছে এখানে। সেই দিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা জেলা প্রশাসনের কাছে প্রাথমিক প্রস্তাব পাঠিয়েছিলাম।’’